নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিল্পীর তুলিতে অভিনব প্রতিবাদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৮:৩০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৮:৩০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
শিল্পীর তুলিতে অভিনব প্রতিবাদ

করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রানীতিতে ধাক্কাটা আগেই এসেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তা আরও তীব্র হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দফায় দফায় সুদহার বাড়ানোর প্রভাব হিমশীতল হয়ে স্পর্শ করেছে বিশ্বের সব মুদ্রাকে। অনেক দেশের মতো আর্জেন্টিনাও যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রানীতির ভুক্তভোগী একটা দেশ।

গত বছরের শেষের দিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির মুদ্রা পেসোর মান ডলারের বিপরীতে শতভাগ কমেছে, যা দেশটির ইতিহাসে ইতঃপূর্বে আর কখনও ঘটেনি। ফলে দেশটির এক হাজার পেসো ব্যাংক নোটের মূল্য নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৬০ ডলারে। এটা সরকার স্বীকৃত মূল্য। স্পট মার্কেট বা খোলা বাজারে তা মাত্র ৩ ডলার।

এ অবস্থা দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান শোচনীয় করে তুলেছে। এ রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির প্রতিবাদ জানাতে এক অভিনব কৌশল গ্রহণ করেছেন দেশটির সার্জিও গুইলারমো ডিয়াজ নামের এক চিত্রশিল্পী। ছবি আঁকার জন্য তরুণ এ শিল্পী ডলার দিয়ে ক্যানভাসের পরিবর্তে পেসোর নানার মূল্যের ব্যাংক নোট কেনা শুরু করেন। তাতে ব্যঙ্গাত্মক বিভিন্ন কিছু আঁকতে থাকেন তিনি।

ডিয়াজের এই প্রতিবাদ খুব দ্রুত ভাইরাল হয়। সম্প্রতি তিনি রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে ডিয়াজ বলেন, ‘আমাদের মুদ্রার মান বর্তমানে এতটাই কমেছে যে, এখন ব্যাংক নোটে আঁকাআঁকি করাটাই আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। কারণ, এক হাজার পেসোর একটি নোটে কিছু আঁকার পর তা বিক্রি করে আমার যে আয় হয়, তা ৫ দশমিক ৬০ ডলারের চেয়ে অনেক বেশি।

ডিয়াজের কাজে নিজ দেশের ভঙ্গুর মুদ্রানীতির পাশাপাশি মার্কিন ডলারের একাধিপত্যেরও প্রতিবাদ আছে। এমনকি, তার ফ্রেমে পেসোর পাশাপাশি ডলারও থাকে।

ডিয়াজ পেসোয় আর্জেন্টিনার গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি অন্য অঙ্গনের মানুষদের মুখচ্ছবিও আঁকেন। এমন ব্যক্তিদের মধ্যে লিওনেল মেসি অন্যতম। দেশটির মূল্যস্ফীতির জন্য ফুটবলকে ৪০ শতাংশ দায়ী বলে ধরা হয়।

আর্জেন্টিনার বর্তমান বেকারত্ব ৪০ বছরের শীর্ষে। করোনায় বিশ্বের যেসব দেশ বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর্জেন্টিনা তাদের অন্যতম। গত এক বছরে রাজধানী বুয়েনস আয়ার্স থেকে শুরু করে দেশটির প্রধান শহরগুলোয় অনেক বিক্ষোভ হয়েছে। ধর্মঘটে নেমেছে নানান পেশাজীবী সংগঠন।

নিজের শিল্পকর্ম সম্পর্কে ডিয়াজ বলেন, ‘আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি কতটা প্রকট, আমার কাজের মধ্য দিয়ে আমি তা দেখাতে চেয়েছি। মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এটা আমাদের সামগ্রিক জীবনকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। আমাদের ক্রয়ক্ষমতা ব্যাপক কমেছে। এই সংকটে আমরা কীভাবে জীবন-ধারণ করছি, আমার শিল্পকর্ম তার একটা ইঙ্গিত দেয় বলে আমার বিশ্বাস।’ সূত্র : রয়টার্স।

শেয়ার করুন