নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১,৫৬০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে আইএমএফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:২৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:২৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে আইএমএফ

ভার্চুয়াল বৈঠকে আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ছবি : ফাইল/রয়টার্স

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে বড় ধরনের অর্থসহায়তার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি সম্প্রতি ১ হাজার ৫৬০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে ইউক্রেনকে। ১৩ মাস ধরে রাশিয়ার অভিযানে বিধ্বস্ত দেশটি অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে এ অর্থ ব্যয় করবে। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, নির্বাহী বোর্ড ইউক্রেনকে চার বছরের জন্য এ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করেছে। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহযোগিতার লক্ষ্যে আইএমএফ ঘোষিত ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ঋণ প্যাকেজের অংশ। খবর রয়টার্স।

আইএমএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ অনুমোদনের ফলে ইউক্রেন শিগগিরই প্রায় ২৭০ কোটি ডলার অর্থসহায়তা পেতে যাচ্ছে। ঋণটি এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) অন্তর্ভুক্ত। এটি বড় ধরনের যুদ্ধে আক্রান্ত কোনো দেশের জন্য আইএমএফের অনুমোদিত প্রথম গুরুত্বপূর্ণ অর্থায়ন কর্মসূচি। তবে এই ঋণ নেয়ায় আর্থিক ও জ্বালানি খাতে বড় ধরনের সংস্কারের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে ইউক্রেন। এর আগে ২০২২ সালের মার্চে ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুত ৫০০ কোটি ডলারের দীর্ঘমেয়াদি একটি ঋণ প্রকল্প বাতিল করেছিল আইএমএফ। তবে কয়েকটি শর্তে ১৪০ কোটি ডলার জরুরি অর্থায়ন করেছিল বিশ্ব সংস্থাটি। এছাড়া গত অক্টোবরে ‘ফুড শক উইন্ডো’ তথা খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির আওতায় আরো ১৩০ কোটি ডলার সহায়তা করেছে।

এ প্রসঙ্গে আইএমএফের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‌সংস্থাটির নতুন ঘোষিত ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের প্যাকেজে আইএমএফের ঋণ, বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য দেশের অনুদান থেকে ৮ হাজার কোটি ডলার দেয়া হবে। এছাড়া ২ হাজার কোটি ডলার ঋণসহায়তা তহবিল থেকে দেয়া হবে।’ এ ঋণ প্রকল্পের জন্য দুই বছরের মধ্যে ইউক্রেনকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো, মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা বজায় রাখা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টা জোরদার করা।

আইএমএফ জানিয়েছে, এ কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং যুদ্ধোত্তর অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজন হবে। যুদ্ধের আগে দেশটির আর্থিক ও মুদ্রানীতি যে রকম ছিল, সেগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি বাজারের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং জ্বালানি খাতের সংকট মোকাবেলায় নিতে হবে শক্ত পদক্ষেপ। মার্কিন ট্রেজারির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘‌প্রোগ্রামটি অত্যন্ত কঠিন। শুধু আগামী বছরেই ১৯টি কাঠামোগত মাইলফলক অর্জনের জন্য ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এতে।’

আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ বলেন, ‘এ কর্মসূচির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। এর সাফল্য নির্ভর করছে বিদেশী অর্থায়নের পরিমাণ, যথাযথ সমন্বয় ও সময়ের ওপর। নিজস্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বিদেশী ঋণ বহনের সক্ষমতায় ফিরতে হবে দেশটিকে।’ ইউক্রেনে রাশিয়ার ধ্বংসাত্মক আক্রমণ অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারায় ইউক্রেনের প্রশংসা করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি সব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদাতাদের ইউক্রেনকে সহযোগিতা করার এ উদ্যোগে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা রাশিয়ার অঘোষিত যুদ্ধ থেকে নিজেকে রক্ষা করছে দেশটি। যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন ইউক্রেন ও তার জনগণের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আইএমএফের নতুন অর্থায়নকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য। আমরা একসঙ্গে ইউক্রেনের অর্থনীতিকে সমর্থন করি। আর আমরা বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি !’

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন