যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ উপদেষ্টা ডেরেক শোলে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ উপদেষ্টা ডেরেক শোলে আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দুই দিনের সফরে বাংলাদেশ যাচ্ছেন। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে তিনি যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তার এই সফরে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ সম্পর্কের সব ইস্যু গুরুত্ব পাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মূলত ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে যে টানাপড়েন চলছে তাতে গতি সঞ্চার করতে চায় দুই পক্ষই। যে কারণে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর দুই পক্ষই নিজেদের মধ্যে ঘন ঘন বৈঠক করছে। আগামী এপ্রিলে ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং অংশীদারত্ব সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন, অন্যদিকে অংশীদারত্ব সংলাপ পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের সঙ্গে অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এপ্রিলে হাই প্রোফাইল বৈঠকের আগে ডেরেক শোলে এই সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকার অবস্থান বোঝার চেষ্টা করবেন।
বাংলাদেশ সফরের আগে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন টকশোতে অংশ নিয়ে বিশেষ উপদেষ্টা ডেরেক শোলে বলেন, আগের মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দুজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্ব দেয় এসব সফর সেটাই প্রমাণ করে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা খাতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আমার সফরে মূলত এসব বিষয় এবং আমার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করে যেসব ইস্যুতে আলোচনা করে গেছেন সেসব ইস্যুতে আমি ফলোআপ করব। এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধান নিয়ে গুরুত্ব দেব।
তিনি আরও বলেন, আশা করছি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশগুলো শান্তিপূর্ণ ছিল, যা ইতিবাচক। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশ করার স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা ইতিবাচক। এ ছাড়া দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ডেরেক শোলে বাংলাদেশ সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার এবং দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করেন। রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচারের সফরে রোহিঙ্গা সংকট গুরুত্ব পেয়েছে।
অন্যদিকে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন যেকোনো ছাড় দেবে না তা হাসিমুখেই পুনর্ব্যক্ত করেন। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল