নিউইয়র্ক     বুধবার, ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংক সংকট হাসির উপলক্ষ পুতিনের?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩ | ০৮:০০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ | ০৮:০০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ব্যাংক সংকট হাসির উপলক্ষ পুতিনের?

ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি : রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাম্প্রতিক ব্যাংক সংকট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিজের বার্তা জোরদার করার উপলক্ষ এনে দিয়েছে। কারণ এই সংকটে রাশিয়ার ব্যাংকগুলো প্রায় নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থায় ফাটল ধরে। দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ধসে পড়া এবং সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংক খেলাপি হওয়া ঠেকাতে দেশটির সুইস ন্যাশনাল ব্যাংককে এগিয়ে আসতে হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের বিপর্যয় অর্থনৈতিক ধস ডেকে আনতে পারে। এর প্রভাব পড়বে রুশ তেলের ওপর কারণ পশ্চিমা দেশের মানুষেরা আতঙ্কিত। পুতিন এটিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা মাইকেল কিমেজ বলেন, পুতিন চান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বিশৃঙ্খলার ঘটনা সামনে আনতে। হোক না ৬ জানুয়ারির মতো বিক্ষোভ, রাজনৈতিক মেরুকরণ বা অর্থনৈতিক সংকট। তিনি শুধু দেখতে চান পশ্চিমাদের অবনতি এবং দীর্ঘমেয়াদে যে তারা ইউক্রেনকে সমর্থন করতে সক্ষম হবে না। কিমেজ বলেন, এগুলোকে সত্য হতে হবে এমনটি না। কিন্তু এই ভাষ্য তিনি তুলে ধরতে চান। ব্যাংকের মতো এমন ঘটনা রুশ জনগণের জন্য অবশ্যই কাজে লাগবে।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে পশ্চিমাদের ক্ষয়িষ্ণু শক্তি হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছেন পুতিন। একই সময়ে তিনি চীন ও ইরানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছেন। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনায় রুশ নাগরিকদের আতঙ্ক দূর করার কাজে পুতিন এই নতুন সম্পর্ককে ব্যবহার করেছেন।

পিটারসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনোমিকস-এর ননরেসিডেন্ট ফেলো গ্যারি হাফবাউয়ের বলেন, ক্রেডিট সুইস ব্যাংক যদি ব্যর্থ হয় এবং এরপর ইউরোপজুড়ে আর্থিক সংকট দেখা দেয়, রুশ ব্যাংক বা আর্থিক ব্যবস্থায় এর প্রভাব পড়বে খুব সামান্য। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার কারণে রুশ ব্যাংকগুলো এখন অনেকটাই পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কহীন।

কিমেজ উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেনে বেসামরিকদের দুর্ভোগের বিপর্যয়কর প্রভাব রয়েছে রাশিয়ার ওপর। ফলে আন্তর্জাতিক মনোযোগ যদি বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে থাকে তাহলে যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র থেকে নজর সরে যাবে।

তার মতে, বিষয়টি এমন নয় যে, এই আর্থিক সংকটের কারণে পুতিনের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু মনোযোগ সরে যাবে অন্যত্র। যে মনোযোগ রাশিয়ার সামরিক দক্ষতার ওপর নেই, যে মনোযোগ রাশিয়ার বেসামরিকদের দুর্ভোগে নেই, তা অবশ্যই রাশিয়া ও পুতিনের পক্ষে কাজে লাগবে।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সের সহযোগী অধ্যাপক আলেসান্দ্রো রেবুচি বলেন, আর্থিক বিশৃঙ্খলা ইউরোপকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করবে এবং যুদ্ধের ব্যয় বহন অব্যাহত রাখা তাদের জন্য কষ্টকর হতে পারে। অবশ্য এমন চাপেও পশ্চিমা শক্তিগুলো ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত রাখবে না বলে মনে করেন কিমেজ ও রেবুচি। সূত্র: নিউজউইক

শেয়ার করুন