নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোয়িং ৭৪৭ : ‘আকাশের রানীর’ বিদায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বোয়িং ৭৪৭ : ‘আকাশের রানীর’ বিদায়

বোয়িং ৭৪৭ মডেলের বিমানকে বলা হয় ‘কুইন অব দ্যা স্কাইস’ বা আকাশের রানী। আজ থেকে ৫০ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল এই মডেলটি। এরপর দ্রুতই ইতিহাসের সবথেকে জনপ্রিয় বিমান হয়ে ওঠে বোয়িং ৭৪৭। তবে অর্ধশত বছর রাজত্বের পর বিদায় জানাতে হলো আকাশের এই রানীকে। এই মডেলের শেষ বিমান আমেরিকার কার্গো এয়ারলাইন অ্যাটলাস এয়ারের হাতে তুলে দিয়েছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ।

সিএনএনের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালের শেষের দিকে হিসেব অনুযায়ী বিশ্বে এই আইকনিক বিমানের ৪৪টি যাত্রীবাহী সংস্করণ সক্রিয় আছে। যদিও মালবাহী বোয়িং ৭৪৭ চলছে তিনশ’রও বেশি। তবে যেহেতু এই মডেলের বিমান আর উৎপাদন করা হবে না, তাই ভবিষ্যতে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে সবথেকে জনপ্রিয় বিমানটি।

বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্ট্যান ডিল বলেন, বোয়িং-এর এই মডেলটি বিশ্বকে ছোট করে ফেলেছিল। একইসঙ্গে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও মালামাল পরিবহণে বিপ্লব ঘটিয়েছিল। ১৯৬৯ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিল বোয়িং ৭৪৭। প্যান আমেরিকান ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজে যুক্ত হয়েছিল এই মডেলের প্রথম বিমানটি।

এরপর দ্রুতই এটি যাত্রীদের প্রিয় হয়ে ওঠে। এতে চড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টরা। হলিউডের অসংখ্য সিনেমায় দেখা গেছে এই বিমানের ব্যবহার। ১৯৭০ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে আকাশে ওড়ে এই বিমান। এই বিমানে আছে ককটেল লাউঞ্জ, যা লম্বায় ৭০ মিটার ও ৬০ মিটার প্রশস্ত। এর আছে চারটি ইঞ্জিন এবং দুটি করিডর। একসঙ্গে প্রায় ৫০০ জন যাত্রীকে নিয়ে উড়তে পারে এই বিমান। ফলে এই বিমান আকাশভ্রমণকে সাধারণের হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে। মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও বাণিজ্যিক কারণেই এই বিমানের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

এয়ারলাইনসগুলো এখন কম জ্বালানি দরকার পড়ে এমন অত্যাধুনিক বিমান চাইছে। সে জন্য বোয়িং ও এয়ারবাস আরও জ্বালানিসাশ্রয়ী বিমান উৎপাদন করছে। গত কয়েক বছরে বোয়িং ৭৪৭ বিমান ব্যবহার বন্ধ করেছে ইউনাইটেড ও ডেলটা এয়ারলাইনস। বৃটিশ এয়ারওয়েজ ও কান্তাসের মতো বিমান সংস্থাগুলোও এই বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ করেছে।

গত অর্ধ শতাব্দীতে এখন পর্যন্ত ১৫৭০টি বোয়িং ৭৪৭ উৎপাদন করা হয়েছে। এরমধ্যে যাত্রীবাহী মডেলের সর্বশেষ উৎপাদন ছিল ২০১৭ সালে। ২০১৮ সালে ওই বিমানটি কোরিয়ান এয়ার লাইনসে যুক্ত হয়। অথচ ৭০ এর দশকে এই বিমানের চাহিদা বাড়ছিল ঝড়ের গতিতে। বিশ্ব ভ্রমণের ধারণাকেই বদলে দিয়েছিল বোয়িং ৭৪৭। পর্যটন থেকে শুরু করে যে কোনো ধরণের সফরকে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে এসেছিল এই বিমান। এক ধাক্কায় বিমান খরচ অর্ধেক হয়ে যায় এর কারণে।

শেয়ার করুন