নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফ্রান্সে আরও সহিংসতা, গ্রেপ্তার দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৩ | ০৩:০৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৩ | ০৩:০৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ফ্রান্সে আরও সহিংসতা, গ্রেপ্তার দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী

পুলিশের গুলিতে এক কিশোরের মৃত্যু ঘিরে টানা চার দিন ধরে ফ্রান্সের শহরগুলোয় তুমুল সহিংস বিক্ষোভ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ১লা জুলাই শনিবার পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দাঙ্গা দমনে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিবিসি জানায়, প্যারিসের উপকণ্ঠে গত মঙ্গলবার আলজেরীয় ও মরোক্কান বংশোদ্ভূত ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার মৃত্যু দরিদ্র এবং মিশ্র বর্ণের শহুরে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর প্রতি পুলিশের আচরণ ও বর্ণবাদ নিয়ে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। চার দিনের দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অসংখ্য দোকানপাটে লুটপাট চালানো হয়েছে। রাজধানী প্যারিসের বিক্ষোভ মার্সেই, লিঁও, তুলুজ, লিলসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে ৮৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এক রাতে এক হাজার ৩১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা থামাতে গিয়ে আড়াই শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে আটকদের মধ্যে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মার্সেইয়ের ৮০ জনও আছেন। দক্ষিণের এই শহরটিতে উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের বড় একটি অংশের বাস।

বিবিসি জানায়, প্যারিসের শহরতলি নানতেরে শনিবার একটি মসজিদে নাহেলের জানাজা হয়। হাজারও মুসলিম জানাজায় যোগ দেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এত বেশি মানুষ জানাজায় এসেছিলেন যে মসজিদে জায়গা সংকুলান হচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে যোগদানকারী জনমানুষের স্রোত ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ সড়কে ব্যারিকেড দেয়। দেশজুড়ে অস্থির পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জার্মানিতে তার এক নির্ধারিত সফর স্থগিত করেছেন। ২৩ বছরের মধ্যে এটি ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম জার্মানি সফর হওয়ার কথা ছিল।

পুলিশের ওপর গুলি

বন্দরনগরী মার্সেইয়ে সহিংসতার সময় একটি বন্দুকের দোকানে লুটপাট হয়েছে। ফরাসি দৈনিক ল্য প্যারিসিয়েন জানায়, ৩০ জনের মতো তরুণ-যুবক দোকান ভেঙে ঢুকে পাঁচ থেকে আটটি শিকার করার রাইফেল নিয়ে যায়। রোন অঞ্চলে শুক্রবার রাতে তিনজন পুলিশ সদস্য গুলিতে আহত হয়েছেন। একটি দেয়ালের পেছনে ঘাপটি মেরে থাকা এক ব্যক্তি অতর্কিত ওই পুলিশ সদস্যদের ওপর গুলি চালায়।

সম্প্রচার সংস্থা বিএফএমটিভি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করেছে, যিনি বলেছেন- ‘একটি রেডলাইন ভেঙে গেছে। এমন ঘটনা এখানে আগে কখনো ঘটেনি। খুবই উদ্বেগের বিষয়।’ লিও শহরে শুক্রবার রাতের দাঙ্গায় পুলিশের ৩৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিওতে একটি পুলিশ স্টেশনসহ আটটি সরকারি ভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

বন্দর শহর মার্সেইতে সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে এই আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সব বড় অনুষ্ঠানও বাতিল করেছে। লিল শহরের রুবাইক্স শহরতলির বিভিন্ন অফিস ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড, লুটপাট হয়েছে। বিবিসি জানায়, বিক্ষুব্ধ লোকজন বিশাল একটি অফিস ভবনে, যেখানে কমপক্ষে ৫০০ লোক কাজ করতেন- ঢুকে আগুন দেয়। আগুনে ভবনটির একাংশ পুরোপুরি পুড়ে কালো হয়ে গেছে। পরদিন সকালেও সেখান থেকে পোড়া গন্ধ বেরোচ্ছিল।

সাথী/পরিচয়

শেয়ার করুন