নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে আসা প্রেমিকাকে কেটে অঙ্গ পাচার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২ | ০১:১৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ | ০১:১৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
প্রেমের টানে আসা প্রেমিকাকে কেটে অঙ্গ পাচার

অনলাইনে পরিচয়ের পর প্রেমের টানে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পেরুতে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মেক্সিকোর ৫১ বছর বয়সী এক নারী। প্রেমিকের সঙ্গে তার সাক্ষাতের পরিণতি নির্মম হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়, যখন তার কেটে ফেলা মরদেহ একটি সমুদ্রসৈকতে ভেসে ওঠে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ১০ নভেম্বর পেরুর হুয়াচো উপকূলে মরদেহটি ভেসে ওঠে। নিহত নারীর নাম ব্লাঙ্কা অলিভিয়া আরেলানো গুতেরেস। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনলাইনে পরিচয়ের পর কয়েক মাস ধরে এক তরুণের সঙ্গে প্রেম করছিলেন তিনি। ৩৭ বছর বয়সী ওই তরুণ পেরুর হুয়াচো উপকূলে থাকতেন। পরে এ বছরের জুলাইয়ে ওই নারী পরিবারকে জানান পেরুর রাজধানী লিমায় যাবেন তিনি।

গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা আরেলানোর প্রেমের ব্যাপারে এতটুকুই জানতেন। সেদিন তিনি তার ভাতিজিকে জানান, পেরুর জুয়ান পাবলো জেসুস ভিলাফুয়ের্তের সঙ্গে প্রেম করছেন তিনি। এরপরেই গত দুই সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ হয়ে যান আরেলানো। তাকে খুঁজে পেতে টুইটারে সহযোগিতা চান তার পরিবার। পরে বিষয়টি পুলিশে জানালে লিমার স্থানীয় পুলিশ আরেলানোর খোঁজে তদন্ত শুরু করে।

এদিকে গত ১০ নভেম্বর হুয়াচো উপকূলের জেলেরা সেখানে একটি বিচ্ছিন্ন আঙুলের খোঁজ পান। এই আঙুলে একটি রূপার আংটি ছিল; যা আরেলানোর পরিবারের জন্য সবচেয়ে খারাপ খবরটি নিশ্চিত করে যে, হত্যার শিকার হয়েছেন তিনি।

এরপর হুয়াচোর একই সমুদ্র সৈকতে একটি মুখবিহীন মাথা, এক হাত এবং একটি ধড় পাওয়া যায়। যার ভেতরে শরীরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল না। সবকিছু বের করে নেওয়া হয়েছিল। গত ১৭ নভেম্বর ভিলাফুয়ের্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে লিমার পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে মনে করা হয় ভিলাফুয়ের্তেকে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লাতিন নোটিসিয়াসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পেরুর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুয়ান পাবলো ভিলাফুয়ের্তকে মানব অঙ্গ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

৩৭ বছর বয়সী এই মেডিক্যাল ছাত্রকে গ্রেপ্তারের কয়েকদিন পর ভয়াবহ সব তথ্য সামনে আসতে শুরু করে। আরেলানো নিখোঁজের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে এই মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে মানুষের অগ্ন্যাশয় ও মগজসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবচ্ছেদের ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়। সন্দেহভাজন এই ঘাতকের বাড়িতে তদন্ত চালানোর সময় কর্মকর্তারা তার অ্যাপার্টমেন্টের বাথরুম, লন্ড্রি রুম ও তোষকে রক্তের দাগ দেখতে পান।

গত বুধবার এক টুইট বার্তায় আরেলানোর ভাতিজি কারলা বলেন, আমরা যে ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি, তা প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। আমার ফুফু ছিলেন একজন দানশীল, উষ্ণ হৃদয়ের, আলোকিত, বুদ্ধিমান, নিবেদিতপ্রাণ মানুষ। আমরা তাকে এভাবেই স্মরণ করব।

শেয়ার করুন