সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্মেলনে তেল ও গ্যাস বাণিজ্যে ডলারের বদলে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে লেনদেন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যদি ইউয়ানে এই লেনদেন হয় তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে চীনা মুদ্রা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিশ্ব বাণিজ্যে ডলারের প্রভাব দুর্বল হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রিয়াদে সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আয়োজিত আরব সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এই আহ্বান জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এই সফরে শীর্ষ তেল রফতানিকারক সৌদি আরব ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন নিজেদের সম্পর্ক গভীর ও দৃঢ় করার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। মানবাধিকার, জ্বালানিনীতি ও রাশিয়া ইস্যুতে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে তখন দুই দেশ একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপ না করার’ প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে।
আরো পড়ুন।চীন-সৌদির ৩ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি, উদ্বেগে যুক্তরাষ্ট্র
তেল বাণিজ্যে সৌদি আরব যদি ডলার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তা ভূমিকম্পের মতো একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন হুমকি দিয়েছিল সৌদি আরব।
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। এমন সময়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সৌদি আরব সফরে দেশটির সঙ্গে অঞ্চলটির বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। শুক্রবার উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতারা শি জিনপিংকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আরব লিগ দেশ ছাড়িয়ে উপসাগরী, লেভান্ত ও আফ্রিকার দেশগুলো সম্মেলনে যোগদান করেছে।
শুক্রবার আলোচনার শুরুতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান চীনের সঙ্গে সম্পর্কে ঐতিহাসিক নতুন পর্যায়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। যা পাঁচ মাস আগে সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের বিপরীত। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছোট আকারের একটি আরব সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন।
চীনা প্রেসিডেন্টকে রাজকীয় অভ্যর্থনা দেওয়ার আলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদি বলেছেন, সৌদি আরব সব অংশীদারদের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখবে। আমরা মেরুকরণ বা পক্ষ বেছে নেওয়া পছন্দ করি না।
শি জিনপিংয়ের সফলে সৌদি আরব ও চীন বেশ কয়েকটি কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্কের ভিত্তি হলো মূলত জ্বালানি স্বার্থ। অবশ্য চীনা প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবে প্রযুক্তি ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করছে।