নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় কফি- চা : নতুন গবেষণা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৩ | ০৬:০০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ | ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় কফি- চা : নতুন গবেষণা

আপনার যদি টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে বেশি করে কফি- চা বা পানি খেলে আপনার অকালমৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৫% কমে যেতে পারে, একটি নতুন গবেষণায় এই তথ্য সামনে এসেছে। , গবেষণায় বলা হয়েছে বেশি চিনিযুক্ত পানীয় পান করলে হৃদরোগের ঝুঁকি ২৫ % এবং হার্ট অ্যাটাক বা অন্য কার্ডিওভাসকুলার রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ২৯ % বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল কার্ডিওভাসকুলার রোগ।কিছু পানীয় বেশ উপকারী বলে জানাচ্ছেন গবেষণার লেখক তথা বোস্টনের চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক কিউই সান। তিনি বলেন, “আমাদের গবেষণার ভিত্তিতে ব্ল্যাক কফি, মিষ্টি ছাড়া চা এবং পানিকে কম চর্বিযুক্ত দুধ, ফলের রস বা কৃত্রিমভাবে মিষ্টিযুক্ত পানীয়ের চেয়ে আগে স্থান দেব। চিনি-মিষ্টিযুক্ত পানীয় যেমন কোলা, ফলের রস যাতে উচ্চ পরিমাণে চিনি থাকে এবং সম্পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধ যা উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিবাড়ায়।‘’

বিএমজে জার্নালে বুধবার প্রকাশিত এই গবেষণায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ১৫,৫০০ প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যতালিকাগত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় উত্তরদাতাদের প্রায় ৭৫% নারী ছিল যাদের গড় বয়স ৬১। অংশগ্রহণকারীরা তাদের আটটি ভিন্ন ধরণের পানীয় যেমন- কৃত্রিমভাবে মিষ্টি করা পানীয়, চা,কফি, জুস, সাধারণ পানি, কম চর্বিযুক্ত দুধ, ফল, চিনি যুক্ত মিষ্টি পানীয় খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। চিনি যুক্ত মিষ্টিযুক্ত পানীয়ের মধ্যে রয়েছে ক্যাফিনযুক্ত সোডা, ফলের পাঞ্চ, লেমোনেড এবং অন্যান্য ফলের পানীয়। গবেষণায় দিনে চার কাপ কফি (ক্যাফিনযুক্ত এবং ডিক্যাফিনেটেড) , দুই কাপ চা, পাঁচ গ্লাস পানি এবং কম চর্বিযুক্ত দুধ দিনে দুই গ্লাস পান করার কথা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। প্রতিটি পানীয়ের পরিমাণ ছিল মাসে এক কাপ বা গ্লাসেরও কম।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে যারা সবচেয়ে বেশি চিনি-মিষ্টিযুক্ত পানীয় পান করেন তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ২০% বেড়ে যায়, যারা এটি কম পান করেন তাদের তুলনায়। হার্ট অ্যাটাকের মতো কার্ডিওভাসকুলার-সম্পর্কিত রোগে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে ২৯%। অন্যদিকে উচ্চ পরিমাণে কফি, চা,পানি এবং কম চর্বিযুক্ত দুধ পান করার সাথে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে বলে জানাচ্ছে এই গবেষণা । দেখা গেছে কফি পানের সাথে যুক্ত প্রাথমিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৬% কম, চায়ের জন্য ২১%, সাধারণ পানির জন্য ২৩% এবং কম চর্বিযুক্ত দুধের জন্য ১২%।বিশেষভাবে কার্ডিওভাসকুলার রোগের দিকে লক্ষ্য রাখার পর দেখা গেছে যে কফি বেশি খাওয়ার সাথে ১৮% হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। কম চর্বিযুক্ত দুধ পান করলে হার্টের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা ১২% কমে যায় ।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস ধরা পড়ার আগে যারা চিনি-মিষ্টিযুক্ত পানীয় পান করতেন তাদের জন্য কিছু সুসংবাদ ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, মিষ্টি পানীয়গুলিকে কফি বা কৃত্রিম কম -ক্যালোরিযুক্ত পানীয় দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়, তখন প্রাথমিক মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। যখন চিনি-মিষ্টি এবং কৃত্রিম কম -ক্যালোরিযুক্ত পানীয় উভয়ই কফি, চা, সাধারণ পানি এবং কম চর্বিযুক্ত দুধ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল, তখন যে কোনও কারণে হৃদরোগ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি আরও কম ছিল। অধ্যয়নের সময় যে ধরনের চায়ের (কালো, সবুজ, ভেষজ ) ব্যবহার করা হয়েছিল সে সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না এবং অংশগ্রহণকারীরা কফি বা চায়ে চিনি যোগ করেছেন কিনা সে সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না।যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম লিডার এবং নিউট্রিশনাল এপিডেমিওলজির তদন্তকারী নীতা ফরৌহি লিখেছেন, এই গবেষণায় ডেটার অভাব মানে ” মিষ্টি বিহীন এবং মিষ্টিযুক্ত গরম পানীয়ের তুলনামূলক স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলি এখানে অস্পষ্ট রয়ে গেছে”।গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক ছিল, তাই ফলাফলগুলি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা যায়নি। তবুও গবেষণার লেখকরা বিস্তারিতভাবে বারবার টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যতালিকাগত তথ্য সংগ্রহ করেছেন, প্রায় দুই দশক ধরে অংশগ্রহণকারীদের অনুসরণ করেছেন। তা থেকেই প্রাথমিকভাবে এই তথ্য সামনে এসেছে, যা কিছুটা হলেও মুখে হাসি ফোটাতে পারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের। সূত্র : সিএনএন

শেয়ার করুন