নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুরি হওয়া হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নবস্তু ফেরত দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩ | ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৩ | ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
চুরি হওয়া হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নবস্তু ফেরত দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নবস্তু কম্বোডিয়াকে ফেরত দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। মূলব্যান ঐতিহাসিক এসব প্রত্নবস্তু মূলত নবম ও দশম শতাব্দীর এবং কম্বোডিয়া থেকে এগুলো চুরি হয়ে গিয়েছিল। তবে দীর্ঘ এক দশকের তদন্ত শেষে সেগুলো ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ম এবং ১০ম শতাব্দীর তিনটি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য কম্বোডিয়ায় ফেরত পাঠাতে চলেছে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গ্যালারি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি থেকে এসব ভাস্কর্য চুরি হয়ে গিয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়ার পর এগুলো ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে এসব ভাস্কর্যের উৎস নির্ধারণের জন্য অস্ট্রেলিয়া ও কম্বোডিয়া দীর্ঘ এক দশক ধরে তদন্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছিল। এদিকে কম্বোডিয়ার সরকার অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্নবস্তু ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অতীতের অন্যায় সংশোধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবেও অভিহিত করেছে দেশটি।

বিবিসি বলছে, লুণ্ঠিত সাংস্কৃতিক পণ্য ও প্রত্নবস্তু ফেরত দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী চাপের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই তিনটি শিল্পকর্মই মূলত চম্পা রাজ্যের সময়কার যা একসময় ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার কিছু অংশে শাসন করত।

অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল গ্যালারি (এনজিএ) বলছে, তারা ২০১১ সালে ব্রিটিশ প্রত্নবস্তু পাচারকারী ডগলাস ল্যাচফোর্ডের কাছ থেকে ১৫ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করে এই ভাস্কর্যগুলো কিনেছিল। তবে ২০২০ সালে মারা যায় ডগলাস।

এনজিএ’র তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সাল থেকে প্রত্নসামগ্রীর অবৈধ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ডগলাস ল্যাচফোর্ড। এরপর ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে চুরি এবং লুট করা কম্বোডিয়ান প্রত্নবস্তুর কথিত পাচার সংক্রান্ত অভিযোগ আনা হয়।

সংবাদমাধ্যম এবিসি’র তথ্য অনুসারে, ১৯৯৪ সালে কম্বোডিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত তুবাং খমুমের একটি মাঠে খননের মাধ্যমে এই তিনটি মূর্তি আবিষ্কৃত হয় এবং পরে তা থাইল্যান্ডের সীমান্ত পেরিয়ে প্রত্নসামগ্রীর আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের কাছে পাচার করা হয়। আর শেষ পর্যন্ত সেগুলো ডগলাস ল্যাচফোর্ডের সংগ্রহে চলে যায়।

বিবিসি বলছে, এনজিএ এবং কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও চারুকলা মন্ত্রণালয়ের গবেষকদের পাশাপাশি ঐতিহাসিক এসব বস্তু ফেরত দিতে সহায়তা করার জন্য কাজ করেছেন ল্যাচফোর্ডের মেয়ে নওয়াপান ক্রিয়াংসাক। অবশ্য এসব প্রত্নবস্তু এখনই ফেরত পাচ্ছে না কম্বোডিয়া।

৯ম এবং ১০ম শতাব্দীর এই তিনটি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য আগামী তিন বছর ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল গ্যালারির ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা হবে। আর এই সময়ের মধ্যে নম পেনে এই মূর্তিগুলো রাখার জন্য নতুন জায়গা প্রস্তুত করবে কম্বোডিয়া।

উল্লেখ্য, কম্বোডিয়া তার প্রাচীন মন্দির থেকে চুরি করা হাজার হাজার পুরাকীর্তি ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির লুট হওয়া পুরাকীর্তিগুলোর মধ্যে বেশ কিছু ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামেও রাখা রয়েছে।

শেয়ার করুন