নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর’

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ০১:৪৩ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
‘খালেদা জিয়ার অবস্থা গুরুতর’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় আছেন। গুরুতর অবস্থা। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্বাসিত থেকেও তিনি সংগ্রাম করে চলেছেন এবং সংগঠিত করছেন। অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারাও আজকে আমাদের সঙ্গে শরিক হয়েছেন। সবাই কিন্তু আজকে এগিয়ে এসেছেন। সুতরাং ঘরে বসে থাকার সময় নেই।’

অনুষ্ঠানে ফখরুল আরও বলেন, আমরা এক ঘোর অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্র এখন আর রাষ্ট্র নেই। রাষ্ট্র এখন পুরোপুরিভাবে একটা যন্ত্রণা, অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের কারখানা হয়েছে।

তিনি বলেন, একটা রাষ্ট্র তখনই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সফল হতে পারে; যখন তার তিনটা স্তম্ভই কাজ করে। যেখানে একটা স্তম্ভ পুরোটাই তারা দখল করে নিয়েছে। আমি সোজা কথায় বলি, বাংলাদেশের আত্মাটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা যে আত্মাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, কাজ করেছি, লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি- সেই আত্মা বিনষ্ট করে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে অনেকে বলছেন যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। আমি তো বলি যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে কিনা আমি তো জানি না। যারা বিচারক এই সমাজের স্বাধীনতাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আছেন, তারা জানেন, তাদের সহকর্মী, বড় বড় পত্রিকার এডিটর, বড় বড় চ্যানেলের এডিটর তারা আজকে উর্দির ভূমিকা পালন করছেন। আমাদের চেয়ে তারাও কম যান না। আমি লজ্জা পাই, যখন টেলিভিশনে দেখি তাদের কয়েকজন প্রথিতযশা সম্পাদক এবং বিভিন্ন সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তারা যখন এই ভয়াবহ অত্যাচার-নির্যাতন, গণতন্ত্র হত্যার যে কর্মযজ্ঞ তাকে সমর্থন করছে। এটাই এখন হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কথা বাদ দেন। আমরা রাস্তার কর্মী, মাঠের কর্মী, মাঠের মধ্যে লড়াই করি, জেলে যাই, অনেকের ফাঁসিও হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে আমাদের ঈশ্বরদীর প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী ৩০ বছর আগে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে কী ঢিল-টিল মেরেছিল। ত্রিশ বছর পরে বিচারকরা শাস্তি দিয়েছেন। ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আমাদের হাবিবুল ইসলাম হাবিব তাকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে- এটা ইতিহাস।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে দিয়েছে। এ রকম ৬৪৮ জনকে গুম করেছে। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করেছে, আমাদের সম্পাদক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। দেশে আছেন এমন অনেক সম্পাদক-সাংবাদিককে নিঃগৃহীত হতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে। এই একটু আগে একজন আমার সাথে দেখা করলেন যে, মাস খানেক আগে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল, এক মাস জেলে থেকে বেরিয়েছেন। কত বলব, কার কথা বলব? অত্যাচার-নির্যাতন এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে এখান থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, নুরুল আমিন রোকন, এম এ আজিজ, আবদুল হাই শিকাদার, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, বাকের হোসাইন, ইলিয়াস খান, মোরসালিন নোমানী, রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জামায়াতে ইসলামীর মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দসহ পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : কালবেলা

শেয়ার করুন