নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খরায় বিপর্যস্ত পানামা খাল, সংকটে বিশ্ববাণিজ্য

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৩ | ০২:৪৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৩ | ০৪:০২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
খরায় বিপর্যস্ত পানামা খাল, সংকটে বিশ্ববাণিজ্য

পানামা খাল- ফাইল ফটো/সিএনএন

এশিয়া থেকে আমেরিকা পর্যন্ত পণ্য আমদানি-রফতানির অন্যতম প্রধান সমুদ্রপথ পানামা খাল। পানামা খালের উভয় পাশে এক এক সময়ে ২০০টিরও বেশি নৌযান অপেক্ষা করছে। পানামা খাল পেরোতে গড়ে প্রায় চার দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে জাহাজগুলোকে।

যুগ যুগ ধরে এই পানিপথে দুই মহাদেশের মধ্যে পণ্য বিনিময় হয়ে চলেছে। কিন্তু সেই পানামা খালই এখন সমস্যার মুখে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিভিন্ন দেশের নীতিগত পরিবর্তনের জন্য বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রতীক হিসাবে পরিচিত পানামা খালের দু’ধারে এখন শুধু অপেক্ষমান জাহাজের ভিড়।

মনে করা হচ্ছে, পানামা খালের এই দূরাবস্থা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পানামা খালের উভয় পাশে এক এক সময়ে ২০০টিরও বেশি জাহাজ অপেক্ষমান। পানামা খাল পেরোতে গড়ে প্রায় চার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে জাহাজগুলোকে।

ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অনেক সময় এমনও হয়েছে, যেখানে কয়েকটি জাহাজকে ২০ দিনেরও বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পানামা খালের দু’পাশে জাহাজের ‘মেলা’ বসার অন্যতম কারণ খালের পানির স্তর কমে যাওয়া। জলবায়ু পরিবর্তন এবং দীর্ঘ খরার কারণেই পানামা খাল সংলগ্ন পানির স্তর ধীরে ধীরে কমছে।

খাল সংলগ্ন গাতুন হ্রদ পানামার পানি সরবরাহের অন্যতম উত্স। সেই হ্রদের পানির স্তর গত সাত বছরে উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে কমে গেছে পানামার পানির স্তরও। পানামা সংরক্ষণের লক্ষ্যে, পানামা খাল কর্তৃপক্ষ (এসিপি) বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ এনেছে। কিন্তু তাতেও খুব লাভ হচ্ছে না বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

এসিপির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পানামা খাল দিয়ে দৈনিক ৩২টির বেশি জাহাজ যাতায়াতের অনুমতি নেই। মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ১৪০০টি দ্বীপ। যার বেশির ভাগ দ্বীপেই মানুষ বসবাস করে। কিন্তু বিগত ৭০ বছরের মধ্যে এত বিপজ্জনক খরার মুখে পড়তে হয়নি দ্বীপগুলোকে।

অনুমান করা হচ্ছে, এই খরার কারণে প্রায় ২০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে পানির স্তর কমে যাওয়ার কারণে পণ্যবাহী জাহাজগুলো কম পরিমাণে পণ্য পরিবহণ করছে।

ইয়াহু নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য পানামা ব্যস্ততম দেশ। প্রতি বছর গড়ে আমেরিকার প্রায় ৪০ শতাংশ পণ্যবাহী জাহাজ পানামা খাল দিয়ে যাতায়াত করে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পানামা খালে যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। যার প্রভাব সরাসরি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির উপরেও পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যদি পানামা খালের পানির স্তর কমতে থাকে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে। আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে দেশটিতে। তবে এসিপির বিশ্বাস, শিগগিরই পানামা খালের সমস্যার সমাধান হবে। সংকট কাটিয়ে উঠতে দিনরাত কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সূত্র : আনন্দবাজার

শেয়ার করুন