নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রিমিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে আগুন, নিরাপদ আশ্রয়ে ২ হাজার মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৩ | ০৭:১৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ | ০৭:১৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ক্রিমিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে আগুন, নিরাপদ আশ্রয়ে ২ হাজার মানুষ

ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পার্শ্ববর্তী একটি হাইওয়েও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আগুন লাগার কোনো কারণ উল্লেখ না করা হলেও ইউক্রেনীয় মিডিয়া বলেছে, রাতের আঁধারে ইউক্রেনীয় বিমান হামলার পরে সামরিক ঘাঁটির গোলাবারুদ ডিপোতে আগুন লেগেছে। বুধবার (১৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়ান উপদ্বীপের কিরোভস্কে জেলার সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনায় ২ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং কাছাকাছি একটি হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে ক্রিমিয়ার মস্কো-নিযুক্ত গভর্নর বুধবার জানিয়েছেন।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ বলেছেন, ‘আগুন লাগার ঘটনার পর সেখানকার চারটি বসতির বাসিন্দাদের অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে ২ হাজারেরও বেশি লোক রয়েছে।’ অবশ্য ক্রিমিয়া উপদ্বীপের ওই সামরিক ঘাঁটিতে অগ্নিকাণ্ডের কোনো কারণ জানানো হয়নি। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে সেখানকার প্রধান টাভরিডি হাইওয়ে আংশিক বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত রাশিয়ার টেলিগ্রাম চ্যানেল এবং ইউক্রেনীয় মিডিয়া বলেছে, রাতের আঁধারে ইউক্রেনীয় বিমান হামলার পরে সামরিক ঘাঁটির গোলাবারুদ ডিপোতে আগুন লেগেছে।রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে এসব খবর যাচাই করতে পারেনি। এছাড়া ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের ওডেসা সামরিক প্রশাসনের মুখপাত্র সেরহি ব্রাচুক জনবসতিহীন একটি এলাকায় আগুনের দু’টি ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন, ‘শত্রুর গোলাবারুদ ডিপো। স্টারি ক্রিম।’ স্টারি ক্রিম হচ্ছে ক্রিমিয়ার কিরোভস্কে জেলার একটি ছোট ঐতিহাসিক শহর। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ এবং ছবিতে একটি জনবসতিহীন এলাকায় বড় অগ্নিশিখা এবং ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আগুন দেখা যাচ্ছে। সিরিজ বিস্ফোরণের ফলে এই আগুনের সৃষ্টি হয়। কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার সময়ও এই আগুন প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলছে এবং এখনও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।

এর আগে সোমবার ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে ইউক্রেনের হামলার ঘটনা ঘটে। ইউক্রেনের হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং তাদের শিশু সন্তান আহত হয়। সেই ঘটনার দু’দিনের মাথায় এবার উপদ্বীপটিরই একটি সামরিক ঘাঁটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।

যদিও ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার জন্য একদিন আগেই রাশিয়া ইউক্রেনকে দায়ী করেছে এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন। এদিকে টানা দ্বিতীয় রাতের মতো ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, বুধবার ভোরে কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন হামলা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখলে নিয়েছিল রাশিয়া। অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ মস্কোর এই দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি এছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়া বলেছে, রুশ বাহিনী কৃষ্ণসাগরের এই উপদ্বীপটি দখল করার পর সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানেই দেখা গেছে, ক্রিমিয়ানরা সত্যিকার অর্থেই রাশিয়ার অংশ হতে চায়। যদিও সেই গণভোটকে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ স্বীকৃতি দেয়নি।

শেয়ার করুন