নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : চাকরি হারাতে পারেন ৩০ কোটি মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩ | ০২:৩০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ | ০২:৩০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : চাকরি হারাতে পারেন ৩০ কোটি মানুষ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) কারণে ফুলটাইম (পূর্ণ-সময়ের) চাকরি হারাতে পারেন বিশ্বের অন্তত ৩০ কোটি মানুষ, সম্প্রতি বহুজাতিক ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাশের এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বাজারের এক চতুর্থাংশ চাকরি দখল করতে পারে। তবে এআই’র হাত ধরে কাজের নতুন ক্ষেত্র এবং উৎপাদনশীলতাও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। এআই’র কারণে বিশ্বব্যাপী উত্পাদিত পণ্য ও সেবার মোট বার্ষিক পরিমাণ সাত শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেটিভ এআই এমন বিষয়বস্তু তৈরি করতে সক্ষম যেগুলো মানুষের তৈরি বিষয় থেকে আলাদা। যা একটি বড় অগ্রগতি।

কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

ব্রিটিশ সরকার দেশটিতে এআই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। এটি ‘গোটা অর্থনীতিতে উত্পাদনশীলতা বাড়াবে’ বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। তবে এর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্য। টেকনোলজি সেক্রেটারি মিশেল ডোনেলান সানকে বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এআই আমাদের যুক্তরাজ্যে যেভাবে কাজ করছে, তাতে ব্যাঘাত ঘটছে না। এআই আমাদের কাজগুলো কেড়ে নেওয়ার পরিবর্তে তা আরও ভালো করে তুলছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন খাতে এআই’র প্রভাব ভিন্ন হবে। প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে ৪৬ শতাংশ ও আইনি পেশায় ৪৪ শতাংশ স্বয়ংক্রিয় হতে পারে। তবে নির্মাণ খাতে মাত্র ছয় শতাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণে মাত্র চার শতাংশ প্রভাব পড়বে। বিবিসি নিউজ এর আগে কিছু শিল্পীর উদ্বেগের বিষয়ে জানিয়েছিল যে, এআই ইমেজ জেনারেটর তাদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকে শেষ করে দিতে পারে।

কম মজুরি

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অক্সফোর্ড মার্টিন স্কুলের ভবিষ্যৎ কাজের পরিচালক কার্ল বেনেডিক্ট ফ্রে বিবিসি নিউজকে বলেন, একমাত্র জিনিস সম্পর্কে আমি নিশ্চিত যে, জেনারেটিভ এআই দ্বারা কতগুলো চাকরি প্রতিস্থাপিত হবে তা জানার কোনো উপায় নেই। তিনি যোগ করে, উদাহরণস্বরূপ- চ্যাটজিপিটি যা করে তা হলো, লেখার দক্ষতা সম্পন্ন আরও বেশি লোককে রচনা ও নিবন্ধ তৈরি করতে সাহায্য করে।


সাংবাদিকরা তাই আরও প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে, যার ফলে মজুরি কমে যাবে, যদি না আমরা এই ধরনের কাজের চাহিদায় খুব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখতে পাই।তিনি বলেন, জিপিএস প্রযুক্তি এবং উবার-এর মতো প্ল্যাটফর্মের প্রবর্তনের কথা বিবেচনা করুন। ফলাফল ছিল কম মজুরি, কিন্তু কম ড্রাইভার নয়। আগামী কয়েক বছরে জেনারেটিভ এআই সৃজনশীল কাজের বিস্তৃত সেটে একইরকম প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানান তিনি।

‘এক চিমটি লবণ’

প্রতিবেদনে উদ্ধৃত গবেষণা অনুসারে, বিশ্বের ৬০% শ্রমিক এমন পেশায় রয়েছে যা ১৯৪০ সালে বিদ্যমান ছিল না। কিন্তু অন্যান্য গবেষণা বলছে, ১৯৮০ এর দশক থেকে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলে কর্মসংস্থান তৈরির চেয়ে বেশি কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, যদি জেনারেটিভ এআই’র অগ্রগতি অতীত তথ্য-প্রযুক্তির মতো হয়, তবে এটি নিকটবর্তী মেয়াদে কর্মসংস্থান কমাতে পারে।

এআই -এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অবশ্য অত্যন্ত অনিশ্চিত উল্লেখ করে রেজোলিউশন ফাউন্ডেশন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রধান নির্বাহী টরস্টেন বেল বিবিসি নিউজকে বলেছেন, সুতরাং সমস্ত দৃঢ় ভবিষ্যদ্বাণীকে ‘এক চিমটি লবণ’ দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনও জানি না প্রযুক্তিটি কিভাবে বিকশিত হবে বা কিভাবে সংস্থাগুলো এটিকে একীভূত করবে।

আবার এর মানে এই নয় যে, এআই আমাদের কাজ করার পদ্ধতিতে ব্যাঘাত ঘটাবে না। তিনি যোগ করেন, তবে আমরা উচ্চ-উৎপাদনশীল কাজ ও সস্তা সেবার মাধ্যমে সম্ভাব্য জীবন-মানের উন্নয়নের দিকেও মনোযোগ দিতে পারি। সূত্র : একাত্তর টিভি

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন