জাবালিয়া উদ্বাস্তুশিবিরে ইসরাইলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনির লাশ বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে - ছবি : রয়টার্স
ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের তৃতীয় দিনে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫১৬ জন ফিলিস্তিনি এবং ৮০০ জন ইসরাইলি নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ইসরাইলি স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য অনুসারে, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গাজায় ৫১০ জন ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে ১৬ জন। আহতদের মধ্যে গাজায় ২ হাজার ৭৫০ জন এবং পশ্চিমতীরে ৮০ জন।
এছাড়া ইসরাইলি আহত হয়েছে ২ হাজার ২৪৩ জন।
শনিবার হঠাৎ করেই বিপুলসংখ্যক রকেট হামলা চালানোর পর বেড়া ভেঙ্গে ইসরাইলে ঢুকে পড়ে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। স্বাধীনতাপন্থী এ গোষ্ঠীটি ইসরাইলের ভিতরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আক্রমণে নিহত ইসরাইলিদের মধ্যে ৭৩ জন সেনা সদস্য রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এদিকে, ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে নতুন অস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে ফিলিস্তিনি গ্রুপ আল কাসেম ব্রিগেড। সোমবার গাজা থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন আলজাজিরার প্রতিনিধি জামিলেহ আবু জানুনা।
ওই গ্রুপের এক বিবৃতি সূত্রে আল জাজিরার ওই প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা গাজায়ই ওই অস্ত্রগুলো তৈরি করেছে। এখন ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে সেগুলো ব্যবহার করছে। নতুন এ অস্ত্র হলো কাঁধে বহনকারী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। আল কাসেম ব্রিগেডের প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, তাদের যোদ্ধারা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালাচ্ছে এবং সেখানে আঘাত করতে সক্ষম হচ্ছে। ওই সংবাদদাতা আরো জানান, ‘ওই যোদ্ধারা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেখাতে চাচ্ছে এবং বলছে যে তারা যুদ্ধে সফল হতে চলেছে।’
এদিকে, রিফাত আল আরির নামে গাজার একজন বাসিন্দা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, তাদেরকে ইসরাইলি বোমার মুহুর্মুহু শব্দের মধ্যে রাত পার করতে হয়েছে। ইসরাইলের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় যে পরিমাণ বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না বলে জানিয়েছেন রিফাত। তিনি জানান, গাজা জুড়েই, বিশেষত মসজিদ, ব্যবসাকেন্দ্র ও আবাসিক এলাকাগুলোতে যেখানে ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছে সেসব এলাকাকে টার্গেট করে প্রচুর বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।
‘গত রাতে আমরা যা দেখেছি তা আগে কখনো দেখিনি। আমরা একটুও ঘুমাতে পারিনি। পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর ছিল,’ বলেন তিনি। রিফাত বলেন, ‘আমি মনে করি এটা মাত্র শুরু। কারণ তারা একটি মিনিটের জন্যও আক্রমণ থামায়নি।’ এদিকে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো এখন তাদের ‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে’। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, কিছু কিছু এলাকায় যুদ্ধ চলমান রয়েছে।