নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ সম্মেলন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াসীনের দাবী

আমার বিরুদ্ধে পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশিত অভিযোগ মিথ্যা, বনোয়াট ও ভিত্তিহীন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩ | ০১:৩০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ | ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
আমার বিরুদ্ধে পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশিত অভিযোগ মিথ্যা, বনোয়াট ও ভিত্তিহীন

নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতিবাদ করেছেন নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াসীন। তার সম্পর্কে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও প্রতিহিংসামূলক উল্লেখ করে তিনি ঐ সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিস্ট পত্রিকায় তার বক্তব্য সহ যথাযথভাবে রিজয়েন্ডারের দাবী জানিয়েছেন। গত শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াসীন। সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ ইয়াসীসের স্ত্রী লতিফা আহমেদ টুম্পা প্রকাশিত খবরটির প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, অসত্য খবর প্রকাশের ফলে আমরা পারিবারিকভাবে সম্মানহানিকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াসীন বলেন, নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার গত ৩ মার্চের সংখ্যায় পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্ঠায় ‘এসবিএ লোন : ৫ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ : প্রতারণার দায়ে বাংলাদেশী গ্রেফতার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যে প্রতিবেদনে আমার সম্পর্কে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও প্রতিহিংসামূলক। আমি ঐ সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই যে, আজকাল-এর প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবরে ব্যক্তিগতভাবে আমার ও আমার পরিবারের চরম মানহানি ঘটেছে। কেননা, প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে আমি কিছুই জানি না এবং আমার কাছে আজকাল কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে কোন কিছু জানতেও চায়নি। ফলে আমার কোন বক্তব্যও রিপোর্টে নেই।

মোহাম্মদ ইয়াসীন বলেন, আমি সকল মিডিয়া ও সাংবাদিক ভাই-বোনদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সাপ্তাহিক আজকাল-এ প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে অমি নাকি এস কে আনোয়ারের নামের এক বাংলাদেশীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৫ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছি, আমাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং আমি পুলিশ হেফাজতে। এইসব তথ্য সর্ববৈ মিথ্যা।

তিনি বলেন, এস কে আনোয়ারের সাথে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিলো এবং এক সময় প্রয়োজনে তার অবগতিতেই সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ব্যববহার করতে হয়। যা তিনি সম্পূর্ণ অবগত। তার কোন ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার কোন প্রশ্নই উঠে না। এছাড়া এসবিএ ঋণ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তাও সঠিক নয়। কভিড-১৯ এর সময় আমাদেরযৌথ মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর জন্য ৮৪ হাজার ডলার ঋণসুবিধা পাই যা তিনি অবহিত এবং ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে তাকে প্রাপ্ত ঋণের অর্ধেক অর্থ অর্থাৎ ৪২ হাজার ডলার নগদ প্রদান করি। আমি এও জেনেছি পরদিন এস কে আনোয়ার প্রায় ২৫ হাজার ডলার মুল্যেএকটি হুন্দাই গাড়ীও ক্রয় করেন। আর অমি কখনো তার স্টোরে কাজ করিনি বরং স্টোরের অন্য তম মালিক হিসেবে আমিই স্টোরটি পরিচালনা করতাম। মালিকানার অংশ হিসেবে তিনি প্রতিমাসে তাঁকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হোত। পরবর্তীতে তিনি স্টোরটি জোর করে বন্ধ করে দেন যার ভিডিও আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

মোহাম্মদ ইয়াসীন লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, আমি মনে করি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে এস কে আনোয়ার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে পাল্টা আমার সাথে প্রতারণা করেছেন।

মোহাম্মদ ইয়াসীন আরো বলেন, এছাড়াও আমি গ্রেফতার হয়েছি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও সঠিক নয়। মূলত: তার (এস কে আনোয়ার) অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাকে ডিটেকটিভ অফিস থেকে ডাকার প্রেক্ষিতে আমি ডিটেকটিভ অফিসে যাই এবং সেখানে আমার সাথে কথা বলার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তা ডিষ্ট্রিক্ট এটর্নী অফিসে প্রেরণ করে আমাকে বিদায় করে দেয়। মূলত: আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই এবং কোন কোর্টে আমাকে হাজির হতে হয়নি। ডিষ্ট্রিক্ট এটর্নী অভিযোগটি ডিসমিস করে দিয়েছে।

আমি একজন ব্যবসায়ী মানুষ। সততার সাথে ব্যবসা করছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আজকাল-এ তা প্রকাশ করে আমার ও আমার পরিবারের মানহানি করা হয়েছে, তাতে আমি চরমভাবে ব্যথিত। আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সত্য কথা সবাইকে জানাতে চাই এবং এজন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা চাই।

সবশেষে তিনি বলেন, আমি আমার সম্মান হানির জন্য আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।

এক প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ ইয়াসীন বলেন, সংশ্লিষ্ট পত্রিকা যদি এখনো যথাযথভাবে আমার বক্তব্য তুলে ধরে ‘রিজয়েন্ডার’ প্রকাশ করে তাহলে আমি মানহানির মামলা তুলে নিতে বিবেচনা করবো।

মানহানির মামলার পরিমান কত- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমার এটর্নী সব জানেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ ইয়াসীন বলেন, মিথ্যা খবরটি প্রকাশের পর আমি ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

এক প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ ইয়াসীনের স্ত্রী লতিফা আহমেদ টুম্পা আবেগ-আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আমরা যদি অন্যায় করতাম তাহলে কোন কথা ছিলো না। কিন্তু সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য ছাড়াই এক তরফা নিউজ করায় আমাদের ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক পারিবারিকভাবে যে ক্ষতি, অসম্মান হলো তায় দায় কার? তিনি বলেন, এমন মিথ্যা খবরে আমার পরিবার মানসিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত।

কেন এমন অভিযোগ- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমেরিকাতে আমরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভালো করছি, ভালোভবে থাকছি এটা অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। তাই আমরা প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। সাংবাদিক সম্মেলনেরশেষ পর্যায়ে এস কে আনোয়ার আকস্মিক অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হয়ে কিছু বলার চষ্টো করলে তাকে পরবর্তী কোনদিন প্রয়োজনে সাংবাদিকদের কাছে তার বক্তব্য প্রদানের সুযোগ গ্রহণের কথা জানিয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়। সুত্র ইউএনএ’র।

শেয়ার করুন