নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থনীতির সব সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ওপরে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩ | ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩ | ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
অর্থনীতির সব সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ওপরে বাংলাদেশ

স্বাধীনতার পরপর যে দেশকে ‘ভিক্ষার ঝুড়ি’ (বাস্কেট কেস) বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার, সেই বাংলাদেশ আজ সব অর্থনৈতিক সূচকে ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানকে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে করাচিভিত্তিক উর্দু সংবাদপত্র ডেইলি জং এক প্রতিবেদনে বলেছে, মাথাপিছু আয়, রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটের কথা তুলে ধরে বলা হয়, যেখানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, সেখানে পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

জনসংখ্যা পরিকল্পনায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার আগে ১৯৫১ সালে বাংলাদেশে বিপুল জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পনার কারণে বর্তমানে দেশটি জনসংখ্যা ১৬৫ মিলিয়নের (সাড়ে ১৬ কোটি) মধ্যে সীমিত রাখতে পেরেছে। বিপরীতে পাকিস্তানের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ মিলিয়নে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে নারীর নির্বিঘ্ন অংশগ্রহণ ঊর্ধ্বমুখি। বিপরীত চিত্র পাকিস্তানে। সেখানকার কর্মক্ষেত্রে দিন দিন কমেছে নারীর অংশগ্রহণ। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ তার অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের মতো অগোছালো রাজনীতি, দুর্বল জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতির মতো সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

রিজার্ভ প্রসঙ্গে বলা হয়, ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। তখন পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৭ বিলিয়ন ডলার। নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বাংলাদেশের প্রায় ৩১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে, যেখানে পাকিস্তানের আছে ৪ বিলিয়ন ডলারের কম। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের উন্নতির প্রমাণ পাওয়া যায় অর্থনৈতিক উত্থানের দিকে তাকালে। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ২৭১ গুণ বেড়েছে, যা দেশটির প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক ও স্থিতিস্থাপক গতিপথ সম্পর্কে ধারণা দেয়।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় পোশাকশিল্পের কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। পাশাপাশি চলতি বছরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়। যেখানে বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ বিলিয়ন ডলার, সেখানে পাকিস্তানের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ বিলিয়ন ডলার পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশা নিয়ে সম্প্রতি জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান বর্তমানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ভুগছে। এতে জনসাধারণের জীবনযাত্রা কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ক্রমেই অন্ধকার নামছে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে।

পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বহিরাগত ঋণ পরিশোধের মতো অনিশ্চিত বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে বলে এতে বলা হয়। প্রতিবেদন বলছে, গত ২০২১-২২ অর্থববছরে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল বছরে ১৬১৩.৮ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ১১ শতাংশ কমে যায়। এই নিম্নমুখী প্রবণতায় গতবছর পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় গিয়ে ঠেকে ১৩৯৯.১ ডলারে।

সাথী/পরিচয়

শেয়ার করুন