নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের অসাধারণ মর্যাদা লাভ

আবু জাফর মাহমুদ

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের অসাধারণ মর্যাদা লাভ

পৃথিবীর রাজধানীখ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস-এর ৭৩ স্ট্রিটের নাম এখন ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট। বাংলাদেশিদের বহুমুখি অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সিটি কর্তৃপক্ষের শতভাগ সমর্থনে এই বিলটি পাস হয়েছে বৃহস্পতিবার। এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমাদের উপমহাদেশের বংশোদ্ভুত ডিস্ট্রিক্ট ২৫ এর কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণানের। সকল শ্রেনীপেশার বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। শেখর কৃষ্ণান বাংলাদেশি সমাজের অতি আপনজন। নির্বাচিত কাউন্সিলম্যান হিসেবে তিনি বাংলাদেশি সমাজের প্রতি তার অশেষ কৃতজ্ঞতার সাক্ষর রেখেছেন। তিনি সকল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, মেয়র এরিক এডামস্ এর সর্বোচ্চ আন্তরিকতার কারণেই তারসহ সকল কাউন্সিলম্যান বাংলাদেশিদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও অবদানের মূল্যায়ন করতে পারছেন।

নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে। ব্রংক্সের বাংলাদেশী অধ্যুষিত পার্কচেস্টার এলাকা থেকে নির্বাচিত কাউন্সিল উইমেন উত্থাপিত একটি রেজোল্যুশন গৃহীত হয়েছে। ওই রেজোল্যুশনের কোস্পন্সর বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত কাউন্সিল উইমেন ব্রুকলীন থেকে নির্বাচিত শাহানা হানিফ। আমার কন্যাসম এই নেতৃত্ব আমাদের অহংকার। তার প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতা।

রেজোল্যুশনের অন্য স্পন্সররা হলেন কাউন্সিল সদস্য টিফানি ক্যাভান, জুলি ওয়ান, কৃস্টাল হাডসন, শেখর কৃষ্ণান, এরিক ডাইনোউইটজ, নাতাশা উইলিয়ামস, চি ওসি, অ্যালেক্স এ্যাভাইলস, ক্রিস্টোফার মার্টি, ফারাহ লুইস, জুলি মেনিন, পিয়েরিনা এ্যানা স্যানচেজ, কারলিনা রিভেরা, মারজোরি ভেলাজকুয়েজ ও জেমস জিনারো। রেজুলেশনে বলা হয়, মাতৃভাষার প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করেছে, তা পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠির জন্য অনুসরনীয়। ইউনেস্কো ঘোষিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন নিউইয়র্কবাসীর জন্যও বড় দায়িত্ব। এখানে যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে তাকে উর্ধে তুলে ধরার জন্যই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।

সিটি কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান জ্যাকসন হাইটসে ৭৩ স্ট্রিটকে বাংলাদেশ স্ট্রিট নামকরণের পাশাপাশি এলমহার্স্টে কুইন্স বুলোভার্ড ও ৫৫ রোডের কর্ণারটির নামকরণও করলেন দুর্ঘটনায় নিহত বাঙালি তরুণ আসিফ রহমান ওয়ে। গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সিটির যে ১২৯টি স্ট্রিটের নতুন নামকরণ করা হয়, তার মধ্যে একটি আসিফ রহমান ওয়ে। আসিফ রহমান কুইন্স বুলোভার্ডের সার্ভিস রোডের ওপর মৃত্যুবরণ করেন ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।

একই দিনে বাংলাদেশিদের জন্য তিনটি অর্জন। জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমাদের মর্যাদা সম্মুন্ন হলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার তথা নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির প্রতি আমাদেরও দায়িত্ব বেড়ে গেল। এখানে যারা বাংলাদেশি আমেরিকান রয়েছেন তারা বটেই, তার বাইরেও সকল অভিবাসীর নিউইয়র্ক সিটির প্রতিটি কাজে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশিদের চেতনা, বীরত্ব, কর্তব্যনিষ্ঠা, শৃংখলাবোধসহ সকল ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে অবশ্যই এই নিউইয়র্ক শহরের স্বীকৃতি সবচেয়ে বড়। আমরা বিশ্বাস করি, এই নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের গভীরতা আরো বাড়বে। আমরা নিউইয়র্কের নাগরিক বা আমেরিকার অধিবাসীরা এদেশের সরকার বা সিটি র্কৃপক্ষের যে আন্তরিক মনোভাব দেখেছি, তা আমাদের জাতিগত মর্যাদাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদেরকে অবশ্যই আমেরিকা ও নিউইয়র্কের স্বার্থকে নিজের করে দেখতে হবে।

এই শহরে অনেক অকৃতজ্ঞ জাতি ও মানুষ রয়েছে। আমরা তাদের মতো নই। আমরা জাতি হিসেবে কৃতজ্ঞ ও বিনয়ী। আমরা পারস্পারিক সম্পর্কের শক্তি সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। আমরা একাত্ম থাকতে ভালোবাসী। সামষ্টিক শক্তির পক্ষে থাকতে ভালোবাসি । নিউ ইয়র্ক

শেয়ার করুন