নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ২৪শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওজোনপার্কে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের উদ্যোগে মা দিবস উদযাপন

আমেরিকান সমাজে সেবা ও ভালোবাসার ঢেউ তুলেছি – আবু জাফর মাহমুদ

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৩ | ১১:১৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২০ মে ২০২৩ | ১১:১৯ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
আমেরিকান সমাজে সেবা ও ভালোবাসার ঢেউ তুলেছি – আবু জাফর মাহমুদ

ব্যতিক্রমী ও বর্নাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব মা দিবস উদযাপন করেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সমাজের পথিকৃৎ হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠান বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ইনক। ১১২৭ লিবার্টি এভিনিউ ব্রুকলীন-এ প্রতিষ্ঠানটির ওজোন পার্ক অফিসে বাংলাদেশি কমিউনিটির শতাধিক মাসহ প্রায় চার’শ বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষের উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের চেয়ারম্যান ও সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন ব্রুকলীন জামে মসজিদের খতিব বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মহিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের কৃতি সন্তান গোলাম মাওলা, শামসুল আলম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল ওদুদ, জসিমউদ্দিন, প্রফেসর আহসানউল্লাহ, প্রফেসর ইউনূস, আরিফার চৌধুরী, গোলাম মওলা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন, আজহারউদ্দিন, আব্দুল মান্নান মোল্লা, নূরুল আমীন, মো. ইয়াসিন, আব্দুল মতিন, আব্দুল গোফরানসহ ব্রুকলীন ও ওজোনপার্ক এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মা’সহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদেরকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়।’

 

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মহিবুর রহমান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মা’কে নিয়ে এমন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অসাধারণ এক দৃষ্টান্ত গড়েছে। বিশেষ করে মায়ের প্রতি মূল্যায়নের জন্য কোরআন ও হাদীসের আলোকে দুটি কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। এটি অন্যান্য সবার জন্যই অনুসরনীয়। তিনি পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত কোরো না এবং তোমরা পিতামাতার প্রতি সদয় থাকো। তিনি হাদীসে রাসুল (সা.) থেকে নানা উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। বলেন রাসুল (সা.) মায়ের সেবার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। অগ্রাধিকারের প্রশ্নে মায়ের গুরুত্ব প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে। পিতার গুরুত্ব চতুর্থ পর্যায়ে। তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে মায়ের প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শনের একান্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, সুযোগ থাকতে কেউ মায়ের ভালোবাসা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না।

অনুষ্ঠানের আয়োজক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ তার জীবনের প্রতিটি কর্ম ও চিন্তায় মায়ের প্রতি ভালোবাসা, দরদ ও মাকে যথাযথ মূল্যায়ণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সন্তান যখন আঘাত করে, তখন মা’ই সেই যন্ত্রণা বোঝেন। মা যেদিন সন্তান জন্ম দেন, সেদিন তিনি যে বাস্তবতা বোঝেন, তা আর কেউ বোঝে না। বুঝতে পারে না। আমরা সবাই যত কথাই বলি, যত কিছুই শিখি মায়ের শিক্ষার কোনো তুলনা নেই। সন্তান জন্মদানের সময় মায়ের যে অকৃত্রিম হাসি, সে হাসির সঙ্গে পৃথিবীর কোনো উচ্ছ্বলতার তুলনা হতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের পরিবার, সমাজ ও ধর্ম মিলিয়ে আমাদের যে মানসিকতা তার সঙ্গে আল্লাহর নিয়ামত রয়েছে।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন যে মাটিতে আমরা জন্মেছি সে মাটিতে আমরা আর নেই। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা পৃথিবীর নেতৃত্বদানকারী দেশের রাজধানীতে অবস্থান করছি। আমরা এখন পৃথিবীর নেতৃত্বদানকারীদের শক্তিতে সামিল হয়েছি। জন্মেই যে সমুদ্রের ঢেউ দেখেছি, আমেরিকান সমাজে আমরা সেই ঢেউ তুলতে চলেছি। আমাদের যে স্বকীয় সত্তা যে সাংস্কৃতিক চিন্তা তা আমরা মাটি থেকেই অর্জন করেছি। পরিবেশ সমাজ ও প্রতিবেশির কাছ থেকে যে ভালোবাসা শিখেছি, এই সমাজে সেই ভালোবাসার ঢেউ তুলতে চলেছি। তারই অংশ মা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ। যত ও ভালোবাসার শক্তি নিয়ে আমরা এই বহুজাতিক সমাজে নতুন ঝাণ্ডা ওড়াচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ আমেরিকার একেকটি জায়গায় যে অবস্থান গড়ে তুলেছে তা কখনোই সহজ ছিল না। অনেক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে এখানেও লড়াই করতে হয়েছে। বিশেষ করে ব্রুকলীন ওজোন পার্কে জীবনপণ লড়াই করে আমাদের পূর্বসুরীরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ একটি বসবাসক্ষেত্র গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, আজ এই আমেরিকায় বসে আমরা যখন জয় বাংলাদেশ শ্লোগান তুলছি, একইসঙ্গে আমাদেরকে ‘জয় আমেরিকা’ শ্লোগানও তুলতে হবে। মুসলিম তথা যেকোনো সভ্য মানুষ কোনোদিন বেঈমান হতে পারে না। অকৃতজ্ঞ হতে পারে না। আমরা আমেরিকার কাছে ঋণী। এই ঋণ অকপটে স্বীকার করতে হবে।

আবু জাফর মাহমুদ তার মানব সেবা ও হোম কেয়ার সেবা সূচনা গল্প সম্পর্কে বলেন, আমার কাছে প্রথম এটি ব্যবসা হিসেবে এসেছিল। তখনই আমার মনে হয়েছে আমার জন্মভূমির সামাজিক প্রেক্ষাপট। মনে হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট। সেখানে ভালোবাসার আলিঙ্গন যেমন ছিল, একইভাবে ছিল বিদ্রোহ ও যুদ্ধ। ছিল স্বাধীনতার জন্য জীবনের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার বিষয়। এই দৃশ্যগুলোই সেলুলয়েডের মতো আমার সামনে এসেছে। তখনই আমি মনস্থির করি, এটি ব্যবসা নয়, এই হোমকেয়ার হচ্ছে সেবা। এমন কোনো সেবা আমরা কেউ দেখিনি, যেখানে ভালোবাসা নেই। এমনকি আমাদের দেশের বস্তিতেও ভালোবাসার কোনো কমতি নেই। মমতার কোনো অভাব নেই। তিনি বলেন, জীবন ও বাস্তবতার শিক্ষাগুলোই আমাদের জীবনের পাথেয়। প্রেস – বিজ্ঞপ্তি

সাথী/পরিচয়

শেয়ার করুন