নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ২৮শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিপল আপের ডেমোক্র্যাট প্রাইমারি ইলেকশন ক্যাম্পেইনে মানুষের বিপুল সাড়া

অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে নতুন দাবি তুললেন ডেমোক্রেট নেতা স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪ | ০৪:০২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ | ০৪:০২ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে নতুন দাবি তুললেন ডেমোক্রেট নেতা স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

শিক্ষা-স্বাস্থ্য আবাসন কিংবা কর্মসংস্থান,সবক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বসবাসরতবাংলাদেশী, সাউথ এশিয়ান তথা সকল কমিউনিটির অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস পিপল আপআপ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তার মতে, মার্কিন সরকার দেশে, প্রবেশাধিকার সহজীকরণ করলেও বিপুল জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকারনিশ্চিত করতে পারেনি।

গত ১৪ জুন শুক্রবার, নিউইয়র্কে বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটিতে তাদেরভোটাধিকার বিষয়ে সচেতন করতে জ্যাকসন হাইটস ডাইভার্সিটি প্লাজায়অনুষ্ঠিত হয় ডেমোক্রেট ইলেকশনসমাবেশ। পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেসপিপল আপ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের আহ্বানে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেননিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজরোহাস, অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা, কাউন্সিল মেম্বার শেখর কৃ্ষ্ণানসহ বেশকয়েকজন ডেমোক্রেট প্রার্থী। এছাড়া, এই আয়োজনে স্যার ড. আবু জাফরমাহমুদের সমর্থনে নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেমোক্রেট সমর্থকরাউপস্থিত হন। উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির সকলসাংবাদিক, সম্পাদক ও গণমাধ্যম কর্মীরা।

নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশীসহ দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটিকে ডেমোক্রেটিকপার্টিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ। সমাবেশে, আমেরিকার স্বার্থ সুরক্ষার সর্বোচ্চ অবদানের ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনেডেমোক্রাটদের পক্ষে গণজাগরণের কথা তুলে ধরেন তিনি। তুলে ধরেন পিপলআপের অভিযানের নানা দিকও। বলেন, আমেরিকায় যত মানুষ বসবাস করেনতারা নিবন্ধিত হোক বা নিবন্ধন বহির্ভূত হোক, সবার স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে।তাদের সবাইকে হেলথ কেয়ার সার্ভিস দিতে হবে। তিনি বলেন, যাদের আমেরিকায়প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাদের বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আবুজাফর বলেন, আমেরিকায় যারা বসবাস করেন তারা প্রত্যেকে পরিশ্রম করে এদেশ নির্মাণ করেন । যারা আন-ডকুমেন্টেড, যাদের টাকা পয়সা নাই তাদের কমটাকা পারিশ্রমিক দেয়, এই সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমেরিকা গড়ার সুযোগ হাতিয়েনিচ্ছে । এদের বৈধতা দিতে হবে, এদের নাগরিক হওয়ার সুযোগ দিতে হবে ।তাদের কাগজপত্র দিতে হবে স্থায়ী বসবাসের জন্য।

স্যার আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষার্থী যারা তারাগবেষণা করবে, ওদেরকে স্বাধীনতা দিতে হবে, স্বাধীন মতামতের সুযোগ দিতেহবে। তাদের গ্রেফতার করা চলবে না। তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা চলবে নাজানিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকায় যেসব শিক্ষার্থী আসে তারা সবাই মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আসে। তাদেরকে এদেশে পড়াশোনা শেষ করে এদেশ থেকে পাঠিয়ে না দিয়ে এদেশে থাকার ব্যবস্থাটি নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিকত্ব দিতে হবে। তাহলে তাদের মাধ্যমে আমেরিকাও লাভবান হবে।

ড. আবু জাফর জানান, এ দেশে মানুষ আছে, মানুষ আসে, বিভিন্ন জাতি থেকেএসেছে । তারা যাতে সহজভাবে যাবে জীবন চালাতে পারে সেভাবে আবাসনেরব্যবস্থা করতে হবে। এরই মধ্যে সরকার বাড়ির দাম বাড়িয়েছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ানোহয়েছে।

তিনি বলেন, ছাত্র- ছাত্রীদের মধ্যে এবং প্রতিটি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের মধ্যেদেশপ্রেম বাড়াতে হবে। প্রতিটি জনগণের দেশপ্রেম বাড়াতে হবে, দায়িত্ববোধবাড়াতে হবে। আমরা আমাদের সন্তানদের প্রথম শ্রেনীর দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়েতুলতে চাই। এখানে অবাধে ক্ষতিকর মাদক বিক্রি হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে ধ্বংসকরার জন্য সুযোগ দেয়া হচ্ছে সুতরাং এ মাদক আর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরি দিতে হবে। এদের ট্রেড ইউনিয়নকরার অধিকার থাকতে হবে। ছোট খাট ব্যবসা যারা করছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যারাতাদের রাষ্ট্র থেকে তহবিল দিতে হবে। বলেন, আমরা সবাই ডেমোক্র্যাট, আমাদেরডেমোক্রেটদের সমর্থন করতে হবে।

স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, এই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষেরউপস্থিতি প্রমাণ করে , ডেমোক্রাটদের প্রতি সমর্থন ও ভালবাসা। এখন আমাদেরপ্রমাণ করতে হবে, আমি যে মানবিক অধিকারের কথা জানিয়েছি এটার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ব্যালট বক্সে ভোট দিয়ে সঠিক প্রার্থী নিবার্চনের মাধ্যমে । এমনকাউকে ভোট দেওয়া যাবে না সে প্রেসিডেন্ট হোক আর যাই হোক । যে ক্ষমতায়আসলে এই আন্দোলনকারী ছাত্রদের এ দেশ থেকে বের করে দেবে বলেছে। তাকেভোট দেয়া যাবে না, যে ক্ষমতায় আসলে মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি বাতিলকরে দেবে বলেছে । তাকে ভোট দেয়া যাবে না যে ক্ষমতায় আসলে সবগুলোমুসলীম দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সর্ম্পক বাতিল করে দেবে বলেছে। বাইডেনসহসকল ডেমোক্রেট যারা আপনার আমার প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের ভোট দেয়াউচিত বলে ও জানান তিনি।

নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ রোহাস বলেন , এই মুহূর্তেবাংলাদেশি ভাই-বোনদের জন্য, যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষত নিউইয়র্কে বসবাসকারী দক্ষিণএশীয় দেশগুলোর ভাই-বোনদের আমি সম্মানিত বোধ করছি। আমি এরআগেও জ্যাকসন হাইটেসর এই ডাইভারসিটি প্লাজায় এসেছি আমাদের বিভিন্নদাবি দাওয়া নিয়ে, আশা নিয়ে । এটি সত্যি সৌভাগ্যের বিষয় যে, ড. আবু জাফরমাহমুদের সমর্থন ছাড়া এখানে এতো জমায়েত সম্ভব হতো না।

নিউইয়র্ক অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা বলেন, কুইন্স অধ্যুষিত জ্যাকসনহাইটস, উড সাইড, এলমহার্স্টে বসবাসরত মানুষদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমিসৌভাগ্যবান যে প্রাইমারি ইলেকশনের এই দৌড়ে আমি নেই । কিন্তু আমরা জানি, সামনের দিনগুলো অমসৃণ আমাদের কষ্ট করতে হবে আরো । আমরা আজএখানে ডেমোক্রেটদের জয়ী করার প্রত্যয়ে একসাথে হয়েছি তারপরও বলবোসঠিক মানুষকে নিবার্চনে জয়ী করার জন্যও আমরা একত্র হয়েছি।

নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল মেম্বার শেখর কৃ্ষ্ণান পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেসকেধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের এই যাত্রায় নিউইয়র্ক সিটির সকলঅফিসগুলোতে আরো সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।

১৫ জুন ডেমোক্রেট প্রাইমারি ইলেকশনের অগ্রিম ভোট শুরু হয়েছে। চলবে ২৩জুন পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভোট ২৫ জুন। অনুষ্ঠানে কুইন্স কাউন্টি মেম্বার হিসেবেব্যালটভূক্ত স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদসহ সকল প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়ারজন্য ডমোক্রেটদের প্রতি আহ্বান জানান উপস্থিত নির্বাচিতডেমোক্রেট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে কংগ্রেস মেম্বার আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ এর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। জরুরি দাপ্তরিক কাজের ব্যস্ততায় তিনি আসতে না পারলেও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার নির্বাচনী প্রচারণা দলের কর্মকর্তা ও সদস্যরা। অনুষ্ঠান স্থলে ছিল নির্বাচনী স্টল। সেখানে তারা আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ (এওসি)’র পক্ষে নির্বাচনী প্রচারপত্র ও অন্যান্য উপহার সামগ্রি বিতরণ করেন। পরে তারা সমাবেশের আয়োজক পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে

শেয়ার করুন