নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য শরণার্থীদের স্পন্সর করতে পারবে মার্কিনিরা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ | ০১:২৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ | ০১:২৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য শরণার্থীদের স্পন্সর করতে পারবে মার্কিনিরা

যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের জন্য উদ্বাস্তুদের সরাসরি স্পন্সর বা পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারবে মার্কিনিরা। এক্ষেত্রে মার্কিনিদের গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন এই প্রোগ্রাম শুরু হতে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন কয়েকজনের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন এই কর্মসূচির অধীনে আমেরিকানদের গ্রুপ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের জন্য উদ্বাস্তুদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে সক্ষম হবে বলে বিষয়টির সাথে পরিচিত তিনজন ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেছেন। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বাস্তুদের প্রবেশ আরও জোরদার করতে পারে এবং সরকারি খরচ কমাতে পারে।

রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এই গ্রোগ্রামকে ওয়েলকাম কর্পস বলা হবে। পাইলট এই প্রোগ্রামের অধীনে কমপক্ষে পাঁচ জনের গ্রুপ সরকার কর্তৃক তাদের নির্ধারিত শরণার্থী প্রতি ন্যূনতম ২ হাজার ২৭৫ মাকিন ডলার সংগ্রহ করতে পারবে বলে একজন ব্যক্তি বলেছেন।

এছাড়া পৃষ্ঠপোষক গোষ্ঠীগুলোকেও ব্যাকগ্রাউন্ড চেক পাস করতে হবে এবং একটি সহায়ক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, এই কর্মসূচির লক্ষ্য হবে ২০২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার উদ্বাস্তুর জন্য মার্কিন পৃষ্ঠপোষক খুঁজে বের করা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এই অর্থবছর শেষ হবে।

রয়টার্স বলছে, উদ্বাস্তুদের জন্য স্বতন্ত্র এই স্পনসরশিপ প্রোগ্রাম কানাডায় ব্যবহৃত মডেলের অনুরূপ। এটি সুরক্ষা চাওয়া বিদেশিদের সহায়তা করার জন্য আমেরিকানদের সুযোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার একটি অংশ।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি এন্ট্রি প্রোগ্রাম চালু করেছিলেন বাইডেন। মানবিক সহায়তা কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় গৃহীত ওই পদক্ষেপের অধীনে প্রতি মাসে কিউবা, নিকারাগুয়া, হাইতি ও ভেনেজুয়েলা থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত অভিবাসী নেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটি।

তবে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ইচ্ছুক অভিবাসীদের শর্ত দেওয়া হয় যে, তাদের মার্কিন স্পন্সর থাকতে হবে এবং আকাশপথে আসতে হবে।

মার্কিন প্রশাসন আফগান ও ইউক্রেনীয়দের আনার জন্য এই ধরনের প্যারোল ব্যবহার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সহায়তার জন্য স্পন্সর প্রোগ্রামগুলো চালানো হয়ে থাকে। অবশ্য সর্বশেষ এই প্রোগ্রামের বিষযে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

রয়টার্স বলছে, ইউ.এস. রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসবে ওয়েলকাম কর্পস প্রোগ্রাম। আর রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামটি জাতিসংঘ এবং মার্কিন দূতাবাস থেকে সুপারিশ গ্রহণ করে থাকে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থী আনার একটি সীমা নির্ধারণ করেছেন। তবে প্রোগ্রামের তথ্য অনুসারে- গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অর্থবছরে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৬ হাজার ৭৫০ জন এসেছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের প্রবেশ ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছিল। মূলত শরণার্থীদের নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে চিত্রিত করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও শরণার্থীদের আসা এখনও ট্রাম্প আমলের আগের স্তরে ফিরে যায়নি।

পুনর্বাসনের প্রয়োজন এমন লোকদের চিহ্নিত করে থাকে রিফিউজপয়েন্ট নামক একটি সংস্থা। এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সাশা চ্যানফ বলছেন, ১৯৮০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন শরণার্থী প্রোগ্রামের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে এই স্পনসরশিপগুলো।তার ভাষায়, ‘এটি আমেরিকানদের নতুন উপায়ে এই কাজে সংশ্লিষ্ট হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে।’

শেয়ার করুন