গত ৬ জুন মঙ্গলবার বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের গোল্ডেন এজ পার্টি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশী অর্গানাইজেশন্স অব নর্থ আমেরিকা-ফোবানা’র সংবাদ সম্মেলনে ‘চেয়ারম্যান দাবী’-কে কেন্দ্র করে ব্যাপক হট্টগোল, বাক-বিতন্ডার
পর আলোচনার মাধ্য মে সঙ্কট সমাধানে সম্মত হয়েছে ষ্টিয়ারিং কমিটি নিয়ে বিবদমান দুই পক্ষ। ষ্টিয়ারিং কমিটির সাবেক চেয়ারম্য ান আলী ইমাম শিকদার ও সাবেক ও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদ শাহনেওয়াজের আহুত সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিক হাজির হন ষ্টিয়ারিং কমিটির বর্তমানচেয়ারম্য ান গিয়াস আহমেদ ও তাঁর সমর্থকরা। গিয়াস আহমেদ জানান সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজের আমন্ত্রণেই তাঁরা এসেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আলী ইমাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন এরপর লিখিত বক্তব্য রাখেন শাহ নেওয়াজ।
বর্তমান চেয়ারম্য ান গিয়াস আহমেদ অনুষ্ঠানে আসার পর কে এখন চেয়ারম্য ান এমন প্রশ্নের উত্তরে সাবেকচেয়ারম্য ান আলী ইমাম শিকদার বলেন তিনি চেয়ারম্যান, সাথে সাথেই বর্তমান চেয়ারম্য ান গিয়াস আহমেদ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মন্ট্রিয়লে অনুষ্ঠিত গত ফোবানা সম্মেলনে তিনি ভোটাভুটির মাধ্য মে চেয়ারম্য ান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর ভাষায় মোহাম্মদ হোসেন খান ও আলী ইমাম শিকদার চক্রান্ত করে আলী ইমাম নিজেকে পুনরায়চেয়ারম্য ান দাবী করছেন এবং আরেক দফা ফোবানা ভাঙ্গার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেন। শুরু হয় তুমুল বাদানুবাদ, বাকবিতন্ডা।
এসময় গত বছর মন্ট্রিয়ল সম্মেলনের ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটির একটি সভার ডকুমেন্ট প্রদর্শন করে গিয়াস আহমেদ বলেন, আমাদের কাছে সভার ডকুমেন্ট আছে, সেখানে সভার স্বাক্ষরও রয়েছে। এতে আমি ফোবানার চেয়ারম্যান আর শাহ নেওয়াজ মেম্বার সেক্রেটারী। উল্লেখ্য, অতি স¤প্রতি গিয়াস আহমেদ আহুত এক সংবাদ সম্মেলনে ফোবানা’র উপদেষ্টা ও স্টিয়ারিং কমিটির নাম ঘোষণা করেছিলেন।
গিয়াস আহমেদ আরো বলেন, ঐক্য ও সমঝোতার স্বার্থে তাঁরা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ভাইসপ্রেসিডেন্ট এর দুটি পদও সৃষ্টি করেন।
চরম হৈচৈ আর বাক-বিতন্ডায় সংবাদ সম্মেলন প্রায় পন্ড হওয়ার পথে সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে উপস্থিত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যার সমাধানের সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ডে উইকেন্ডে আগামী ১-৩ সেপ্টেম্বর কানেকটিকাট রাজ্যে তিনদিনব্যাপী এবারের ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মাস কয়েক পুর্বে কানেকটিকাটে পরবর্তীফোবানা সম্মেলনের কনভেনর নুরুল আলম ওমেম্বারসেক্রেটারী হুমায়ুন আহমেদচৌধুরীর নিকটফোবানা সম্মেলন আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সম্মতিসূচক পত্র হস্তান্তর করেছিলেন বর্তমান ষ্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্য ান গিয়াস আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ বলেন, ফোবানা হচ্ছে উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশী জন মানুষের বহু বছরের একটি পুরোনো এবং ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। প্রতিটি সংঘের কিছু কিছু সাংগঠনিক কর্মকান্ড থাকে। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই দ্বায়ভার থেকে সরে দাঁড়াতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে ফোবানারও অনেক কর্মকান্ড আছে। নেতৃত্বে থেকে আমরা এই সব দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারিনা। সেই দ্বায়ভারের কারণেই আমাদের আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলন।অভিষেকের আত্মপ্রচারের মতো ফোবানা ব্যক্তির পূজা করেনা।ফোবানা বাংলাদেশীদের সমষ্টিগত সংস্কৃতির বাহন।
শাহ নেওয়াজ আরো বলেন, ফোবানা একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হলেও গান-বাজনা সেমিনার সিম্পোজিয়ামের মধ্যই তা সীমাবদ্ধ নয়। করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ আক্রমণের কঠিন সময়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা জনমানুষের সেবায় জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েছিল। আমরা নিউইয়র্কে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে চেষ্টা করেছি জনমানুষের পাশে থাকতে। যখন মানুষ করোনা ভাইরাসের ভয়ে ঘর থেকে বাহিরে বের হতে সাহস পায়না,তখন ফোবানার নেতা-কর্মীরা সাহায্যের ডালি নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়েছেন।
তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকায় পাল্টাপাল্টি ফোবানা কনভেনশন, ফোবানার বিভক্তি/বিভাজন নিয়ে কমিউনিটির কাছে সব সময় বিব্রত বোধ করি। কমিউনিটি এই বিভক্তি ও বিভাজন নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত ও অন্য স¤প্রদায়ের কাছে বিব্রত।এই ফোবানার দীর্ঘ পথে ফোবানা বিভক্ত হয়েছে আবার ঐক্যবদ্ধ ফোবানা কনভেনশনও হয়েছে। ফোবানা ও আমাদের দূর্ভাগ্য যে, শেষ পর্যন্ত ফোবানা এবং আমাদেরকে বিভক্তি এবং বিভাজনের ফোবানা নিয়েই চলতে হচ্ছে। শাহ নেওয়াজ বলেন, আমরা আগেও মনে করেছি এখনও মনে করি আলাদা আলাদা ফোবানা করে যেতে পারবো, কিন্ত কোন দিনই বিভক্ত থেকে ফোবানার যৌক্তিক পরিনতিতে পৌঁছাতে পারবো না। শিঘ্রই একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে ফোবানার ঐক্য পুনস্থাপিত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফোবানা’র স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ সহ ফোবানার বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে মোহাম্মদ হোসেন খান, নিশান রহীম, খন্দকার ফরহাদ, কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, ওয়াহিদ কাজী এলিন, সৈয়দ এনায়েত আলী, কাজী আশরাফ হোসেন (নয়ন), মিজানুর রহমান ভূইয়া মিলটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
