নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন নিয়ে কথা বলা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় : যুক্তরাষ্ট্র

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৩ | ০২:৩৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ | ০৩:০৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
নির্বাচন নিয়ে কথা বলা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় : যুক্তরাষ্ট্র

নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলা মানে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি কেউ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে কথা বললেও ওয়াশিংটন সেটাকে স্বাগত জানায় বলেও জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার ঢাকা সফরকালে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েও কথা হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।

সোমবার (১০ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ওই সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে (বাংলাদেশের) অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে রাশিয়া, চীন ও ইরানের দাবি সামনে আনেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় ইচ্ছাকে হস্তক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছে রাশিয়া, চীন এবং ইরান। আমরা গত সপ্তাহে মস্কো ও চীনের কাছ থেকে খুব কঠোর সমালোচনা দেখতে পেয়েছি এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টিভি নেটওয়ার্কেও এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে – যদিও ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) থেকে কোনো বিবৃতি দেখা যায়নি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?

জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি জানি না কেন কেউ আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানাতে আপত্তি করবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও বারবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তার নিজের অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বন্ধু এবং অংশীদার হিসাবে এটি আমাদের একটি ইচ্ছা। আমরা পৃথকভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না; আমরা প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি।

তিনি আরও বলেন, আমি আগে অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম, অন্যান্য দেশ যখন আমাদের সাথে আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া উত্থাপন করে তখন আমরা এটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি না। আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার একটি সুযোগ হিসাবে সেই আলোচনাগুলোকে স্বাগত জানাই এবং আমরা জানি না কেন অন্য কোনো দেশ এ বিষয়ে আপত্তি করবে।

পরে ওই সাংবাদিক আবার প্রশ্ন করেন, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করতে চলেছেন। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ তৈরি করতে তারা কি ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ এবং বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হবে? কারণ বাংলাদেশের মানুষ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করছে।

জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ১১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে সফর করবেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, শ্রম সমস্যা, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইসহ মানবিক উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে তিনি সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন।

মিলার আরও বলেন, এছাড়াও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংগঠন করার অধিকার, শ্রম অধিকার এবং সুশাসন ও গণতন্ত্রের বিষয়ে সফরে উজরা জেয়া নাগরিক সমাজের নেতাদের সাথেও কথা বলবেন।

উল্লেখ্য, গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার, শ্রম সমস্যা, মানবপাচার, বাণিজ্য এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল। বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বাধীন এই দলটি চারদিন ঢাকায় অবস্থান করবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় আসবেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। এই সফরে তার সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশে আসছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার এশিয়া দপ্তরের উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলী কৌর।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, উজরার সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অগ্রগতি, নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি ও রোহিঙ্গা সংকটের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। অপরদিকে গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার, শ্রম সমস্যা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং মানবপাচারে গুরত্ব দেবে ওয়াশিংটন।

শেয়ার করুন