নিউইয়র্ক     রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এস্টোরিয়ার ‘জালালাবাদ ভবন’ জালালাবাদ এসোসিয়েশন অফ আমেরিকার সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্রয় করা হয়েছে-সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৮:৫০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
এস্টোরিয়ার ‘জালালাবাদ ভবন’ জালালাবাদ এসোসিয়েশন অফ আমেরিকার সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্রয় করা হয়েছে-সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল

এস্টোরিয়ার ‘জালালাবাদ ভবন’ জালালাবাদ এসোসিয়েশন অফ আমেরিকার সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্রয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল।

গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার জালালাবাদ এসোসিয়েশন অফ আমেরিকার আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান এর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ২৯ জানুয়ারী সর্বশেষ সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করে তিনি বলেন সংগঠনের সাধারণ সভায় জালালাবাদ ভবন ক্রয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভবন ক্রয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। সেই সময়ের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজ এর সম্মতিতেই সাবেক কোষাধ্যক্ষ ভবন ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন বলে সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল সাপ্তাহিক পরিচয় এর প্রশ্নের উত্তরে জানান।

ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল আরো জানান ভবন ক্রয়ের ব্যাপারে সমিতির তহবিল থেকে যে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে তার পুর্ণ বিবরণ বর্তমান কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তরকালে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম এবং কােষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলীম তা গ্রহণও করেছেন। জালালাবাদ এসোসিয়েশান অফ আমেরিকার নামে ক্রয় না করে কেন নতুন একটি কর্পোরেশন জালালাবাদ এসোসিয়েশান অফ ইউএসএ-র নামে ভবনটি ক্রয় করা হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল জানান, এদেশে যারা বিভিন্ন সংগঠন যেমন মসজিদ কিংবা সোসাইটির জন্য ভবন ক্রয় করেছেন তাঁরা জানেন প্রাথমিকভাবে ‘নন প্রফিট’ প্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়মিত মর্টগেজ পাওয়া প্রায় অসম্ভব সেহেতু ভালো ক্রেডিট এর অধিকারী অন্য কারো নামে প্রথমে ক্রয় করতে হয় এবং পরবর্তীতে ঋণ পরিশোধ হলে সেটি প্রকৃত ক্রেতার নিকট হস্তান্তর করা হয়। কম্যুনিটির অনেক মসজিদ এমনকি বিভিন্ন সংগঠনের ভবনও এ প্রক্রিয়াতেই ক্রয় করা হয়েছে। কোন প্রক্রয়ায় জালালাবাদ এসোসিয়েশান অফ আমেরিকার ভবনটি জালালাবাদ এসোসিয়েশান অফ ইউএসএ হস্তান্তর করা হবে সেটির একটি নোটারাইজড চুক্তিপত্রও রয়েছে। সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল আরো জানান জালালাবাদ ভবনের জন্য তাঁরা যে ধরনের বাড়ী খুঁজছিলেন এষ্টোরিয়ার ভবনটি সেদিক থেকে অনেক উত্তম এবং বাজার দরের চাইতে মুল্য কম হওয়ায় তাঁরা ক্রয়ের ব্যাপারে অগ্রসর হন। তিনি আরো বলেন, সদিচ্ছা থাকলে সঙ্কট সমাধান খুবই সহজ।

এসময় সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের সাথে উপস্থিত ছিলেন ময়নুল-শেফজ কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও পরবর্তীতে ‘বদরুল-মইনুল’ প্যানেল থেকে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন সংগঠনের বর্তমান কার্যকরী পরিষদ এর নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল দায়ত্বভার গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যে জালালাবাদ ভবন উপহার দেওয়া হবে সেহেতু রিয়েল এষ্টেট ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় তিনি সংগঠনের জন্য লাভজনক হতে পারে এমন একটি ভবন নিলামে ক্রয় করার চুক্তি করেন সেসময়কার সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ এর সম্মতিতে।

২০২০ সালে অনুমোদন ব্যতিরেকে সংগঠনের তহবিল থেকে আড়াই লাখ ডলার জনৈক এম এ আজিজের ‘কোর কনস্ট্রাকশন গ্রুপের’ একাউন্টে ট্রান্সফার প্রসঙ্গে সাপ্তাহিক পরিচয় এর এক প্রশ্নের উত্তরে সেসময়কার কোষাধ্যক্ষ এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি নিউ ইয়র্ক এর সাবেক সভাপতি এম এ আজিজের মালিকানাধীন ‘কোর কনস্ট্রাকশন গ্রুপ’ জ্যাকসন হা্ইটস এর ৭৩ ষ্ট্রীটে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন এবং সেখানে জালালাবাদ এসোসিয়েশানের জন্য একটি অংশ কিংবা ফ্লোর ক্রয় করা যায় কিনা এমন বিবেচনায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ৫ লক্ষ ডলারের মত পরিশােধ করলে একটি অংশ দেওয়া হবে এবং সেজন্যই ‘কোর কনস্ট্রাকশন গ্রুপের’ একাউন্টে অগ্রিম হিসেবে ২৫০০০০.০০ (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) ডলার ট্রান্সফার করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তাঁরা যখন হিসেব করে দেখলেন তাঁদের কমিটির মেয়াদকালে ‘কোর কনস্ট্রাকশন গ্রুপের’ ভবনটির নির্মাণ শেষ হবেনা, তখন তাঁরা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে অগ্রিম হিসেবে দেওয়া সমুদয় অর্থ সমিতির একাউন্টে ফিরিয়ে আনা হয়।

সংগঠনের একাউন্ট থেকে তার ব্যবসায়িক পার্টনারকে অবৈধভাবে অর্থ প্রদানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ (চেক- ১০৭) পরিমান ৫০০০ (পাঁচ হাজার) ডলার তারিখ ৩০ জুলাই ২০২ প্রসঙ্গে মইনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম তাঁকে ফোনে জানান সিকিউরিটি গার্ডদের জন্য নির্বাচন কমিশেনর অতিরিক্ত ৫ হাজার ডলার নগদ প্রয়োজন। সে অর্থ নগদ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন ময়নুজ্জামান চৌধুরী এবং সেই ৫ হাজার ডলার সংগঠনের চেক এর মাধ্যমে পরবর্তীতে তাঁকে পরিশোধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম এর সাথে তাঁর টেক্সট ম্যামেজ আদান প্রদানের রেকর্ডও তাঁর কাছে রয়েছে বলেও তিনি জানান।

মইনুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি ভবন ক্রয়ের জন্য যে জালালাবাদ এসোসিয়েশান অফ ইউএসএ গঠন করেছেন সেখানে ডিরেক্টর হিসেবে সাবেক সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজের নাম তিনি প্রস্তাব করেছিলেন। যেহেতু তাঁদের মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসছে সেহেতু তাঁরা নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষকে রাখার প্রস্তাব করেন। এ প্রসঙ্গে মইনুল ইসলাম আরো বলেন, ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে ভবনটি ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছিল এবং জুন ২০২২ এর মধ্যে ক্রয়প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং ভবনটি যাতে হাতছাড়া না হয়ে যায় সেজন্য সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিবেচনায় তাঁদের কিছু ভুল হতেও পারে। কিন্তু তাঁরা তাঁদের বিবেচনায় সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেছেন। ৩৮ বছরেও কম্যুনিটির অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্‌ সংগঠনের একটি ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান সংগঠনের সাধারণ সভায় হবে বলেও তিনি আশাবাদী।

তাঁর নিকট প্রেরিত শোকজ নোটিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যথাসময়ে রেজিষ্টার্ড এবং সার্টিফাইড ডাকে যে ঠিকানা থেকে তাঁর কিছু শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল, সে ঠিকানায় তিনি জবাব পাঠিয়ে দিয়েছেন।

শেয়ার করুন