নিউইয়র্ক     রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনাস্থার মুখে মোদি-বাইডেন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৩ | ০৭:৫০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ | ০৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
অনাস্থার মুখে মোদি-বাইডেন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন । ছবি- সংগৃহীত

মণিপুর রাজ্যের জাতিগত দাঙ্গা ইস্যুতে ক্ষোভে উত্তাল ভারত। সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে এ নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে সংসদে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। এরই মধ্যে ভারতের ক্ষমতাসীন মোদির সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে কংগ্রেস ও বিরোধীরা।

বুধবার কংগ্রেস সদস্য গৌরব গগৈর আনা অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব করলে এটি গ্রহণ করেন স্পিকার ওম বিরলা। তিনি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকদিনের মধ্যেই ভোটের তারিখ ঘোষণা করবেন তিনি।

মূলত সরকারের পতন ঘটাতে এ ধরনের ভোট হয়ে থাকে। যেমনটা হয়েছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষেত্রে। তবে ইমরানের মতো মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর কোনো শঙ্কা নেই। এছাড়া বড় কোনো সমস্যায়ও পড়বেন না তিনি। কারণ ৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জোট দল এনডিএ-এর।

নিয়ম অনুযায়ী, অন্তত ৫০ আইনপ্রণেতা এই অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন দিলে এটি লোকসভায় উঠবে। গৃহীত হলে ১০ দিনের মধ্যে সংসদের স্পিকার ভোটের দিন নির্ধারণ করবেন। ভোটে সরকারি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করতে পারে সরকার পদত্যাগ করবে।

বিরোধী দল কংগ্রেসও জানিয়েছে, মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এ অনাস্থা ভোট প্রস্তাব করেনি তারা। মূলত মণিপুর ইস্যু নিয়ে যেন মোদি বিস্তারিত আলোচনা করেন সেজন্য এটির ব্যবহার করছেন তারা।

মণিপুরে চলতি বছরের মে থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি ও উপজাতি কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে চলছে সংঘাত। এতে অন্তত ১৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, বাস্তুচ্যূত হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। সবশেষ কুকি সম্প্রদায়ের দুই নারীকে লাঞ্ছনার ভিডিও ভাইরাল হলে ইস্যুটি বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয়। তবে এবার প্রথমবারই অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হননি মোদি সরকার। এর আগে ২০১৮ সালেও অনাস্থা ভোটের মুখে পড়েছিলেন। ভোটাভোটি হলেও শেষ পযর্ন্ত সেটি বাতিল হয়ে যায়।

এদিকে, বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে বাইডেনের ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ক্ষমতা গ্রহণের তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের মুখে পড়তে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার সন্ধ্যায় এমন ইঙ্গিত দিয়ে হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি।

ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা না নিলে আমরা এর কিছুই জানতাম না। তথ্য আমাদের যেখানে নিয়ে গেছে আমরা কেবল অনুসরণ করেছি। এটি অভিশংসন তদন্তের স্তরে উন্নীত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট এমন কিছু ব্যবহার করেছেন যা আমরা রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে দেখিনি। তার পরিবারের উপকার করার জন্য সরকারি সুবিধা ব্যবহার করেছেন এবং কংগ্রেসের তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা অস্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের ঘটনা বিরল। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস, যেখানে আইন তৈরি করা হয়, তারা দেশটির প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা আছে, বেশ কিছু অপরাধের জন্যে প্রেসিডেন্টকেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া অর্থাৎ তাকে ইমপিচ করা যেতে পারে। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ঘুষ নেয়া অথবা অন্য কোন বড় ধরনের কিম্বা লঘু অপরাধ।

ইউক্রেনের প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি বুরিসমার একজন নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে অর্থ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে হান্টার লিখেছেন, আমি কাজটি নিয়েছিলাম কারণ সেখানে খুব বেশি কিছু করার ছিল না। তারা আমার ভাইয়ের দেখাশোনার জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ এবং সময় আমাকে দিয়েছিল।

তবে ঘুষের বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন জো বাইডেন।

এর আগে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের দুইবার মুখে পড়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছিল- প্রেসিডেন্ট ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টি। প্রথম অভিযোগের পক্ষে পড়েছে ৪৮টি ভোট এবং বিপক্ষে ৫২টি। দ্বিতীয় অভিযোগের পক্ষে পড়েছে ৪৭টি ভোট এবং বিপক্ষে ৫৩টি ভোট। প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ট্রাম্পকে সরাতে হলে সিনেটের ১০০ আসনের মধ্য থেকে দুই তৃতীয়াংশ ভোট দরকার হতো। সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি, ফক্স নিউজ

শেয়ার করুন