নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২২ সাল

রেকর্ড জ্বালানি তেল রফতানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
রেকর্ড জ্বালানি তেল রফতানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র

গত বছর জ্বালানি তেলের রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশ ছবি : রয়টার্স

২০২২ সালে দিনে ৩৬ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) রফতানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা এ-যাবৎকালের সর্বোচ্চ। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। খবর ইআইএ।

নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপের দেশগুলোয় রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রফতানি প্রায় বন্ধ। এ সুযোগে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে মস্কোর ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাণিজ্যের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুসারে, গত বছরের জানুয়ারিতে ইউরোপে রাশিয়ান তেলের সরবরাহের পরিমাণ ছিল ৩১ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে মাত্র ৪ শতাংশ নেমে আসে।

২০২২ সালের আগে ইউরোপ ছিল রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৃহত্তম আঞ্চলিক আমদানিকারক। ২০২১ সালেও রাশিয়া থেকে দিনে গড়ে ২৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনেছে ইউরোপের দেশগুলো। এদিকে ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত ও চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি অনেকাংশ কমে এসেছে। যার অন্যতম কারণ এ দেশ দুটো রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অন্যতম বড় বাজারে পরিণত হয়েছে। তবে ভারত ও চীনে মার্কিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি কমলেও এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের অন্য দেশগুলো বেশির ভাগই অপরিশোধিত তেলই আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

যুক্তরাষ্ট্র যত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করে তার ৪৩ ভাগই (দিনে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ ব্যারেল) যায় এ অঞ্চলে। অন্যদিকে ইউরোপে যায় দিনে প্রায় ১৫ লাখ (প্রায় ৪২ শতাংশ)। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ইইউ রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই দিন জ্বালানিটির ওপর বেঁধে দেয়া হয় প্রাইস ক্যাপ। এছাড়া নির্ধারিত দামে পেট্রোলিয়াম পণ্য বিক্রি না করলে রাশিয়ান কার্গোগুলো পরিচালনা না করতে শিপিং, বীমা ও পুনঃবীমা কোম্পানিগুলোর ওপর নির্দেশনা দেয় পশ্চিমারা, যা কার্যকর হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি। ফলে সামনের দিনগুলো ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি অব্যাহতভাবে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ডলারের মানের তারতম্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিশন আরোপিত ক্রমবর্ধমান সুদহারের মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজার ব্রেন্টের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য চলতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ বেড়েছিল। সম্প্রতি ৬৩ সেন্ট বা দশমিক ৮ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৮ ডলার ৬৪ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৪৪ সেন্ট বা দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৭৩ ডলার ৯৩ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এর মূল্য ৭ শতাংশ বেড়েছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড করলেও চলতি বছর জ্বালানি তেল রফতানিতে ভালো অবস্থানে রাশিয়া। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর ইইউর ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। তবে এর আগেই রাশিয়া বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল, বিশেষ করে এশিয়ায় জ্বালানি তেল ও ভিজিওর চালান শুরু করেছে।

রেফিনিটিভের তথ্যানুযায়ী, মার্চে রাশিয়ার সমুদ্রবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় জ্বালানি তেল ও ভিজিওর সরবরাহ ১১ লাখ টন ছাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও ভিজিওর রফতানি ২০২২ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রফতানির পরিমাণ ৪৫ লাখ টনে পৌঁছতে পারে।

শেয়ার করুন