নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুখোমুখি বাইডেন-পুতিন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
মুখোমুখি বাইডেন-পুতিন

জো বাইডেন ও পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর উপলক্ষে সফরে ইউক্রেনের পর পোল্যান্ড পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সোমবার ইউক্রেন থেকে ট্রেনে চড়ে তিনি ওয়ারশে পৌঁছেন। যুদ্ধের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওয়ারশের ঐতিহাসিক রয়্যাল ক্যাসেলে বক্তব্য দেবেন তিনি। বক্তব্যে তিনি যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের উদ্দেশে কড়া বক্তব্য দেবেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। পোলিশ নিউজ এজেন্সি পিএপির বরাত দিয়ে এএফপি এ খবর দিয়েছে।

ইতোমধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন জাতির উদ্দেশে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি ওয়াশিংটন-মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাস চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছেন। যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার জন্য তিনি পশ্চিমাদের দায়ী করেছেন। পাশাপাশি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে যুদ্ধ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন দুই প্রেসিডেন্ট।

আরোও পড়ুনপশ্চিমাদের পরমাণু হামলার হুমকি দিলেন 

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওয়ারশে বাইডেন তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করবেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দীর্ঘদিন থাকবেন এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের পক্ষে যুদ্ধাস্ত্রসহ সবরকম সহায়তা দেবেন। পুতিন ও রাশিয়ার জনগণের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেবেন বাইডেন।

এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বাইডেন পূর্ব ইউরোপ সফরে পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদার সঙ্গে দেখা করবেন। ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালির নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ আগামী ৩ মার্চ ওয়াশিংটন সফরে থাকবেন বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

বাইডেন গত সোমবার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ইউক্রেনকে অভয় দিয়ে আরও যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহের জন্য আশ্বস্ত করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন মারিনস্কি প্যালেসে বাইডেন বলেন, এক বছরের যুদ্ধে কিয়েভ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, শক্তিশালী হয়েছে গণতন্ত্র।

এদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, বাইডেনের সফর সম্পর্কে ওয়াশিংটন কয়েক ঘণ্টা আগেই রাশিয়াকে অবহিত করেছিল। আধুনিককালে একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য যুদ্ধরত দেশের রাজধানী পরিদর্শন করা অভূতপূর্ব। বাইডেন যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে হাঁটছিলেন, তখন বাতাসে এয়ার সাইরেনের শব্দ গর্জে ওঠে। এই সাইরেন ছিল ইউক্রেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সংকেত।

গতকাল চীন জানিয়েছে, দেশটি যুদ্ধ নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে, এমনকি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে সংশ্নিষ্ট দেশগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের থেমে যাওয়ার সময় এসেছে। চীনের ওপর দোষ চাপানো বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, মার্কিন দাবির পরে বেইজিং মস্কোতে অস্ত্র পাঠানোর কথা বিবেচনা করছে। চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই মঙ্গলবার আলোচনার জন্য মস্কোতে পৌঁছান। সফরে তিনি পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নরওয়ের পর্যবেক্ষণ সংস্থার সর্বশেষ তথ্যমতে, সংঘাতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজার রাশিয়ান সৈন্য ও ইউক্রেনের ১ লাখ সেনা আহত বা নিহত হয়েছে। অপর একটি পশ্চিমা সূত্র জানিয়েছে, উভয়পক্ষে দেড় লাখ করে হতাহত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অন্য যে কোনো ন্যাটো দেশের তুলনায় অনেক বেশি সহায়তা দিয়েছে। সামরিক, অর্থনৈতিক, মানবিক এবং অন্যান্য মার্কিন সাহায্য এখন ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
এমইউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন