গ্রিল ঘেরা প্যারাপেটে, ঘেরাটোপ বারান্দা ও ঘরে
নিপুন এক নারীকে দেখি অর্কিড লতা দোলে
জ্বর পোড়া চন্দ্রমুখী ফুল।
বিকেলের ছাদে বিদ্যুৎবিহীন তারে ঝুলন্ত জর্জেট
মরা শালিকের মতো দুঃখবাদী শাড়ি
নীল আকাশকে ডাকে।
রোজ এক নিপুন নারীকে দেখি
পারস্যের হাতে বোনা সিল্ক কার্পেটে বার্বি ডল।
পায়ের পাতায় ফোঁটায় নন্দন ফুল, ঘুর্ণাবর্ত নাভিমূল।
জিভের ক্রাচে বুড়ো শামুকের শিকারভূমি
ছুঁড়ে দেয় কোবরার মতো বিষের ফিনকি—
বেগানা দর্জা, জানালায় বাজে তার গান্ধার গান—
মহুয়ার ঢোল ডাকে আয় — কিতাবের তালা ভেঙে আয়
ঝাঁপ দে রাত্রির চাদরে রুদ্র’র মুদ্রা নাচে।
রোদদাহ, বৃষ্টির বিপুল শরবিদ্ধ বাকলের বুকে
যেভাবে খোদাই করে যায় ছাপ সময়ের দস্তখত,
তেমনি পড়েছে দাগ ঘাসরং জলের নিতলে
গোপন নদী বহে অন্তরজাত।
রোজ এক ত্রস্ত নারীকে দেখি
দিনারের থাবায় বিকোয় বিকারের রাত;
কাজ শেষে অন্নপূর্ণা ছোটে দুহাত বোঝাই কালাভূণা —
কই আছিলি মাগী, ভাতারে জিগায়!
বেল্টের চাবুক আর লালামাখা অক্ষম কামড়কে সে ভাবে প্রেমের আয়াৎ।
প্রখরস্রোত ইস্টরিভার ছোটে— তীরের মতো ক্ষিপ্র পা
একঝাঁক নারীকে দেখি —অর্কিড নয়, ঋতু লগ্নজিৎ —
ইউক্যালিপ্টাস গাছের মতো ঋজু পায়ের পাতায়
বাজে ফলিয়েজ মর্মর, অরণ্য এস্রাজ।
রোজ এক নারীকে দেখি পাতাল ট্রেনের স্ট্র্যাপহ্যাঙার
ঝাঁকুনির বিরুদ্ধে ছোঁড়ে স্বপ্নের তীর
চোখের মানচিত্রে জাগে স্যাঁতসেতে অমানবিক চর
ফিরে যায় তীর তূণের বিবরে, পায় না সে হরিণীরে।
রোজ এক নারীকে দেখি কৃতি স্বননের মতো কোমর নদী
সাজানো ল্যান্ডস্কেপ নয়— অঙ্গে অঙ্গে বহি ‘নিরন্তর অনন্ত’
পুরুষ প্রকৃতি।