নিউইয়র্ক     বুধবার, ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাশিয়াকে ধ্বংসে বিশ্বযুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে পশ্চিমারা : পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৬:২৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
রাশিয়াকে ধ্বংসে বিশ্বযুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে পশ্চিমারা : পুতিন

ইউক্রেনে রাশিয়ার বছরব্যাপী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈশ্বিক যুদ্ধে মস্কোকে পরাজিত করা যাবে, এমন ভুল বিশ্বাসে ভর করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সংঘাতের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দু’দিন আগে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। রাশিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজাতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাশিয়া সামনের কাজগুলো সাবধানে এবং ধারাবাহিকভাবে সমাধান করবে।

আরোও পড়ুন। রাশিয়াকে জানিয়েই ইউক্রেনে গেছেন বাইডেন

তিনি বলেছেন, রাশিয়া যুদ্ধ এড়ানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেছিল। কিন্তু পশ্চিমা-সমর্থিত ইউক্রেন রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের এই দ্বীপ ভূখণ্ড দখলে নেয় রাশিয়া। পুতিন বলেন, পশ্চিমারা বিশৃঙ্খলা আর যুদ্ধের বীজ বপন করে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বোতল থেকে ভূতকে বের করে দিয়েছে।

‘ইউক্রেনের জনগণ কিয়েভ সরকার ও তার পশ্চিমা শাসকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে; যারা রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে এই দেশটিকে কার্যকরভাবে দখল করেছে।’ রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা স্থানীয় সংঘাতকে বৈশ্বিক সংঘর্ষে রূপান্তর করতে চায়, আমরা এটা বুঝতে পারি এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাব।’

তিনি বলেন, ‘রাশিয়াকে পরাজিত করা অসম্ভব।’ ৭০ বছর বয়সী ক্রেমলিনের এই প্রধান বলেন, রাশিয়া কখনই তার সমাজকে বিভক্ত করার পশ্চিমা প্রচেষ্টার কাছে নতি স্বীকার করবে না। বেশিরভাগ রাশিয়ানই যুদ্ধ সমর্থন করছেন বলে জানান তিনি।

গত বছর সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখলে নেওয়ার পর রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ক্রেমলিন থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরের গোস্টিনি ডভোর প্রদর্শনী কেন্দ্রে মঙ্গলবার যখন পুতিন এই বিষয়ে কথা বলেন, তখন কেন্দ্রে উপস্থিত অতিথিরা দাঁড়িয়ে তাকে অভিবাদন জানান।

এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের সম্মান জানাতে গোস্টিনি ডভোর প্রদর্শনী কেন্দ্রে উপস্থিত আইনপ্রণেতা, সেনা কর্মকর্তা, গোয়েন্দা প্রধান এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাদের দাঁড়াতে বলেন। যুদ্ধে নিহতদের পরিবারের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ‘ইউক্রেন যুদ্ধ’ ক্রেমলিন প্রধান ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য বৃহত্তম বাজি হিসাবে দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতো পশ্চিমের অন্যান্য নেতারা বলছেন, এই বাজিতে পুতিনকে অবশ্যই হারতে হবে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রুশ সামরিক বাহিনী তিনটি বড় যুদ্ধক্ষেত্রে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। তারপরও ইউক্রেনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বছরব্যাপী এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

পুতিন বলেছেন, উদ্ধত পশ্চিমের বিরুদ্ধে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমারা রাশিয়াকে ভেঙে ফেলতে এবং এর বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি করতে চায়। যদিও ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রুশ প্রেসিডেন্টের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।
পরিচয়/এমউএ

শেয়ার করুন