নিউইয়র্ক     সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে আড়াই সেকেন্ডের নিরাপত্তা গলদ প্রাণ কাড়ে শিনজো আবের

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২২ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
যেভাবে আড়াই সেকেন্ডের নিরাপত্তা গলদ প্রাণ কাড়ে শিনজো আবের

ঘাতক প্রথম গুলি ছোড়ার পর দ্বিতীয় গুলির মাঝে ব্যবধান ছিল আড়াই সেকেন্ড। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দ্বিতীয়টি ঠিক পিট বরাবর ঢুকে যায়। আর এতে মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। কিন্তু প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরপরই যদি দেহরক্ষীরা শিনজো আবের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করতেন অথবা তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতেন তাহলে প্রাণ হারাতে হতো না তাকে।

জাপানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির আট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। জাপানি এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গত ৮ জুলাই দ্বিতীয় গুলি থেকে আবেকে রক্ষা করতে না পারার ব্যর্থতা জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী হত্যাকাণ্ডে ধারাবাহিক নিরাপত্তা ত্রুটি ছিল বলে মনে হয়।জাপানে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা প্রায় বিরল এবং দেশটির রাজনীতিকরা হালকা নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে একেবারে জনগণের কাছে গিয়ে প্রচারণা চালান। সেই জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নারায় এক ব্যক্তি বাড়িতে তৈরি অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে আবেকে হত্যা করেন; যা দেশটির জনসাধারণকে হতবাক করে দিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাসহ জাপানি কর্তৃপক্ষ আবের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল বলে স্বীকার করেছে এবং পুলিশ বলছে, তারা এই ঘটনা তদন্ত করছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলের ছয়জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছে এবং ঘাতকের গুলি ছোড়ার আগে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত ধারণা পেতে বিভিন্ন দিক থেকে ধারণ করা একাধিক ভিডিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে।

ফুটেজ দেখা যায়, ৬৭ বছর বয়সী আবে একটি সড়কের ট্রাফিক আইল্যান্ডে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছেন। কিন্তু তার যে নিরাপত্তা দল ছিল তাদের আকস্মিক হামলার বিষয়ে তেমন কোনও প্রস্তুতি দেখা যায়নি। কোনও ধরনের তল্লাশির মুখোমুখি হওয়া ছাড়াই হামলাকারী ৪১ বছর বয়সী তেতসুয়া ইয়ামাগামি বাড়িতে তৈরি একটি অস্ত্র নিয়ে আবের কয়েক মিটারের মধ্যে চলে আসেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি এদিক-সেদিক তাকিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। আবের বক্তৃতা শুনে হাততালিও দেন।

জো বাইডেন যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন তখন তাকে নিরাপত্তা দিয়েছিলেন গ্লোবাল থ্রেট সলিউশনের প্রধান কেনেথ বোম্বাস। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পেছন দিকে একেবারে বাধাহীনভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন হামলাকারী। দেহরক্ষীদের উচিত ছিল সেটি দেখা এবং তাকে বাধা দেওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্রের এলিট বাহিনী নেভি সিল এবং গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক কর্মকর্তা জন সল্টিস। তিনি বর্তমানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংস্থা প্রোসেগারে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, আবের চারপাশে দেহরক্ষীদের ‘নিরাপত্তার এককেন্দ্রিক বলয়’ ছিল বলে মনে হয়নি। এমনকি ভিড়ের মধ্যে জনসাধারণের ওপর তাদের কোনও ধরনের নজরদারিও ছিল না।

শেয়ার করুন