নিউইয়র্ক     সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনের ল্যাব নয়, বাজার থেকেই হয়েছিল করোনার বিস্তার

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২২ | ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২২ | ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
চীনের ল্যাব নয়, বাজার থেকেই হয়েছিল করোনার বিস্তার

করোনা ভাইরাসের সঙ্গে আড়াই বছরেরও বেশি সময় পার করে দিয়েছে মানুষ। এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী ৬৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসের মোকাবিলায় বাজারে এসেছে টিকা, মুখে খাওয়ার ওষুধ। তবে এখনো ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে গবেষকেরা ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন। একটা পর্যায়ে তা রাজনৈতিক বিষয়েও পরিণত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ভাইরাসটির উৎপত্তির জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করতে থাকে।
এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত দুই নতুন গবেষণায় ভাইরাসটি চীনের উহানের ল্যাব থেকে নয় বরং বন্যপ্রাণীর বাজার থেকেই ছড়িয়ে বলে দাবি করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসটি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের ‘উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’র ল্যাব থেকে ছড়ায়নি বরং উহানের হুয়ানান সামুদ্রিক খাবার ও বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়েছে।

গত মঙ্গলবার বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্সে এই বিষয়ে দুটো গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এই প্রবন্ধ দুটো লিখেছেন। প্রথম গবেষণায় হুয়ানানের ওই বাজার ও তার আশপাশের এলাকা নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যে কয়জন করোনা রোগী শনাক্ত করে, তার ১৫৫ জনই ছিলেন উহানে। অর্থাৎ করোনার শুরুর দিকে হুয়ানানের ওই বাজারকে ঘিরে ভাইরাসটি ক্লাস্টার বা গুচ্ছ আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
দ্বিতীয় গবেষণায় করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিককার জেনেটিক তথ্য সংগ্রহ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরের মধ্যে উহানে ‘সার্স-কভ-২’ ভাইরাসের দুটি ধরন ছড়িয়ে পড়ে। এই ধরন দুটি থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই গবেষণায় আরও বলা হয়, বন্যপ্রাণী থেকেই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে বিস্তার লাভ করে।

দুটো গবেষণার একটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাসবিদ ডেভিড রবার্টসন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘এই দুটি গবেষণার মধ্য দিয়ে করোনার ভাইরাসটি ল্যাব থেকে ছড়িয়ে পড়ার যে ভুল দাবি ছিল তা বাতিল হলো। হুয়ানানের বাজারটির দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের এলাকায় ভাইরাসটি গুচ্ছভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই বাজারে রাকুন কুকুর নামের এক ধরনের বন্য কুকুর বিক্রি হতো। এই কুকুর থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে বলে আমাদের ধারণা।’

আরেক গবেষক লন্ডনের কিং কলেজের অধ্যাপক স্টুয়ার্ট নিল বিবিসিকে বলেন, ‘এই দুই গবেষণায় টুকরো টুকরো যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে এটাই স্পষ্ট যে—বন্যপ্রাণী থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে। আর এটা হয়েছে হুয়ানানের বন্যপ্রাণীর বাজারে।’

উল্লেখ্য, হুয়ানানের এই বাজারটিতে ৩৮টি আলাদা প্রজাতির প্রায় ৫০ হাজারের পশু-পাখি বিক্রি করা হতো। বাজারটির অস্বাস্থ্যকর এবং সেখানকার ব্যবসায়ীদের নির্মম আচরণ নিয়ে চীনা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানান স্টুয়ার্ট নিল।

শেয়ার করুন