বাংলাদেশের একটি গৌরবময় পরিবারের সন্তান, তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল চিকিৎসক আরমান সোবহান (২৯) আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত ১৭ আগষ্ট রবিবার রাতে নিউ ইয়র্কে ম্যানহাটানে তাঁর বাসভবনে হঠাৎই মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মুহূর্তেই মৃত্যুবরণ করেন আরমান।
বাংলাদেশের বিখ্যাত আব্বাসউদ্দিন পরিবারের সন্তান আরমানকে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মরহুম মুস্তাফা জামান আব্বাসীর দৌহিত্র আরমানের মা সামিরা আব্বাসী বর্তমানে ফ্লোরিডার মায়ামিতে বসবাস করেন। শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সামিরা আব্বাসী ও ইঞ্জিনিয়ার খালেদ সোবহানের দুই সন্তানের একজন ছিলেন আরমান।
আরমান সোবহান ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি একটি বই প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য ভকমিউনিটিতর্তি হন বিশ্বখ্যাত কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি মেডিকেল স্কুলে কৃতিত্বের সাথে পড়াশোনা শেষ করে একাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কের সেন্ট জোন্স রিভারসাইড হাসপাতালে ইন্টারনাল মেডিসিনে রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান হিসেবে যোগ দেন। চিকিৎসা পেশায় তিনি বিশেষভাবে কার্ডিওলজিতে দক্ষতা অর্জনের স্বপ্ন দেখতেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রের বাইরে আরমান ছিলেন একজন দক্ষ সংগীতশিল্পী। পিয়ানো, বাঁশি, স্যাক্সোফোন এবং বেহালা বাজাতে পারতেন অনবদ্য দক্ষতায়। বহুমাত্রিক প্রতিভার জন্য পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন সবার প্রিয়।
নিয়মিত ফোন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে উদ্বিগ্ন পরিবার খোঁজ করতে থাকে। অবশেষে ১৭ আগস্ট রবিবার তাঁর বাসায় গিয়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্ক থেকে আরমানের মরদেহ ফ্লোরিডায় নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হবে।
উল্লেখ্য, আরমানের মা সামিরা আব্বাসী কিছুদিন আগে হারিয়েছেন তাঁর বাবা, বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুস্তাফা জামান আব্বাসীকে। তারও আগে প্রয়াত হন তাঁর মা, খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক আসমা আব্বাসী। এভাবে একের পর এক শোকের আঘাতে বিধ্বস্ত এই পরিবারে তরুণ আরমানের অকালপ্রয়াণ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি।
বাংলাদেশ ও প্রবাসে পরিচিত ও সমাদৃত আব্বাসী পরিবারের এই তরুণ সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন-অনুরাগীরা স্তব্ধ হয়ে গেছেন। প্রিয় আরমানকে হারানোর বেদনা কোনোভাবেই ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।