গত ২৪ আগস্ট রোববার লং আইল্যান্ডের বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কের নয়নাভিরাম পরিবেশে, আ নন্দঘন আয়োজনে দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই উপজেলাবাসীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনক’র অত্যন্ত সফল বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জ্যাকসন হাইটস এলাকা থেকে সুবিশাল বাসে করে এবং সদস্যদের নিজস্ব প্রাইভেট কারে এই যাত্রা মিলিত হয় সকাল দশটার পর থেকেই। সভাপতি দুলাল বেহেদু ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপনসহ সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দ,কার্যকরী সদস্যরা দুপুরের যোহরের নামাজের পর বেলুন উড়িয়ে বনভোজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।
ছোট বড় সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে বনভোজন প্রাঙ্গণ ছিল উৎসবমুখর। বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক মানুষ তথা ঢাকাবাসীর অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। প্রিয়জনদের কাছে পেয়ে সবার চোখে ছিল আনন্দের ঝিলিক।
দিনব্যাপী অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তব্য, বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা, সঙ্গীতানুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণ, র্যাফেল ড্র আর বাহারী বাঙ্গালী খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এ বনভোজন যেন ছিল ঢাকাবাসীর মিলনমেলা।
উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। উপস্থিত হয়েছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কমিউনিটির আমব্রেলা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃবৃন্দ। আরো ছিলেন নিউইয়র্কের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
সকালে নাস্তা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বনভোজনের কার্যক্রম। সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বনভোজনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করার আহ্বান জানান ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন ইউএসএ ইনক’র সভাপতি দুলাল বেহেদু ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন।
এ সময় ম্যাপল প্যাভিলয়ন প্রাঙ্গণ ছিল লোকে লোকারণ্য।উপস্থিত সবাই যার যার পরিবার পরিজন নিয়ে এদিক ওদিক সময় কাটান। সেই সঙ্গে আয়োজকদের পরিবেশন করা তরমুজের স্বাদ গ্রহণ করেন।
ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন’র সভাপতি দুলাল বেহেদুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দ, সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ খায়রুল আলম, বনভোজনের আহবায়ক কবির খান, সদস্য সচিব দেওয়ান কায়সার, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এস সাইফুলসহ অনেকে।
উপস্থিত সকলের উদ্দ্যেশ্য ঢাকা জেলা এসোসিয়েশনের সভাপতি দুলাল বেহেদু বলেন, প্রবাসের ব্যস্ততম জীবনে এলাকার মানুষকে ন্যূনতম আনন্দ দিতে পারলেই তারা নিজেদের ধন্য মনে করছি।
আমাদের নিজেদের মধে্য বন্ধুত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করা এবং ঢাকার ঐতিহ্য তুলে ধরার অভিপ্রায়ে আমরা এ বনভোজনের আয়োজন করেছি। সেই সঙ্গে আমাদের আয়োজনে যোগ দিয়েছেন অন্য জেলার অতিথিগণ।
সব মিলিয়ে আমি বলব, এ বনভোজন ঢাকাবাসীর সঙ্গে অন্য সবার সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করছে। আর করতালির মাধ্যমে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন উপস্থিত সকলে।
তারপর সবাই চলে যান খেলার মাঠে। শুরু হয় সব বয়সী বাচ্চাদের দৌড় প্রতিযোগিতা। ছিল বড়দের দৌড়। এ সময় মেয়েদের ইন এন্ড আউট খেলাটি সবার মাঝে সাড়া ফেলে।
এরপর দুইভাগে ভাগে ভাগ হয়ে অনুষ্ঠিত হয় দিনের আকর্ষণীয় ইভেন্ট ফুটবল খেলা । এ সময় সাদা ও হলুদ জার্সি পরিধান করা সবাইকে বেশ সুন্দর লাগছিল। ফুটবল খেলায় অংশ নেয়া সবার জন্যই ছিল পুরস্কারের ব্যবস্থা।
ফুটবল খেলা শেষে সবার মাঝে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। খলিল বিরিয়ানীর পরিবেশিত বাহারী বাঙ্গালী খাবারের প্রশংসা করেন উপস্থিত সকলে।
এরপর পড়ন্ত বিকেলে ছিল মেয়েদের পিলো পাসিং। চারদিকে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে অংশ নেন সব বয়সী মেয়েরা। আর এ দৃশ্যটি ছিল খুবই দৃষ্টিনন্দন।
পিলো পাসিং শেষে শুরু হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। সুপরিচিত শিল্পী হাফিজুর রহমান গিনি, শিল্পী রায়ান তাজ, প্রমি তাজ, ডালিয়া, নাসরিন চৌধুরী, মোস্তফা কামাল মুকুলের গানে নেচে গেয়ে উল্লাস করেন বনভোজনে অংশ নেয়া সকলে। সঙ্গে পরিবেশন করা হয় ঝালমুড়ি, আম ভর্তা। ছিল চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার সুযোগ।
সবশেষে ছিল বনভোজনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট র্যাফেল ড্র। স্বর্ণালঙ্কার সেট, এয়ার টিকেটসহ মোট ১২টি ক্যাটাগরীতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন ইউএসএ ইনক’র নেতৃবৃন্দ।
সকালের নাস্তা দুপুরের সুস্বাদু মধ্যাহ্ন ভোজ এবং বিকেলের আম ভর্তা ঝাল মুড়ি সহ নানা খাবারের এই মহাযজ্ঞে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছেন আহ্বায়ক কবির খান, সদস্য সচিব দেওয়ান কাউসার, বি এইচ সাইফুল, মোঃ ফরিদ খান,আমির আফতাব,মোহাম্মদ আলী সবুজ,মোঃ রবিউল আলম, মোঃ নুর আমিন, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
এই আয়োজনে সার্বিক নির্দেশনায় ছিলেন সম্মানিত উপদেষ্টা পরিষদ। এদের মাঝে ছিলেন নির্দেশনায় গিয়াস আহমেদ প্রধান উপদেষ্টা, মোঃ আমানুল্লাহ আমান, শেখ সালাউদ্দিন আহমেদ খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজাদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ফারুক হোসেন, হাবিব জোয়ারদার,আলাউদ্দিন আহমেদ, সোয়েব হোসেন খান, কাউসার আলমগীর,একেএম তারেক। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, শাহিনুর রহমান বিপ্লব, মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, মোঃ সেলিম খান, সাইফুর রহমান টুটুল, মোঃ লাভলু মিয়া, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ চঞ্চল, মোঃ আওলাদ হোসেন, ফারুক দেওয়ান কুসুম, আমিনুল ইসলাম কচি,আক্তার সিদ্দিকী শামীম, এহতেশাম হায়াত, মোঃ শিকদার, শারমিনা লিপা, মোঃ আক্তার হোসেন বিপ্লব।
সন্ধ্যার পূর্বক্ষণে বনভোজনের উপস্থিত হওয়ার জন্য সংগঠনের সভাপতি দুলাল বেহেদু উপস্থিত উপদেষ্টা, সংগঠনের সদস্য,শুভানুধ্যায়ী এবং মিডিয়াকর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ঢাকার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত সকলকে নিয়ে আগামী দিনেও সফল বনভোজন আয়োজন এর প্রতিশ্রুতি জানিয়ে তিনি এবারের বনভোজনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।