একটি রৌদ্রকরোজ্জল ছুটির দিন ছিল গত ৬ জুলাই রবিবার। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস -ফোর্থ অফ জুলাই টানা তিন দিনের ছুটির আমেজে এদিন সকাল থেকেই লং আইল্যান্ডের বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কের ম্যাপল প্যাভিলিয়ানটি কানায় কানায় পরিপুর্ণ হয়ে ওঠে চট্টগ্রামবাসীর মুখরিত কলতানে। সকাল ন’টার আগেই পৌঁছে যায় এবারের চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনকের বনভোজন আয়োজনের কর্মঠ এবং করিৎকর্মা স্বেচ্ছাসেবকরা, কাজে নেমে পড়েন সবাই মিলে।
প্যাভিলিয়নের আশপাশের এলাকাকে বর্ণিলভাবে সাজিয়ে তোলা হয়, তাবু খাঁটানো হয় নানা বিষয় আঙ্গিকে, উল্লেখযোগ্য ছিল মিষ্টি স্বাদের তরমুজ স্ট্যান্ড, সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য বুথ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আসতে থাকেন অভ্যাগতরা, নানা পোশাকে নানা শহর থেকে।
কেউ এসেছেন আটলান্টা থেকে, কেউবা লস এঞ্জেলেস, আটলান্টিক সিটি থেকে বাফেলো, ফিলি থেকে নিউজার্সি, কানেক্টিকাট থেকে কেন্টাকি- সে এক মহামিলন। এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সূচনা। ঘড়ির কাঁটা বারোতে পৌঁছার আগেই লোকে লোকারণ্য বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কের সবুজ বনানী।
কফি, কলা, ক্রসান্ট দিয়ে নাস্তার ব্যবস্থা সাথে চাঁটগাইয়া আড্ডা, আহা- সে কি এক অনুভূতি, ভাষায় অপ্রকাশযোগ্য,শুধু অনুভবে অবিস্মরণীয়।
বনভোজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় বেলুন উড়িয়ে, উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, রাজনীতিবীদ, আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জনাব আব্দুল কাদের মিয়া। তিনি বলেন, চট্টগ্রামবাসীর সাথে যেকোনো আয়োজনে পাশে থাকতে পেরে তিনি গৌরববোধ করেন এবং নিজেকে এর অংশ মনে করেন।
গল্প আড্ডায় সময় গড়িয়ে জোহরের নামাজের সময় হলে একসঙ্গে অনেক মানুষ নামাজ আদায় করে খোলা মাঠে- আগেই সুব্যবস্থা করা হয়েছিল।
নামাজের পরপরই দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়, মাঠের এক প্রান্তে পুরুষদের জন্য, অন্য প্রান্তে মহিলা এবং শিশুদের জন্য খাবারের বুথ ছিলো। সুশৃঙ্খল এবং সারিবদ্ধভাবে সবাই খাবার নিয়ে তৃপ্তি সহকারে রসনার প্রতি সুবিচার করেছেন। এসবকিছুর মাঝেই চলছে কথা এবং গান।
বনভোজন কমিটির সদস্য সচিব এবং সমিতির ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ ইছা‘র পরিচালনায় বিশাল সবুজ মাঠে নানারকমের খেলার আয়োজন ও ছিলো, বয়েসভিত্তিক দৌড়, অংকের খেলা, ফুটবল, মেয়েদের হাঁড়িভাঙা, দড়ি টানাটানি, অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ ছিলো আকাশচুম্বি।
খাওয়ার প্রাথমিক পর্ব শেষ হবার পরেই বসে গানের মেলা। একের পর এক জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন একাধিক শিল্পী। বাপ্পি সোম এবং হাসান মাহমুদ, নাসির এর পরিবেশনা ছিলো হৃদয়গ্রাহী।
মূল সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন শিমুল খান, তিনি তাঁর পরিবেশনা দিয়ে পুরো পিকনিককে মাতিয়ে তুলেন, নাচের তালে তালে সবাই মেতে উঠেন। আর ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে যায় গরম গরম চা আর মুচমুচে ঝালমুড়ি।
অনুষ্ঠান প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাবার আগে শুরু হয় আকর্ষণীয় রাফেল ড্র- যার প্রথম পুরুষ্কার ছিলো এক ভরি মাপের সোনার চেইন, দ্বিতীয় পুরস্কার নিউইয়র্ক-ঢাকা এয়ার টিকিট,৬৫ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি, ল্যাপটপ(একাধিক)এবং আরো অন্যান্য আকর্ষণীয় পুরস্কার।
দিনব্যাপি এই আনন্দ আয়োজনে যারা সাথে থেকে সহযোগিতা এবং কৃতার্থ করেছেন তাঁদের মধ্যে হলেন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের মানিক, ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং দুইবারের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক সভাপতি কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, সাবেক সভাপতি সরোয়ার জামান সিপিএ, ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক কো চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা কোষাধক্ষ্য শামশুল আলম, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার শেখ মোহাম্মদ খালেদ, নির্বাচন কমিশনার এবং সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকার সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাগর, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ সেলিম হারুন, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হান্নান, এটর্নি মঈন চৌধুরী, আবুল হাশেম আইআরএস এ্যানরোল এজেন্ট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ, সাবেক উপদেষ্টা এনাম চৌধুরী, সাবেক সাধারন সম্পাদক মুর্শেদ রিজবি চৌধুরী ও মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, সাবেক অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য আবুল কাশেম চট্টলা, মোঃ নুরুল আনোয়ার ,কামাল হোসেল মিঠু,সাবেক সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরী,ব্যাংকার ফজলুল কাদের, শ্রাবণী সিং সিপিএ, ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান,প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোহাম্মদ আমিন, অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান, আজীবন সদস্য সারওআর হোসেন, সন্দীপ পৌরসভা সমিতির সভাপতি হাজী জাফরউল্লাহ ,ডাঃ সায়েরা হক এম ডি, ইঞ্জিনিয়ার মোহামমদ হক, সাতকানিয়া সমিতির উপদেষ্টা মোহাম্মদ নবী চৌধুরী , জনাব খোরশেদ আলম,জনাব নাসির আহমেদ,সাতকানিয়া সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম , সাধারন সম্পাদক নুরুল আমিন,মিরসরাই সমিতির আবু তাহের,কাউছার আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কক্সবাজারের কৃতি সন্তান রিজবি চৌধুরী, আজীবন সদস্য গোলাম মাওলা ,বাহদুর চৌধুরী, সমিতির সাবেক কোষাধক্ষ্য দিদারুল আলম, মতিউর রহমান,সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক জামাল চৌধুরী, কাতার চট্টগ্রাম সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সফিক বাবু, ফারুক তালুকদার ,মোহামমদ হাবিব মনোয়ার তালুকদার।মো: আলী নূর- সিনিয়র সহ-সভাপতি ,ফরিদ আহমেদ চৌধুরী তারেক-সহ-সভাপতি ,মোঃ কলিমউল্ল্যাহ-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ,এ আজিজ সোহেল-সহ সাধারণ সম্পাদক , মোঃ শফিকুল আলম-কোষাধ্যক্ষ , মোঃ নুরুল আমিন-সহকারী কোষাধ্যক্ষ,মোঃ তানিম মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক,অজয় প্রসাদ তালুকদার, অফিস সম্পাদক ,ইমরুল কায়সার-সহকারী অফিস সম্পাদক, মো:এনামুল হক চৌধুরী, শিক্ষাও সাংস্কৃতিক সম্পাদক,মোঃ জাবের শফি-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ,মোঃ আকতার হোছাইন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ,মো : ইসা-ক্রীড়া সম্পাদক, মোঃ নাসির চৌধুরী-কার্যনির্বাহী সদস্য,পল্লব রায়-কার্যনির্বাহী সদস্য ,মোঃ মহিম উদ্দিন-কার্যনির্বাহী সদস্য সহ অনেকে অথিতি।
চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইন্ক্ এর সুযোগ্য সভাপতি মহম্মদ আবু তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আরিফুল ইসলাম সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
এবারের বনভোজন কমিটির আহবায়ক ইমরুল কায়সার, সদস্য সচিব মহম্মদ ইছা এবং প্রধান সমন্নয়কারী মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী চট্টগ্রামবাসীসহ উপস্থিত সকলকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতে যেকোনো আয়োজনে আজকের মতন সবাইকে অংশ নেবার অনুরোধ জানিয়ে বনভোজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।