গত ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কসহ সারা বিশ্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যে ও যথাযোগ্য মর্যাদায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উদযাপিত হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে সকল চার্চে বিশেষ খ্রিস্টযাগসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনটি পালিত হয়। বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠিও যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি স্টেটে বাংলা কৃষ্টি ও সংস্কৃতি অনুসারে বড়দিন উদযাপন করেন। প্রবাসী বেঙ্গলী খ্রিস্টান এসসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে,বাড়ি বাড়ি কৃত্তন,সার্বজনীন ‘প্রাক-বড়দিন’ উৎসবসহ নানা আয়োজন করে দিনটিকে ঘিরে। নানা আয়োজনে মধ্য দিয়ে প্রভু যীশুর জন্মদিন ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপন করা হয়।
খ্রিষ্টবিশ্বাসীগণ মনে করেন, মানব জাতিকে পাপময় জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য পিতা ঈশ^র যীশুখ্রীষ্টকে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন। নিজের জীবন আদর্শ, প্রতিবেশীকে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা ইত্যদি বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে পাপময় জীবন পরিহার করে ঐশরাজ্য লাভে সৎ-সুন্দর জীবনের পথ দেখিয়ে গেছেন এবং শেষ পর্যন্ত নিজ জীবন উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে মানব জাতীকে আদি পাপ থেকে পরিত্রাণ দিয়ে গেছেন।
ক্রিসমাস কিভাবে বাংলায় ‘বড়দিন’ হলো এ বিষয়ে বাংলা সাহিত্যে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেছেন, মর্যাদার দিক থেকে এটি একটি বড়দিন। তিনি বলেন, যিশু যেহেতু বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ধর্ম ও দর্শন দিয়ে গেছেন, বিশ্বব্যাপী বিশাল অংশের মানুষ তার দেয়া ধর্ম ও দর্শনের অনুসারী। যিনি এতো বড় ধর্ম ও দর্শন দিলেন ২৫ ডিসেম্বর তার জন্মদিন। সে কারণেই ক্রিসমাসকে বাংলা ভাষাভাষী খ্রিস্টভক্তগণ ‘বড়দিন’ হিসেবে বিবেচনা করেন।
বড়দিন উপলক্ষে বাংলায় সব চেয়ে বড় খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করা হয় নিউইয়র্কের সানি সাইডের স্কিলম্যান এভিনিউস্থ কুইন অব এঞ্জেল চার্চে। গত ২৪ ডিসেম্বর রাত ৮:০০ মি: বড়দিনের বিশেষ খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করা হয়। যেখানে প্রায় ৬ শত বাংলাদেশি খ্রিস্টভক্ত ‘বড়দিনের’ উপসনায় উপস্থিত হয়েছিলেন।
বড়দিন উপলক্ষে উডসাইডস্থ ইউনাইটেড বেঙ্গলি লুথারেন চার্চে উপাসনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চার্চের স্বনামধন্য পাদ্রী রেভা. মি. জেমস রয় কমিউনিটির আন্তধর্মীয় ইমাম, পন্ডিতসহ বিশিষ্টজনদের অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান।
এছাড়াও বাংলা ভাষাভাষী ইভ্যানজেলিক্যাল বেঙ্গলী চার্চ, ক্রাইস্ট বাংলা চার্চ, বাংলা বাইবেল চার্চসহ বিভিন্ন চার্চে একত্রিত হয়ে বড়দিনের উপাসনাসসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপন করেন।