ইসরায়েলের হামলায় বিপর্যস্ত ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তিতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যথায় তাদের ওপর আরও ‘ভয়াবহ হামলা’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ জুন) নিজের প্লাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, আমি তাদের শক্ত ভাষায় বলেছি যে এটি (চুক্তি) করো, কিন্তু তারা করেনি। ইতোমধ্যে অনেক প্রাণহানি ও ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু এই রক্তপাত বন্ধ করার এখনো সময় আছে। কারণ এর পরের হামলাগুলো আরও ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। ইরানকে ‘একের পর এক সুযোগ’ দিয়েছেন বলেও ট্রাম্প পোস্টে উল্লেখ করেন।
আগামী রোববার (১৫ জুন) ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বিষয়ক ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই আলোচনার আগেই শুক্রবার ভোরে দেশটিতে হামলা করে বসে ইসরায়েল। ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখে ইরানকে। এজন্য তাদের পরমাণু স্থাপনা সবসময়ই নজরে রেখেছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা কয়েক মাস ধরে সতর্ক করে আসছিলেন যে, এ বছরের যে কোনো সময়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। কারণ পারমাণবিক বোমা বানানোর এসব প্রকল্প নিয়ে চিন্তিত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তাছাড়া, হামাসকে অজুহাত বানিয়ে ফিলিস্তিনের গাজায় আগ্রাসনবাদী ইসরায়েল যে হামলা চালাচ্ছে, তার জবাবে ইয়েমেনের হুথি ও লেবাননের হিজবুল্লাহ বিভিন্ন সময় পাল্টা আঘাত করেছে। ইসরায়েল এর পেছনে ইরানের সহায়তা আছে বলে মনে করে।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভোরে ২০০টির বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইরানের ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে ৩৩০টিরও বেশি মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা করে ইসরায়েল। এতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি ও খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার ঘোলামালি রশীদসহ ৭০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীও রয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, সব শেষ হয়ে যাওয়ার আগে ইরানকে অবশ্যই চুক্তিতে আসতে হবে। যেটিকে একসময় পারস্য সাম্রাজ্য বলা হতো, সেটিকে রক্ষা করো। আর কোনো মৃত্যু নয়, আর কোনো ধ্বংস নয়, এটি করো, নইলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।
তিনি এও উল্লেখ করেন, ইরানে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, এই হামলার পরিকল্পনার কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী কোনোভাবেই অংশ নেয়নি।