২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালিত

নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালিত

বাংলাদেশের শহীদ রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় দোয়ার আয়োজন ও তবারক বিতরণ করেছে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি। বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য গিয়াস আহমেদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘একাত্তরের মার্চে স্বাধীনতার জন্যে উদগ্রিব মানুষকে সুনির্দিষ্ট কোন দিক-নির্দেশনা না দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তেমন একটি পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে নিজ উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি কারো নির্দেশে খবর পাঠ করেননি। তিনি সংবাদ পাঠক ছিলেন না। যখন পশ্চিমা বাহিনী রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশের মানুষের ওপর অতর্কিতে হামলা করেছে, যখন শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে স্বেচ্ছায় পাক হানাদার বাহিনীর কাছে ধরা দিয়েছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি শুধু ঘোষণাই দেননি, তিনি বাংলাদেশে অবস্থান করে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন, যুদ্ধ করেছেন।

গিয়াস আহমেদ বলেন, শুধু তাই নয়, পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের আগে শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রেও গলাটিপে বাকশাল কায়েম করলেন। বাকশাল ছিল একাত্তরের চেতনার পরিপন্থি। বাকশাল ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। বাকশাল ছিল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা। বাংলাদেশের মানুষ এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার জন্যে যুদ্ধ করেনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সংকটময় মুহূর্তে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সমস্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই সেই জিয়াউর রহমান যিনি বাকশাল গঠনের সময় শেখ মুজিব কর্তৃক বিলুপ্ত আওয়ামী লীগকে তিনি আবার পুনরুজ্জীবনের লাইসেন্স দিয়েছিলেন।

গিয়াস আহমেদ উল্লেখ করেন, এভাবেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, স্বাধীনতার ঘোষক, এবং আধুনিক বাংলাদেশ রচনার সত্যিকারের রূপকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। এমন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাষ্ট্রনায়কের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকীতে সুদূর এই প্রবাসেও বাংলাদেশীরা দোয়া-মোনাজাত এবং আলোচনা সভার ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।

গেস্ট অব অনার’ হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অপর সদস্য জিল্লুর রহমান সরকারের কাছে ৩০ মে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান ।

লন্ডন থেকে টেলিফোনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির উত্তর আমেরিকা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কয়েক বছর আগেই সময়ের প্রয়োজনে, দেশের প্রয়োজনে ৩১ দফা কর্মসূচি জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। সেখানেই রয়েছে একটি দেশ কীভাবে আগামিতে পরিচালিত হবে তার সুনির্দিষ্ট সংস্কারের রূপরেখা। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। শহীদ জিয়ার আদর্শই হবে আমাদের আগামি দিনের পথ-পরিক্রমার দিশারি।

এ মাহফিল ও আলোচনা সমাবেশের সভাপতি মো. অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান সমাপনী বক্তব্যে সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের সত্যিকারের দেশপ্রেমিক নেতা এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারপার্সনের শাহাদৎ বার্ষিকীর এ আয়োজনকে সাফল্যমন্ডিত করার মধ্যদিয়ে মূলত: প্রবাসীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের অপশাসনের প্রতি এখনো যে সকলে প্রতিবাদমুখর তারই জানান দিলেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান, নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জসিমউদ্দিন ভিপি, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ আহমেদ এবং এম এ বাতিন, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জনি প্রমুখ।

এই আয়োজনের জন্যে গঠিত কমিটির আহবায়ক দেওয়ান কাউসারের সার্বিক সমন্বয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক মহিলা সম্পাদিকা সৈয়দা মাহবুদা শিরিন, জিনাত রেহেনা রিনা, খন্দকার সাবু, বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস জিয়াউর রহমান জিয়া, সাবেক ছাত্র নেতা মার্শাল মোরাদ, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন মৃধা, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি পরিষদের সভাপতি শাহাদত হোসেন রাজু,যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সদস্য-সচিব জাহাংগীর সোহরাওয়ার্দী, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির এলিক খান, বাফেলো বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজদৌলা বাবুল, সোহেল হাওলাদার প্রমুখ।

কর্মসূচির সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন বদরুল হক আজাদ, তাজুল ইসলাম, শাহীন আবদুল্লাহ, খাদেমুল ইসলাম রুবেল, শেখ হাসান, ফাহাদ ইসলাম বাঁধন,মাইনুল করিম টিপু, আনোয়ার হোসেন, নীরা রাব্বানী, এ আর মাহবুব, হাফিজুর রহমান পিন্টু, আলমগীর খান ভিপি, স্টেট বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আরিফুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক রইস উদ্দিন।