ঢাকা-আঙ্কারা সামরিক সখ্যের সূচনা হয়েছিল শেখ হাসিনার জমানাতেই। এর্ডোগানের দেশের থেকে টিআরজি-৩০০ ‘মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম’ কিনেছিল বাংলাদেশ সেনা। ‘অপারেশন সিঁদুর’-পরবর্তী সংঘাতের সময় ভারতের বিরুদ্ধে ঢালাও ব্যবহার করেছিল পাক সেনা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগানের সরকার এ বার সেই ‘বের্যাকটার টিবি-২’ আর সোনগার ড্রোন বাংলাদেশকেও বিক্রি করতে সক্রিয় হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সমঝোতা চূড়ান্ত করতে আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশে যাচ্ছে তুরস্কের বিশেষ প্রতিনিধিদল।
ঢাকা-আঙ্কারা সামরিক সখ্যের সূচনা হয়েছিল শেখ হাসিনার জমানাতেই। এর্ডোগানের দেশের থেকে টিআরজি-৩০০ ‘মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম’ কিনেছিল বাংলাদেশ সেনা। বাংলাদেশ নৌসেনার জন্য তুরস্ক থেকে এআরইএস-১৫০ দ্রুতগতির নৌযান কেনার চুক্তি হয়েছিল। গত বছরের ৫ অগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের পাশাপাশি তুরস্কের সঙ্গেও নৈকট্য বাড়িয়েছে। চলতি বছরের গোড়ায় ২৬টি ‘তুলপার লাইট ট্যাঙ্ক’ কেনার বিষয়ে প্রাথমিক সমঝোতাও হয়েছে দু’দেশের।
‘ইকনমিক টাইমস’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি, এ বার তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার (এসএসবি) প্রধান হালুক গর্গুনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের আট দিনের বাংলাদেশ সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং তুর্কি প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে প্রতিরক্ষা শিল্প কমপ্লেক্স স্থাপন। ইউনূসের পাশাপাশি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের সঙ্গেও হালুকের বৈঠক হওয়ার কথা।
শুধু সামরিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন নয়, ইউনূস সরকারের এই পদক্ষেপের অন্যতম উদ্দেশ্য ভারতের উপর চাপ বাড়ানো বলে কূটনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন। অন্য দিকে, এর্ডোগান সরকারের এই পদক্ষেপ ভারতের বিরুদ্ধে ‘কৌশলগত পদক্ষেপে’র অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। অপারেশন সিঁদুর-পর্বে পাক সেনাকে সহায়তার প্রতিক্রয়ায় ইতিমধ্যেই ভারতে বিনিয়োগকারী তুরস্কের কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে দিল্লি।
পাকিস্তান সেনার পাশাপাশি, সাম্প্রতিক কালে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আজ়েরবাইজান সেনাকে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে ড্রোন দিয়েছে তুরস্ক। সামরিক ড্রোনের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রায় অর্ধেক তাদের দখলে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)-এর ২০২৪ সালের রিপোর্ট বলছে,ক্রয়ক্ষমতায় বিশ্বের ৩৫তম দেশ বাংলাদেশ ক্রমশ সামরিক আমদানি বাড়াচ্ছে। বিডা-র কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন সম্প্রতি পাঁচ দিনের তুরস্ক সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সমঝোতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশের দাবি। সংবাদসুত্রআনন্দবাজার ডট কম