ভোজন রসিক মানুষের কাছে যে খাবারটি আকর্ষণের শীর্ষে তার নাম বিরিয়ানী। আর সুস্বাদুতম এই খাবারটি প্রবাসে যিনি জনপ্রিয়তার চুড়ায় পৌছে দিয়েছেন তার নাম শেফ খলিলুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংকে অনার্স সহ মাস্টার্স খলিল রন্ধনবিদ্যায়ও ডিপ্লোমা নিয়েছেন আরেক বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্কের “কুলিনারী ইন্সটিটিউট” থেকে। এরপর ব্রঙ্কসে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান “খলিল বিরিয়ানী হাউস”। নিজকে উজাড় করে দিয়েছেন তার এই প্রতিষ্ঠানে। তার শ্রম, মেধা আর অভিজ্ঞতা অল্প সময়ে তাকে পৌছে দিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়।
খলিলুর রহমান দেশে-বিদেশে রান্না বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় বিচারক ও মেন্টর হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসাবে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রেরর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার। ভূষিত হয়েছেন বৃটিশ কারী এ্যাওয়ার্ড ও ভারতের গুজরাটের কিংশেফ এ্যাওয়ার্ডে। কোলকাতার অভিজাত প্রতিষ্ঠান ‘রয়েল বেঙ্গল মাস্টার শেফ’ এর কাছ থেকে পেয়েছেন- ‘গোল্ডেন হ্যাট’ পুরস্কার। ইন্ডিয়ান কুলিনারী ফেডারেশন থেকে অর্জন করেছেন ‘মাস্টার শেফ’ সার্টিফিকেট।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হকুল থেকে শুরু করে মেয়র এরিক অ্যাডামস, সিনেটে মেজোরিটি লিডার চাক শুমার, কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও, কংগেসম্যান টম সোজি, সিটি কম্পট্রোলার স্কট স্টিংগার, ষ্টেট সিনেটর লুইস সিপুলভিদা, অ্যাসেম্বলিওমান কারিনা রয়েস, অ্যাসেম্বলি মেম্বার আমান্ডা ফারিয়াস, সিটি কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ সহ দেশী-বিদেশী অনেক সেলিব্রেটি তার খাবার খেয়ে এতই আপ্লুত হন যে তারা তাকে প্রক্লেমেশন, সাইটেশন এবং বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করেছেন বহুবার। তিনিএকাধিক বার সম্মাননা পেয়েছেন ইউএস কংগ্রেসে বিরোধী দলীয় নেতা হাকিম জেফরির কাছ থেকেও।
নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টারের ইউনিয়ন পোর্ট রোডে রয়েছে তার বিশাল ফুড কোর্ট। এক ছাদের নীচে হরেক রকম খাবার নিয়ে খলিল ফুড কোর্ট এখন জমজমাট। এটি খলিল বিরিয়ানী হাউসের একটি সহ প্রতিষ্ঠান।
খলিল ফুড কোর্টে বাংলাদেশী নিয়মিত ঐতিহ্যবাহী খাবারের বাইরেও আছে নানা রকম হালাল ফাস্ট ফুড। পাওয়া যায় ফুচকা, চটপটি, শর্মা, টার্কিশ গ্রীল, বাবলটি, আইসক্রিম, নানা ধরনের পেস্ট্রি, বার্গার, কেক, ওয়াফেল ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শেফ খলিলুর রহমান বলেন, এখানে এক ছাদের নীচে বসে গ্রাহকরা নানাবিধ খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। জায়গার পরিসর বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক মানের খাবারও পরিবেশনা করা হবে।
খলিলুর রহমান বলেন, এই সামার-কে সামনে নিয়ে ফুড কোর্টকে সাজানো হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গীকে। নান্দনিক পার্টিসান দিয়ে ফুডকোর্টের ভেতরেই আলাদাভাবে তৈরি করা হচ্ছে ফাইন ডাইনিং। গতানুগতিক চেয়ার-টেবিলের জায়গায় স্থান পাবে আরামদায়ক সোফা। প্রতিটি ফ্যামিলি প্রাইভেটলি বসে আমাদের মজাদার খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।
খলিলুর রহমান বলেন, আমার নিজস্ব রেসিপিতে তৈরি বাইডেন বিরিয়ানী ইতিমধ্যে দেশী-বিদেশী ক্রতাদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। এর সাথে এবার যুক্ত হবে হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানী। ঐতিহ্যবাহী হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানীর সাথে আমার নিজস্ব রেসিপি যুক্ত হয়ে ভোজনবিলাসীদের কাছে টানবে বলে আমার বিশ্বাস। বলা হয়ে থাকে এই বিরিয়ানীটি এসেছে হায়দ্রাবাদের নিজাম বংশীয় মুসলিম নবাবদের রান্নাঘর থেকে। ভারতীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের রান্নার এক অপুর্ব মিশ্রনে সৃস্টি এই বিরিয়ানী। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশ সহ সারা বিশ্বে এই বিরিয়ানীর জয় জয়কার।
খলিলুর রহমান বলেন, আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্য ইনটেরিয়াম ডেকোরেশন শেষ হলে ‘খলিল ফাইন ডাইনিং’ গ্রাহকদের সেবা দিতে সক্ষম হবে। ক্রেতারা নতুন আঙ্গীকে সজ্জিত রেস্টুরেন্টের ভেতর আরামদায়ক পরিবেশে বসে অন্যান্য খাবারের সাথে ‘খলিল ফাইন ডাইনিংয়ে’র মুখরোচক খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন।
খলিলুর রহমান বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও উইকেন্ডে পিকনিকের জন্য প্রচুর কেটারিং অর্ডার পাচ্ছি। আমি নিজ হাতে রান্না করে খাবারগুলো পৌছে দিচ্ছি পিকনিক স্পটে। আমরা কোয়ালিটি খাবারে বিশ্বাস করি। যারা আমাদের খাবার দিয়ে পিকনিকের আনন্দকে আরো জমজমাট করতে চান তারা আগেভাগে অর্ডার দিলে আমরা সুস্বাদু খাবার যথাসময়ে পৌছে দেবার জন্য নিশ্চিত করবো। গ্রাহকরা তাদের সুবিধার্থে আমাদের জ্যাকসন হাইটস শাখায়ও খাবারের অর্ডার দিতে পারবেন। গত বছরের অক্টোবর থেকে এই শাখাটিও আমার একক মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। হাবিব রহমান প্রেরিত