বিএনপির দাবী মেনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ব্যাপারে অসন্তোষ জানিয়েছে জাসায়াতে ইসলামী, তবে নির্বাচনে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার কারণে আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেনা বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস ।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ, জাতীয় নির্বাচনের মতোই গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে হবে।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, সনদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে গণভোট এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ এবং বাংলাদেশ বেতারে একযোগে সম্প্রচারিত হয়েছে।
সকালে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোট, নির্বাচন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চূড়ান্ত করার পদ্ধতি নির্ধারণে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পরই প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল তাদের প্রথম রায় শিগগিরই দিতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ট্রাইবুনালে আরো কয়েকটি মামলার বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সাধারণ ফৌজদারি আদালতগুলোতেও জুলাই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত কিছু বিচার কাজ শুরু হয়েছে।’
গুমের মতো অপরাধের বিচার শুরু নিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা একই সাথে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গুমের মতো নৃশংস অপরাধের বিচার কাজ শুরু করেছি।’
সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন : অধ্যাপক ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, ‘সংস্কারের ক্ষেত্রেও আমরা ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিজ উদ্যোগে বা বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিছু প্রস্তাবিত সংস্কারের কাজ এখনো চলমান আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে বা বিদ্যমান আইন সংশোধন করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচার ব্যবস্থাপনা, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন সংস্কার সম্পন্ন করা হয়েছে।’
ভবিষ্যতে সুশাসনের জন্য এসব সংস্কার বড় ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচিত সরকার সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এসব সংস্কার গ্রহণ করবে।’
সুস্থ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের ভূমিকা : প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সুস্থ নির্বাচন অনুষ্ঠান আমি ঘোষণা করেছি যে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা সঠিকভাবে পালন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা : প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিরলসভাবে গত প্রায় নয় মাস ধরে কাজ করেছে। এ সময় কমিশন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে, ধৈর্য সহকারে রাজনৈতিক দলগুলো কমিশন কর্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। মতের পার্থক্য থাকলেও তা কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন, এবং অনেক বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসী সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে এই পুরো কার্যক্রম দেখতে পেরেছেন—এটি বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে তো বটেই, পৃথিবীর অনেক দেশের জন্যও এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এটি ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে গণতান্ত্রিক চর্চার এই অসাধারণ আয়োজনকে সফল করার জন্য আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত জুলাই সনদে সংবিধান বিষয়ক ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে—এটি একটি ঐতিহাসিক অর্জন।’
তিনি বলেন, ‘কিছু প্রস্তাবে সামান্য ভিন্ন মত আছে; বাকি অল্প কিছু প্রস্তাবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় অনেক দূরত্ব আছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে খতিয়ে দেখলে দেখা যায়, এসব প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও আসলে মতভিন্নতা খুব গভীর নয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কেউ সংবিধানে পরিবর্তন চান, কেউ আইনের মাধ্যমে—কিন্তু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা, নীতি ও লক্ষ্য নিয়ে কারও মধ্যে মতভেদ নেই। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকাশ্য বক্তব্য যতটা পরস্পরবিরোধী মনে হয়, জুলাই সনদ বিশ্লেষণ করলে ততটা মতপার্থক্য দেখা যায় না। এটি আমাদের অনন্য অর্জন, যা জাতিকে এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫ অনুমোদন : প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে বলেছেন, ‘এসব বিবেচনায় রেখে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদকে মূল দলিল হিসেবে ধরে নিয়ে, অন্তর্বর্তী সরকার আজকের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫ অনুমোদন করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিরাট খবর। প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর শেষে এটি ইতোমধ্যে গেজেট নোটিফিকেশনের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
গুরুত্বপূর্ণ বিধান ও গণভোটের সিদ্ধান্ত : অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আদেশে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে—সনদের সংবিধান বিষয়ক সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর গণভোট আয়োজন এবং পরবর্তী সময়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ, জাতীয় নির্বাচনের মতোই গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে না, বরং নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে।’
গণভোটের প্রশ্ন : অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জুলাই সনদের আলোকে আমরা গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনযোগ্য প্রশ্নও নির্ধারণ করেছি। আমি প্রশ্নটি এখন আপনাদের সামনে পাঠ করে শোনাচ্ছি।’
প্রশ্ন : “আপনি কি ‘জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদের লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি’ আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?
ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ ৩০টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।
গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাবেন।”
সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন : প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট যদি হ্যাঁ হয়, তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিগণ একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’
তিনি বলেন, পরিষদ প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে। এরপর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ থাকবে নিম্নকক্ষের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী, সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।’
অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ প্রবাহ : অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব গ্রহণ করে অর্থনীতিকে গভীর গহ্বর থেকে উদ্ধার করা ছিল আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। গত ১৫ মাসে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ উতরাতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রিজার্ভসহ অর্থনীতির সব সূচকে দেশ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। লুট হয়ে যাওয়া ব্যাংকিং খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে, মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে। ব্যাংকিং খাতকে আরও শক্তিশালী করতে নানা পদক্ষেপ চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমলেও বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বছরে এফডিআই ১৯.১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি বৈশ্বিক প্রবণতার বিপরীতে এক অনন্য অর্থনৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে ডেনমার্কভিত্তিক মার্স গ্রুপের মালিকানাধীন এপিএম টার্মিনালস বিভি’র সঙ্গে লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পে ৩০ বছরের কনসেশন চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। ইউরোপীয় এই কোম্পানি ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে — এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে ইউরোপের সর্বোচ্চ একক বিনিয়োগ। লালদিয়া হবে দেশের প্রথম বিশ্বমানের গ্রিনপোর্ট।’
ভোটাধিকার ও ঐক্যের আহ্বান : প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, প্রায় দেড় যুগ ধরে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তারা আজ আসন্ন নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুস্থ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অভ্যুত্থানের স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে জাতি এক মহাবিপদের সম্মুখীন হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি— ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেশবাসী যে ঐক্য গড়ে তুলেছিল, আমরা জীবিতরা যেন অল্পস্বল্প ভিন্ন মত ও লঘু বিবাদে জড়িয়ে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ন না করি।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ যা চায়, তা হলো— এই অগণিত হতাহতের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা যেন ভিন্ন মতের প্রতি সহনশীলতা দেখাই, দলীয় স্বার্থ অতিক্রম করে সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয় চাওয়াকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরি।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘তাই আমি আশা করি, আমাদের এই সিদ্ধান্ত জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে — একটি উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচনের দিকে।’