২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হলো না কেন?

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হলো না কেন?

লন্ডন, একটি বিশ্বনগরী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার-রাষ্ট্র প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা প্রতিদিন এই শহরে আসেন, যেমনটি যান নিউইয়র্কে বা ওয়াশিংটনে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন, কূটনৈতিক বৈঠক কিংবা একান্ত ব্যক্তিগত সফরেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদচারণ থাকে লন্ডনে সব সময়। হিথরো বিমানবন্দরকে বলা হয় বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস যুক্তরাজ্যে গেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পৃথিবীর অনেক দেশের সরকারপ্রধানরাই প্রতিদিন যুক্তরাজ্যে যান নানা কাজে। তাঁরা সবাই যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমনটি নয়।

যেকোনো দেশের সরকারপ্রধান যখন আরেকটি দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, এর আগে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে, থাকে কিছু প্রটোকল। এ ধরনের বৈঠকের সময়সূচি, আলোচ্য বিষয় ইত্যাদি আগে থেকে নির্ধারিত হয়।

সমস্যা হয়েছে এখানেই। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের সময়সূচি যখন ঘোষণা করা হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, তখন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব সফরসূচিতে যে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির কথা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক।

নিশ্চয়ই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বৈঠকের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিল। বৈঠকের প্রস্তুতি ছিল এবং বৈঠকের টকিং পয়েন্ট কী হবে সেটিও আগেই নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেসব চূড়ান্ত না করে এ ধরনের বৈঠক সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয় না।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এই বৈঠকের ব্যাপারে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডনে যাওয়ার পর আমরা দেখলাম তাঁর যে কর্মসূচি তার মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নেই।

এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব যা বললেন, তাতে বিপত্তি বাধল সবচেয়ে বেশি। তিনি বললেন যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখন কানাডায় অবস্থান করছেন। কিন্তু এই সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী এক টুইট বার্তায় জানালেন যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কানাডায় নয়, তিনি লন্ডনে আছেন। একই দিনে কিয়ার স্টারমারের লন্ডনে বিভিন্ন কার্যক্রমও দেখা গেল সেখানকার গণমাধ্যমে। অর্থাৎ প্রেস সচিব অজ্ঞতাবশত অসত্য তথ্য দিয়েছেন। এ রকম তথ্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, যিনি একজন সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তি, কিভাবে দিলেন? পরবর্তী সময়ে প্রেস সচিব অবশ্য তাঁর বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, একজন ব্রিটিশ এমপি নাকি তাঁকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেস সচিব একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক। তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন। কারো বক্তব্য শুনে সেটি সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করাটা কতটুকু যুক্তিসংগত হয়েছে সেই প্রশ্ন রয়ে যায়।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, এর ফলে ড. ইউনূসের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইমেজ হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। এই সময়েই বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে যে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ অনিশ্চিত। এর পরপরই গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যানশিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে অসম্মতি জানিয়েছেন। অর্থাৎ এই বৈঠক হচ্ছে না। এ রকম বৈঠক হওয়া না হওয়াটা বড় বিষয় নয়। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং যেভাবে এই বৈঠকের বিষয়টি তুলেছিল, আর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে যেভাবে বিষয়টিকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।

এর মধ্যে একটি বিরাট কূটনৈতিক ভুল-বোঝাবুঝির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তাহলে কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণায় কোনো রকম যোগাযোগ না করে এই বৈঠকের কথা বলেছিল? বাংলাদেশের একটি দূতাবাস যুক্তরাজ্যে রয়েছে। এটি ‘এ’ ক্যাটাগরি দূতাবাস। অত্যন্ত দক্ষ, মেধাবী অফিসারদের এই দূতাবাসে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর সেখানে নতুন রাষ্ট্রদূত দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূত হিথরো বিমানবন্দরের বোর্ডিং ব্রিজে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে রিসিভ করেছেন। কাজেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি দূতাবাসের সঙ্গে কথা না বলে এই বৈঠকের কথা ঘোষণা করে, সেটি গুরুতর অন্যায় করেছে। আবার যদি ব্রিটেনে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতি আদায় ছাড়াই কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে থাকে, তাহলে সেটিও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে এই বৈঠক হলো না কেন? একটি বিষয় তো স্পষ্ট যে এখানে কূটনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ ধরনের বৈঠকের জন্য যে ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা এবং সময়সূচি চূড়ান্তকরণ করা দরকার সেটি করা হয়নি। হয়তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ড. ইউনূসের ইমেজকে পুঁজি করে অতি আশাবাদী হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকূটনীতি শুধু ইমেজের ওপর চলে না। এখানে কতগুলো নিয়ম-কানুন এবং ‘প্রটোকল’ মানতে হয়।

প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের আগে প্রভাবশালী ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। এখানে মনে রাখতে হবে যে টিউলিপ সিদ্দিক কিয়ার স্টারমারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন রাজনৈতিক নেতা। দীর্ঘদিন পর লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় আনার পেছনে যেসব নেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক অন্যতম। ব্রিটেনে নির্বাচনে বিজয়ের দিন কিয়ার স্টারমারের পাশে যে হাতে গোনা চার-পাঁচজন নবনির্বাচিত এমপি ছিলেন তার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক একজন। নির্বাচনের পর টিউলিপ সিদ্দিককে তাঁর মন্ত্রিসভায় নেন কিয়ার স্টারমার।

৫ আগস্টের পর যখন তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন রকম সমালোচনা এবং দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়, তখন এই অভিযোগের মুখে টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেন। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তাঁকে এরই মধ্যে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন যে তিনি দুদকে তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন। তিনি পলাতক নন। তিনি যেকোনো আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন তাঁর চিঠির ব্যাপারে কূটনৈতিক পন্থা অনুসরণ করেনি। ড. ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের আগে টিউলিপ সিদ্দিক প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি দীর্ঘ চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে ভুল-বোঝাবুঝি হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি নিজেকে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে দাবি করেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে তিনি খোলামেলা আলোচনা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে সময় চান। এটি একটি ব্রিটিশ রীতি। ব্রিটেনের যেকোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি কেউ অভিযোগ উত্থাপন করে তাহলে সরাসরি সেই ব্যক্তি অভিযোগকারীর সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। দুজন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন।

আমরা এর আগে দেখেছি যে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল। বরিস জনসন নিজেই অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। দুই দফা তিনি এ ধরনের বিরোধ আলোচনার টেবিলে মীমাংসা করেছিলেন। তৃতীয় দফায় যখন করোনাকালে তাঁর বাড়িতে করোনা বিধি-নিষেধ ভঙ্গ করে পার্টি আয়োজনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়, সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। এ ছাড়া অতীতে মার্গারেট থ্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে তিনিও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেই অভিযোগ খণ্ডন এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নেন। এটি ব্রিটিশ রাজনীতির একটি চিরায়ত নীতি। আমরা সবাই জানি যে ব্রিটিশ রাজনীতি চলে ঐতিহ্য ও রীতিনীতির ওপর। কাজেই ব্রিটিশ রীতি অনুযায়ী টিউলিপ সিদ্দিক যখন এই চিঠি দিয়েছেন তখন নিশ্চয়ই তাঁর দল লেবার পার্টির সঙ্গে পরামর্শক্রমে এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই তিনি এ ধরনের চিঠি দিয়েছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক যতটুকু না শেখ রেহানার মেয়ে তার চেয়ে বেশি হলেন ব্রিটিশ এমপি এবং লেবার পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা। লেবার পার্টি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত করেছে। নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও ওই কমিশন মতামত দিয়েছে। সরকারের উচিত ছিল টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়টি একজন ব্রিটিশ এমপি হিসেবে দেখা। শেখ হাসিনার আত্মীয় বা শেখ রেহানার মেয়ে হিসেবে নয়। বেশির ভাগ কূটনৈতিক মহলের ধারণা যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠক না হওয়ার একটি বড় কারণ হলো টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার অনীহা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ঈদের পরদিন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এ ধরনের কোনো চিঠি তিনি পাননি। পরবর্তী সময়ে আবার লন্ডনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন যে তাঁরা চিঠি পেয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর এ ধরনের স্ববিরোধী অবস্থান প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ব্রিটিশ রাজনীতিতে এ রকম বিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে নির্মোহ এবং নিরপেক্ষভাবে টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে না। সরকারের আক্রোশ রয়েছে। এটি ড. ইউনূস সরকারের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন করেছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বৈঠক না হওয়ার এটি একটি কারণ বলে কেউ কেউ মনে করেন।

তবে প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের সীমাহীন কূটনৈতিক ব্যর্থতা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। ভারত থেকে প্রতিনিয়ত পুশ ইন হচ্ছে। পররাষ্ট্র দপ্তর শুধু চিঠি চালাচালির মধ্যেই তাদের অবস্থান সীমাবদ্ধ রেখেছে। ভারতের সঙ্গে অনেকগুলো টানাপড়েন নিয়েও পররাষ্ট্র দপ্তরের অবস্থান অস্পষ্ট। এমনকি মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার কেন করা হয়েছে সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র দপ্তরের কোনো ব্যাখ্যা নেই। মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, টানাপড়েন নিয়ে এক ধরনের লুকোচুরি খেলছে সেগুনবাগিচা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কে চালাচ্ছে সেটি যেন এখন এক রহস্য। পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দেখা যায় নিস্পৃহ এবং আগ্রহহীন। হঠাৎ হঠাৎ তিনি উদয় হন। অনেকের ধারণা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। বাস্তবতা যাই হোক না কেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। বিশ্বকূটনীতি কোনো একক ব্যক্তি ইমেজের ওপর চলে না। বিশ্বকূটনীতি একটি টিম ওয়ার্ক। কিন্তু বাংলাদেশে গত ১০ মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো গ্রহণযোগ্য কূটনৈতিক তৎপরতা দেখা যায়নি। বরং পুরো বিষয়টি ড. ইউনূসের ইমেজনির্ভর হয়ে পড়েছে। ড. ইউনূস গত ১০ মাসে ১১টি দেশ সফর করেছেন। এগুলো সবই তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে সফর, যেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল ভূমিকাহীন। আর এই সফরগুলোতে কী অর্জন হয়েছে তা-ও এক বড় প্রশ্ন। এ কারণেই সবাই মনে করেন যে এই ঘটনাটিকে শুধু একটি বৈঠক না হওয়ার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, বরং সার্বিকভাবে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতার দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। – সংবাদসুত্র দৈনিক কালের কন্ঠ