ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তিতে রাজি না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ স্থানীয় সময় শুক্রবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
এদিকে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলায় দেশটির নাগরিকদের জন্য তাপ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং প্রতিরক্ষার জন্য জরুরি অস্ত্র কারখানাগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। রাতে চালানো এই হামলায় ওডেসা, পোলতাভা, চেরনিহিভ, টার্নোপিলসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘বর্তমানে ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে আমি রাশিয়ার ওপর বৃহৎ পরিসরে ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছি। যুদ্ধবিরতি ও একটি চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।’ তিনি দুই দেশের উদ্দেশে বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন, দেরি হওয়ার আগেই আলোচনার টেবিলে বসুন। ধন্যবাদ!!!’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় স্থগিত রেখেছেন। যাতে কিয়েভ যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তিতে সম্মত হয়। এক সপ্তাহ আগে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বৈঠকের পর তিনি এই পদক্ষেপ নেন।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক দিন আগেই রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউস রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনা তৈরি করছে। এতে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করা এবং মস্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা যায়।
রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে রাশিয়া। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন রাশিয়ার তেল রপ্তানিতে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার আরোপসহ বেশ কয়েকটি কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এ ছাড়া রুশ জ্বালানি সংস্থাগুলোর ওপরও বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ১০ জানুয়ারি বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার তেল পরিবহনকারী জাহাজ ও জ্বালানি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ক্ষমতা ছাড়ার আগে এটি ছিল বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত।