২৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ট্রাম্পের হাতে কালশিটে, এক পা ফোলা, শিরার রোগে আক্রান্ত প্রেসিডেন্ট

পায়ে ফোলাভাব এবং ডান হাতে কালশিটে পড়ার ছবি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুস্থতা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউস গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, উভয় সমস্যাই ‘সাধারণ’, গুরুতর কিছু নয়।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের চিকিৎসকের একটি চিঠি পড়ে শোনান, যেখানে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের পায়ের ফোলা একটি ‘সাধারণ’ শিরাজনিত সমস্যা এবং হাতে কালশিটে পড়েছে ঘন ঘন হ্যান্ডশেক করার কারণে।

৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের গুরুতর অসুস্থতার গুজব ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই গুজব প্রশমিত করার চেষ্টা হিসেবেই হোয়াইট হাউস থেকে এ তথ্য জানানো হলো। লেভিটের ব্রিফিংয়ের পর হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের চিকিৎসক, ইউএস নেভি অফিসার শন বারবারবেলার একটি চিঠি প্রকাশ করে। চিঠিতে বলা হয়, ট্রাম্প এই সমস্যাগুলো নিয়ে একাধিক পরীক্ষা করিয়েছেন।

বারবারবেলা জানান, প্রেসিডেন্টের পায়ে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ‘ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সি’ ধরা পড়েছে, এটি একটি সাধারণ এবং নিরীহ অবস্থা। বিশেষ করে ৭০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, ট্রাম্পের ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ধমনি রোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হার্ট ফেইলিউর, কিডনি সমস্যা বা কোনো সিস্টেমিক অসুস্থতার লক্ষণও পাওয়া যায়নি বলে বারবারবেলা উল্লেখ করেন।

লেভিট সাংবাদিকদের জানান, এই অবস্থার কারণে ট্রাম্প কোনো অস্বস্তি বোধ করছেন না। বারবারবেলা আরও বলেন, ট্রাম্পের ডান হাতের পেছনে কালশিটে পড়েছে। ঘন ঘন হ্যান্ডশেক এবং অ্যাসপিরিন ব্যবহারের কারণে নরম টিস্যুতে সামান্য সমস্যা হয়েছে বলে জানান বারবারবেলা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাস্থ্য চমৎকার!’

কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাসকুলার সার্জারির প্রধান চিকিৎসক কুয়ামে আমানকুয়াহ জানান, ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সি সাধারণত পায়ের নিচের অংশে হয়। এই সমস্যা হলে শিরাগুলো পা থেকে হৃৎপিণ্ডে রক্ত ফেরত পাঠাতে সমস্যা করে। এর চিকিৎসায় সাধারণত কম্প্রেশন স্টকিংস এবং পা উঁচু করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথের আউটপেশেন্ট ভাসকুলার ইন্টারভেনশনসের পরিচালক টড বারল্যান্ড বলেন, ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সি মানুষের আয়ুর ওপর সামগ্রিক কোনো প্রভাব ফেলে না। এটি জীবনমানের সমস্যা, আয়ুর পরিমাণের সমস্যা নয়।

উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল ওয়াশিংটনের শহরতলিতে ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে ট্রাম্পের ব্যাপক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায় বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক, তাঁর বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা নেই। ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের এই সমস্যার নির্দিষ্ট চিকিৎসা কী হবে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়নি। – রয়টার্স