১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আর্ন্তজাতিক

বিভিন্ন দেশে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশীদের আবেদন শুধুই বাড়ছে

বিভিন্ন দেশে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশীদের আবেদন শুধুই বাড়ছে

যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) চেয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০টি দেশের নাগরিক সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভিসা বা বৈধভাবে বসবাসের পরিবর্তে যুক্তরাজ্যে পৌঁছে বাংলাদেশীদের ৮৭ শতাংশ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই দেশটিতে প্রবেশ করেছেন অবৈধ উপায়ে। ইউরোপের আরেক দেশ ইতালিতেও রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। চলতি বছরে অন্তত ১৬ হাজার বাংলাদেশীর আবেদনের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়েছে দেশটির সরকার।

কেবল ইউরোপই নয়, আমেরিকার দেশগুলোয়ও শরণার্থী হিসেবে কিংবা রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে প্রচুর বাংলাদেশী আবেদন করেছেন। ২০২৪ সালে শুধু কানাডায় আশ্রয় চেয়ে আবেদন পড়ে ১৫ হাজার ৭৩৬টি। আর যুক্তরাষ্ট্রে এ আবেদনের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি। আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নত দেশগুলোয়ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশীদের আবেদনের সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় চেয়ে গত বছর আবেদন করেছেন প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশী। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতা এ প্রবণতার পেছনে বড় কারণ বলে মনে করেন অভিবাসনসংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অভিবাসনের বৈধপথ সীমিত হওয়ায় অনেকেই শরণার্থী মর্যাদার পথ বেছে নিচ্ছেন।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে অনেক বাংলাদেশীকে ফেরতও পাঠানো হচ্ছে। বৈধ নথিপত্র ছাড়া বসবাসের অভিযোগে হাতকড়া ও শেকল পরিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৩০ জনকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ ও একজন নারী বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

রাজনৈতিক আশ্রয় কিংবা শরণার্থী হিসেবে আবেদন করার বাইরে দক্ষ পেশাজীবীদের বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে কাজের জন্য যান বলে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশীরা জানান। তাদের মতে, বিভিন্ন খাতে দক্ষ পেশাজীবীদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনেকেই সে সুযোগ নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ থেকে বিগত এক দশকে অভিনেতা-অভিনেত্রী ও শিল্পীদেরও বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। সেখানে তারা স্থায়ীভাবে বসবাসও করছেন। সম্প্রতি আরো অনেক শিল্পী দেশটিতে স্থায়ীভাবে থাকার চেষ্টায় রয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে নিউইয়র্ক, টেক্সাস, ফ্লোরিডার মতো জায়গাগুলো তারা বেছে নিচ্ছেন।

কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোল ও অভিনেত্রী নওশীন নাহরিন দম্পতি। অভিনয় জগতের মানুষদের ওই দেশটিতে বসবাসের আগ্রহের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় হিল্লোলের কাছে। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সেটেল হওয়ার জন্য মানুষ মূলত কাজের সুযোগটাই বেশি দেখে, যেটা যুক্তরাষ্ট্রে অবারিত। দক্ষতা থাকলে এখানে কাজের কোনো অভাব নেই। আমরা যারা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম শুধু তারাই নন, সব পেশার দক্ষ পেশাজীবীরা এখানে আসার সুযোগ পান। আমেরিকার মূলত নিউইয়র্ক, টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশীরা বেশি থাকতে পছন্দ করেন। তবে পছন্দের বিষয়টি নির্ভর করে মূলত কাজের ওপর। কাজের সুযোগ বেশি থাকায় মানুষ অন্য উন্নত দেশের তুলনায় এদেশকে বেশি অগ্রাধিকার দেন।’

কানাডায় অ্যাসাইলাম ও শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশীদের আবেদন নিয়ে অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন সেখানে বসবাস করা বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী। তাদের দাবি, দেশ থেকে অর্থ পাচার করে কানাডার বেগমপাড়াসহ বেশকিছু এলাকায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয় ও বিনিয়োগ করেছেন অনেকেই। যারা দেশে থাকলেও কানাডার মতো জায়গায় তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তারা দ্রুত দেশ ছেড়ে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তবে পেশাজীবী ও কর্মসংস্থানের জন্যও যে আবেদন পড়ছে না এমনটি অস্বীকার করেননি তারা।

রাজনৈতিক আশ্রয় ও শরণার্থী হিসেবে গত বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে ইতালিতে। আশ্রয় চেয়ে সারা বিশ্বে যে পরিমাণ আবেদন করা হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই পড়েছে ইউরোপের এ দেশটিতে। ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন অনুসারে, ইতালিতে আশ্রয় চেয়ে ২০২৪ সালে আবেদন করেন ৩৩ হাজার ৪১৫ বাংলাদেশী। আর এসব আবেদন যারা করেছেন তাদের বেশির ভাগই অবৈধ উপায়ে দেশটিতে প্রবেশ করে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েও আবেদন করেছেন একটি বড় সংখ্যক।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মসংস্থানের সংকট, বেকারত্ব, রাজনৈতিক মতবিরোধ ও মামলাসংক্রান্ত কারণে বিগত কয়েক বছর উন্নত দেশগুলোয় অ্যাসাইলাম ও শরণার্থীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে গত বছর সরকার পতনের পর বাংলাদেশীদের অনেকে নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছেন। তাদের বড় অংশই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা ও অবৈধ অভিবাসী।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলা ও জীবন হুমকি দেখে দেশ ছাড়েন মাগুরার জিসান আহমেদ অভি (ছদ্মনাম)। একটি রাজনৈতিক দলের উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় জীবন শঙ্কার কথা ভেবে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। প্রথমে প্রতিবেশী দেশ ভারতে, সেখান থেকে দালালের মাধ্যমে পাড়ি দেন পর্তুগাল। এরপর সেখানে এক মাস থেকে লরিতে করে ইতালিতে প্রবেশ করেন। পাঁচ মাস থাকার পর দেশটির শরণার্থী হিসেবে আবেদন করেন অভি। বর্তমানে তার আবেদন ইতালি সরকারের বিবেচনার তালিকায় রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জিসান আহমেদ অভির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বণিক বার্তাকে জানান, ইতালিতে অবৈধভাবে বহু মানুষ গত এক বছরে প্রবেশ করেছে। তবে তাদের বড় অংশ দেশটিতে উন্নত জীবন ও কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়ার অপেক্ষায়। এছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার জন্যও অনেকে এসেছেন। তবে ইতালি সরকার বর্তমানে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে কঠোর অবস্থানে থাকায় অনেকে আবার ইউরোপের অন্য কোনো দেশে পাড়ি দেয়ারও চিন্তা করছেন।

রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া ও সাময়িকভাবে প্রবেশের সুযোগ বিবেচনায় বাংলাদেশীদের অন্যতম গন্তব্য দেশ যুক্তরাজ্য। ২০২৪ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী যুক্তরাজ্যে আবেদন করেছেন। বিশেষ করে পতনের পর আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বড় অংশ দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। যাদের অনেকেই আবেদন করেছেন অ্যাসাইলাম হিসেবে।

যুক্তরাজ্য সরকারের হোম অফিসের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশী ৭ হাজার ২২৫টি অ্যাসাইলাম আবেদন জমা পড়ে। ইউকে হোম অফিসের চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে অ্যাসাইলাম আবেদনে শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এ তালিকায় সবার ওপরে পাকিস্তান।

বাংলাদেশী অভিবাসী ও গণমাধ্যমকর্মী জমির হোসেন থাকেন ইতালিতে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে তিনি বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, বেশকিছু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন; যারা গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন দেশ হয়ে সেখানে গেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জমির হোসেন বণিক বার্তাকে জানান, বেশ কয়েক বছর যুক্তরাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ অ্যাসাইলাম আবেদন পড়েছে বাংলাদেশীদের। চলতি বছরের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে না পারলেও তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে গত এক বছরে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী প্রবেশ করেছেন। তাদের বেশির ভাগই চেয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিগত বছরে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশীর রাজনৈতিক ও শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চাওয়ার বড় কারণ হিসেবে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদেশে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় বৃদ্ধির পেছনে কারণ মূলত জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। যেমনটি শ্রীলংকার ক্ষেত্রেও ঘটেছে। শ্রীলংকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সময় দেশটির অনেক মানুষ বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। সংখ্যাটা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। আমি মনে করি ঠিক একই কারণে বহুসংখ্যক বাংলাদেশী দেশ ছেড়েছেন। এখনো অনেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ কিংবা দক্ষিণ এশিয়া থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য-কানাডা অনেক কঠোর। যে কারণে অনেকে সহজ পথ খুঁজতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের চেষ্টা করেন।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় ও শরণার্থী হিসেবে আবেদনের সংখ্যাটা বেড়েছে মূলত ২০১২ সাল থেকে। ২০২০ সাল পর্যন্ত একটা ধারাবাহিকতা থাকলেও ২০২১ সাল থেকে তা উদ্বেগজনক হারে বাড়ে। রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের মোট ৩৯টি দেশে আবেদন করেন অন্তত ৬৯ হাজার ৩৫৫ বাংলাদেশী। যদিও ৯৩ শতাংশই বাতিল হয়েছে। রাজনৈতিক আশ্রয় ও শরণার্থী হিসেবে কানাডায় গত বছর আবেদন জমা পড়ে ১৩ হাজার ৭৩৬টি, ফ্রান্সে ৬ হাজার ৩১, আয়ারল্যান্ডে ১ হাজার ৭, গ্রিসে ৭৭০, জাপানে ৫৬৮, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪১৯, স্পেনে ৪১৯ ও ব্রাজিলে ৪১৫টি।

অবৈধ অভিবাসন কিংবা রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বিশ্বে। বিশেষ করে পাসপোর্টের ওপর বড় নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। অ্যাসাইলাম ও অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে হলে আইনগত কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা যেতে পারে। শাস্তির ব্যবস্থাও রাখা যেতে পারে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আল আমিন রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয় বাড়ার বেশকিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, গত বছরের সরকার পতনের পর উন্নত দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া বাংলাদেশীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এগুলোর কারণে বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মানও কমে যাচ্ছে। এটা কমিয়ে আনতে হলে সরকারের বিদ্যমান আইনে সুযোগ অনেক কম। তবে আইন সংশোধন করে এখানে শাস্তির বিধান কিংবা যারা অবৈধ পথে বিদেশ যাচ্ছে, তাদের দেশে থাকা সম্পত্তির অংশীদারত্বে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা যেতে পারে। এটা করা গেলে অবৈধ অভিবাসন অনেকটা কমিয়ে আনা যাবে।’

বিদেশে অবৈধ অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের বড় কারণ দেশে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক মতবিরোধে হামলা-মামলা। যে কারণে অনেকেই বিদেশে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয় ও শরণার্থী আবেদন করছেন। তবে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে আবার তা কমে যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অনেকেই বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। যখন ক্ষমতার পালাবদল হয়, তখন তারা সেভাবে বিদেশ যাওয়ার কাগজপত্র তৈরি করে। কারো কারো ক্ষেত্রে হয়তো সত্যিই ঝুঁকি আছে। যে কারণে রাজনৈতিক আশ্রয়ের দরকার হতে পারে, যেটি বিভিন্ন দেশে করা আবেদনে দেখাও যাচ্ছে। এটি যাচাই-বাছাইও হয়। ইতালিতে যারা রাজনৈতিক আশ্রয় চাচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই বাতিল হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অভিবাসীদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

তিনি মনে করেন, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনে এখন একটা ট্রেন্ড রয়েছে, আবার নির্বাচনের পরও এটি দেখা যাবে। তারপর একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন হলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের তালিকা খুব বেশি বড় হবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সব বিষয়েই একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে। যে কারণে মানুষ হয়তো ভাবছে দেশের বাইরে যাওয়া ভালো। সংবাদসুত্র দৈনিক বণিকবার্তা