আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুশি করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে বাংলাদেশ। অন্তত দু’টি পণ্য বেশি দামে আমেরিকা থেকে কেনার পরিকল্পনা করেছে তারা। এ নিয়ে আলোচনা এবং দর কষাকষি চলছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঢাকার সচিবালয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্যসচিব মাসুদুল হাসানের নেতৃত্বে আয়োজিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুল্ক কমানোর আশায় গম এবং বিমান বেশি দামে আমেরিকা থেকে কিনতে পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশি পণ্য এমনিতে আমেরিকায় রফতানি করা হয় ১৫ শতাংশ শুল্কে। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন দেশের উপরে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করেন। বাংলাদেশের পণ্যে চাপানো হয় বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক।
এর ফলে বাংলাদেশের পণ্যের জন্য আমেরিকার মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫২ শতাংশ। যদিও তিন মাসের জন্য এই শুল্ক স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। এই তিন মাসে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার দর কষাকষি চলছে। বাংলাদেশও শুল্ক হ্রাসের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২৬ জুনবৃহস্পতিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট বা জিটুজি) তিন লক্ষ টন গম আমদানি করা হবে। সাধারণত যে দামে অন্য জায়গা থেকে গম কেনা হয়, তার চেয়ে বেশি দাম দেওয়া হবে আমেরিকাকে। একই সঙ্গে মার্কিন বোয়িং সংস্থার কাছ থেকে বিমান কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আমেরিকা থেকে তুলো আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে পারে ঢাকা। যদিও এই সমস্ত কোনও বিষয়েই এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২৯ জুন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার পর শুল্কের নতুন হার নির্ধারিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সাধারণত গম আমদানি করে থাকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। এই দুই দেশের গমের দাম তুলনামূলক কম। সূত্রের খবর, আমেরিকা থেকে যদি গম কেনা হয়, তবে বাংলাদেশকে প্রতি টনে ২০ থেকে ২৫ ডলার বেশি খরচ করতে হবে। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১৭০০ থেকে ২১০০ টাকার সমান। তবে রাশিয়া বা ইউক্রেনের গমের চেয়ে আমেরিকার গমের খাদ্যমান উন্নত। বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের মতে, শুল্ক এবং বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে তাঁদের আলোচনা ইতিবাচক পর্যায়ে রয়েছে। শীঘ্রই তার সুফল পাওয়া যেতে পারে।