১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র

রুপার্ট মারডক, ব্রিটেনে ট্রাম্পের জন্য আয়োজিত রাজকীয় ভোজে যাঁর উপস্থিতি সবাইকে অবাক করেছে

রুপার্ট মারডক, ব্রিটেনে ট্রাম্পের জন্য আয়োজিত রাজকীয় ভোজে যাঁর উপস্থিতি সবাইকে অবাক করেছে

যুক্তরাজ্যে গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)জমকালো এক রাজকীয় ভোজে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘মিডিয়া মোগল’ রুপার্ট মারডকও। তাঁর উপস্থিতি ছিল অপ্রত্যাশিত।

যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হলে রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলার আয়োজিত ওই ভোজে ছিল লোভনীয় সব খাবার। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে হেলিকপ্টারে চড়ে এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন, সেটির চেয়ে ২ দশমিক ৭ গুণ বড় ছিল ভোজের টেবিল। ১৩৯টি মোমবাতি দিয়ে এটি সাজানো হয়েছিল। ছিল ১ হাজার ৪৫২টি ছুরি-চামচ-তৈজসপত্র। খাবার পরিবেশন করার জন্য নিয়োজিত ছিলেন প্রায় ১০০ কর্মী।

নৈশভোজে ট্রাম্প যখন সুস্বাদু সব খাবার চেখে দেখছিলেন, তখন ওই কক্ষে রুপার্ট মারডকও উপস্থিত ছিলেন। গত জুনে এ মিডিয়া মোগল ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি ডলারের একটি মানহানি মামলা করেছেন ট্রাম্প। তিনি (ট্রাম্প) কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনকে জন্মদিনের বার্তা পাঠিয়েছেন, এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ট্রাম্প এ মামলা করেন। ট্রাম্পের জন্য আয়োজিত নৈশভোজে মারডকের উপস্থিতি সবাইকে অবাক করেছে। তবে এতে ট্রাম্পের উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়েনি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে বিশেষ শব্দটি ব্যবহার করলেও কম হয়ে যাবে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত যে প্রতিবেদনের কারণে ট্রাম্প মামলা করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে তৎকালীন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প যৌন নিপীড়ক এপস্টেইনকে জন্মদিন উপলক্ষে চিঠি লিখেছিলেন। ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি সে চিঠি লেখেননি কিংবা তাতে স্বাক্ষরও করেননি। চিঠিতে নারী দেহের একটি অবয়ব আঁকা ছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরকে কেন্দ্র করে এ কেলেঙ্কারি নতুন করে আবারও আলোচনায় আসে। কারণ, এপস্টেইনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের অভিযোগে কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনকে বরখাস্ত করেছে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সরকার। তবে এ ঘটনার পরও নৈশভোজের অতিথিদের তালিকায় ছিলেন মারডক। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার ও হোয়াইট হাউস তালিকাটি যৌথভাবে প্রস্তুত করেছিল। আর আসনের বিন্যাস সাজিয়েছিল রাজপরিবার।

মিডিয়া ব্যবসার কারণে ৯৪ বছর বয়সী রুপার্ট মারডক দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটিশ রাজনীতিতে ‘কিংমেকার’ হিসেবে পরিচিত। অনুষ্ঠানে অন্য অতিথিদের সঙ্গে আলাপ করলেও ট্রাম্প থেকে অনেকটা দূরেই বসেছিলেন মারডক। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিন, ট্রাম্পের কন্যা টিফানি ও তাঁর স্বামী।

আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার জেনসেন হুয়াং, ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যানসহ মার্কিন প্রযুক্তি খাতের সিইওরা। তাঁদের উপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ট্রাম্পের এ সফরে প্রযুক্তি খাতে বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।