নিউইয়র্ক     শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে পালানোর সময় একাত্তর টিভি-র মোজাম্মেল বাবু, ভোরের কাগজ এর শ্যামল দত্তসহ আটক ৪

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ভারতে পালানোর সময় একাত্তর টিভি-র মোজাম্মেল বাবু, ভোরের কাগজ এর শ্যামল দত্তসহ আটক ৪

বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা হয়ে অবৈধভাবে ভারত যাওয়ার পথে একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক জেনারেল সেক্রটারী ও দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান ও ড্রাইভার সেলিমসহ একটি প্রাইভেটকার আটক করেছে স্থানীয় জনতা।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে ময়মনসিংহ ধোবাউড়া সড়কের গোয়াতলা বাজার হয়ে একটি প্রাইভেটকার উপজেলা হাসপাতালের সামনে গিয়ে থামে। সেখান থেকে মোজাম্মেল হক বাবু, শ্যামল দত্ত, মাহবুবুর রহমান ও প্রাইভেটকার চালক সেলিমকে মোটরসাইকেলে করে সীমান্তে নিয়ে যায় দুই ব্যক্তি। মোটরসাইকেলে করে তারা ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের দর্শা শেক বাজার এলাকায় পৌঁছায়। সেখান থেকে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন তারা।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টার দিকে দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মাঝামাঝি এলাকায় তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমার বাড়ি ময়মনসিংহ সদরে। আমার স্যার মোজাম্মেল হোসেন বাবুকে আমি নিয়ে আসার পথে ১০টি মোটরসাইকেল পথ রুদ্ধ করে। পরে আটকে মারধর করে আমাদের কাছে টাকা চায়। আমার মানিব্যাগ চেক করে তিন শ’ টাকা পায়। টাকা নিয়ে ‘ফকিন্নি’ বলে মানিব্যাগটি আমার মুখের ওপর ফেলে দেয়। পরে সবার কাছে চেক করে সবকিছু নিয়ে যায়। কী কী নিয়েছে বলতে পারব না।

এ ব্যাপারে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চান মিয়া বলেন, সাধারণ জনগণ তাদের সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করে সকাল ৬টার দিকে ধোবাউড়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। আটককৃত চারজন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এর আগে, ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরদিন ৬ আগষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। শ্যামল দত্ত তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে যখন ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করলে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে দেশ ত্যাগে তার নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি জানানো হয়। তবে এর পর থেকে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, মোজাম্মেল বাবু সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ‘সাংবাদিকতার আড়ালে জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার’ অভিযোগে যে ৫১ জন সাংবাদিককে কর্মস্থল থেকে বহিষ্কার এবং সাংবাদিক অঙ্গনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনকারীরা, সেখানে শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবুর নামও ছিল।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মোজাম্মেল বাবু, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, ফরিদা ইয়াসমিন, মুন্নী সাহা, সোমা ইসলামসহ মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন সাংবাদিক। ২৯ আগস্ট আন্দোলনে নিহত রিয়ানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দাখিল করেন।

শেয়ার করুন