মানুষের চেয়ে চার গুণ বেশি দক্ষ—এমন দাবি নিয়ে চিকিৎসাক্ষেত্রে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক রোগ শনাক্তকরণ টুল উন্মোচন করেছে মাইক্রোসফট। ‘এআই ডায়াগনস্টিক অর্কেস্ট্রেটর’ নামের এই অত্যাধুনিক টুলটি রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকদের পারদর্শিতাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই টুল মাইক্রোসফটের নতুন স্বাস্থ্যবিষয়ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইউনিটের প্রথম প্রকল্প। ইউনিটটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুস্তাফা সুলেইমান, যিনি গুগলের মালিকানাধীন ডিপমাইন্ড-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ডিপমাইন্ডের একদল অভিজ্ঞ গবেষককে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই এআই টুল তৈরি করেছেন। ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এই টুল মাইক্রোসফটের নতুন স্বাস্থ্যবিষয়ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইউনিটের প্রথম প্রকল্প। ইউনিটটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুস্তাফা সুলেইমান, যিনি গুগলের মালিকানাধীন ডিপমাইন্ড-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ডিপমাইন্ডের একদল অভিজ্ঞ গবেষককে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই এআই টুল তৈরি করেছেন। ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
সিস্টেমটির কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন থেকে নেওয়া ৩০৪টি জটিল রোগের চিকিৎসা–সম্পর্কিত গবেষণা বিশ্লেষণ করানো হয়। এ গবেষণাগুলোতে চিকিৎসকেরা কীভাবে রোগ নির্ণয় করেছেন এবং কী পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন, তা বিশ্লেষণ করে টুলটির সঠিকতা ও যুক্তিবিজ্ঞান যাচাই করা হয়। গবেষকরা ‘চেইন অব ডিবেট’ নামের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, যার মাধ্যমে এআইকে রোগ নির্ণয়ের প্রতিটি ধাপ ব্যাখ্যা করতে বাধ্য করা হয়। এতে করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনের যুক্তিগুলোও স্পষ্ট হয়।
এতে ব্যবহৃত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (LLM) এসেছে ওপেনএআই, মেটা, গুগল, অ্যানথ্রপিক, এক্সএআই এবং ডিপসিক-এর কাছ থেকে। সবচেয়ে ভালো ফল দিয়েছে ওপেনএআইয়ের ‘ওথ্রি’ রিজনিং মডেল, যা ৮৫.৫ শতাংশ কেসে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুলনামূলকভাবে, একই কেসে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সঠিকতা মাত্র ২০ শতাংশ। যদিও চিকিৎসকদের সেই পরীক্ষায় সহায়ক উপকরণ বা সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ ছিল না, যা থাকলে ফল ভিন্ন হতে পারত বলে উল্লেখ করেছে এফটি।
এআই সল্যুশনটির একটি সংস্করণ মাইক্রোসফট তার কোপাইলট চ্যাটবট ও বিং সার্চ ইঞ্জিনেও চালু করতে পারে, যেগুলো প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কোটির মতো স্বাস্থ্য–সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। মাইক্রোসফট ইতোমধ্যে ওপেনএআইতে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং তাদের প্রযুক্তি ব্যবহারে একচেটিয়া অধিকারও অর্জন করেছে। তবে ওপেনএআইয়ের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও ভবিষ্যৎ চুক্তি নিয়ে টানাপোড়েন চলছে বলে জানিয়েছে এফটি।
তবে এসব দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও, মাইক্রোসফট নিরপেক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুলেইমান। তার মতে, কোন এআই মডেল ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি মুখ্য বিষয় নয়; বরং অর্কেস্ট্রেটরের সমন্বিত বিশ্লেষণই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
ডিপমাইন্ডের স্বাস্থ্য ইউনিটের সাবেক প্রধান ডমিনিক কিং বলেন, ‘এমএআই-ডিএক্সও প্রোগ্রামটি এখন পর্যন্ত আমাদের দেখা সবচেয়ে নির্ভুল ফলাফল দিয়েছে। এটি স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিতে পারে।’
স্ক্রিপস রিসার্চ ট্রান্সলেশনাল ইনস্টিটিউট-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং হার্ট বিশেষজ্ঞ এরিক টোপল বলেন, ‘এই গবেষণা জেনারেটিভ এআই যে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে, সেটির প্রথম বাস্তব প্রমাণ। এতে খরচ কমবে, বাড়বে নির্ভুলতা—এমন সম্ভাবনার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রযুক্তিটি।’