প্রতিষ্ঠালাভের প্রায় ১৭ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতির সাথে দক্ষণ এশীয় শ্রমিক ও নাগরিকদের সম্পৃক্ত করার প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন সংগঠন অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল’র এর সভাপতি পদে পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শেরাটন আটলান্টিক সিটি হোটেলের বিশাল হল রুমে অনুষ্ঠিত ১৮তম কনভেনশন এর ২য় দিনে অ্যাসাল’র নতুন ন্যাশনাল কমিটির নাম ঘোষণা করেন বিদায়ী প্রতিষ্ঠাতা ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন।

নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিদায়ী ন্যাশনাল সেক্রেটারী জেনারেল এম করিম চৌধুরী এবং প্রথমবারের মত সংগঠনের ‘প্রেসিডেন্ট ইমিরাটস’ নির্বাচিত হয়েছেন বিদায়ী ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন।

অ্যাসাল নতুন ন্যাশনাল কমিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জামিলা এ উদ্দিন এবং সেক্রেটারী জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন হারজিৎ মিনহাস।

আওয়ার ওয়ার্ক, আওয়ার প্রাইড অ্যান্ড আওয়ার প্রগ্রেস’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে নিউজার্সির আটলান্টিক সিটির শেরাটন হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল’র ১৮ তম বার্ষিক কনভেনশন।

উৎসবমুখর পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রে মূলধারায় দক্ষিণ এশিয়ার ৮ দেশীয় ইমিগ্র্যান্টদের সংযুক্তিরর শীর্ষ স্থানীয় সংগঠন অ্যাসালের কনভেনশন যা প্রকৃত অর্থে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী দক্ষিণ এশীয়দের মিলনমেলায় পিরণত হয়। রেকর্ড সংখ্যক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সহ দক্ষিণ এশিয় ইমিগ্র্যান্টদের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত সমাবেশে শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অ্যাসালের ১৮ তম বার্ষিক কনভেনশন কমিটির চেয়ার অধ্যাপক ড. গোলাম এম মাতবর, এমএসএস, এমএসডব্লিউ, পিএইচডি।

দু’দিনব্যাপি এ কনভেনশনে কি নোট স্পিকারের বক্তব্য রাখেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত এম ওসমান সিদ্দিক।

অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন, ন্যাশনাল সেক্রেটারী জেনারেল এম করিম চৌধুরী ও নিউজার্সি চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মো. ফারুক হোসেনের পরিচালনায় কনভেনশনের শুরুতে শপথ বাক্য পাঠ করান সারাহ ওসাকিয়া ও মিনহ মাহজাবীন।

কি নোট স্পিকারের বক্তব্যে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত এম ওসমান সিদ্দিক অ্যাসালের ভবিষ্যত নিয় ৫ দফঅ কর্মষুচির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জনের জোরদার প্রয়াস ও যতো দ্রুত সম্ভব সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধিকরণ। তিনি আরো বলেন বিগত দিনেনের কর্মকান্ড মুল্যায়ণ করে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে বিশেষ করে মূলধারার র রাজনীতিতে অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল আরো গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখার অবস্থায় পৌঁছে যাবে, নি:সন্দেহে।

অনুষ্ঠানে মূলধারার নির্বাচিত কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল এর প্রধান উপদেষ্ঠা কম্প্যুটার বিজ্ঞানী ড. আিজজ আহমেদ, অ্যাসাল নতুন ন্যাশনাল কমিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জামিলা এ উদ্দিন প্রমুখ । কনভেনশনে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পেরে বাণি পাঠান সিনেটর চাক শুমার, নিউইয়র্কের গভর্ণর ক্যাথি হোকুল সহ মূলধারার আরো কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধি।

কনভেনশনে অতিথিরা ছাড়াও অ্যাসাল’র বিভিন্ন চ্যাপ্টারের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। তারা তাদের নিজ নিজ সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা মাফ মিসবাহ উদ্দিন অ্যাসাল’র লক্ষ্য ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, এবারের থিম ‘আওয়ার ওয়ার্ক, আওয়ার প্রাইড অ্যান্ড আওয়ার প্রগ্রেস’। মূলধারার রাজনীতিতে দক্ষিণ এশীয়দের অবস্থান আরো সুসংহত করতে অ্যাসাল’র দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়রা যাতে নিজ নিজ অধিকার ও মর্যাদা সুসংহত রাখতে পারেন সে লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ‘অ্যাসাল’।

তিনি বআরো লেন, অ্যাসাল ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশীসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরছে। ইমিগ্র্যান্টদের নানা ইস্যুগুলো জনপ্রতিনিধিদের ইস্যুতে পরিণত করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে অ্যাসাল। আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি কিন্তু তা সমাধান করতে পারছি না তা নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমাধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বর্তমানে অ্যাসাল’র ২২ চ্যাপ্টারের নানা কর্মকান্ডের স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই আজকের এ অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে অ্যাসাল। এধারা অব্যাহত রেখে আমাদের আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। মাফ মিসবাহ উদ্দিন অ্যাসালের আমন্ত্রণে কনভেনশনে যোগদানের জন্য সকলের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, অ্যাসাল ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশীসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরছে। ইমিগ্র্যান্টদের নানা ইস্যুগুলো জনপ্রতিনিধিদের ইস্যুতে পরিণত করে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে অ্যাসাল। আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি কিন্তু তা সমাধান করতে পারছি না তা নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমাধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি অ্যাসাল’র ২২ চ্যাপ্টারের নানা কর্মকান্ডের স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই আজকের এ অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে অ্যাসাল। এধারা অব্যাহত রেখে আমাদের আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। মাফ মিসবাহ উদ্দিন অ্যাসালের আমন্ত্রণে কনভেনশনে যোগদানের জন্য সকলের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

কনভেনশন কমিটির চেয়ার অধ্যাপক ড. গোলাম এম মাতবর সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কনভেনশন কমিটির চেয়ার হিসেবে ১৮তম বার্ষিক কনভেনশনের উদ্বোধন করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। অ্যাসাল নেতাদের, বিশেষ করে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কিংবদন্তি লেবার ইউনিয়ন লিডার মাফ মিসবাহ উদ্দিনকে অভিনন্দন জানাই। অ্যাসাল আমেরিকা জুড়ে কমিউনিটির জন্য যা করছে তা অতুলনীয়। এ আন্দোলন জোরদারে সবার সাহায্য করা উচিত।

সেক্রেটারী এম করিম চৌধুরী কনভেনশনে বিগত বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে অ্যাসালের ন্যাশনাল কমিটিসহ বিভিন্ন চ্যাপ্টারের কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় তিনি বিভিন্ন চ্যাপ্টারের কার্যক্রম তুলে ধরেন।

করিম চৌধুরী তার বক্তব্যে আরো বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মাফ মিসবাহ উদ্দিনের একটি দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং তিনি আমাদের কমিউনিটি এবং মূলধারার রাজনীতির মধ্যে সেতু হিসেবে অ্যাসালকে তৈরি করেন। তিনি যা কল্পনা করেছিলেন আজ আমেরিকা জুড়ে তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যদি আরও কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি তাহলে এমন একটি আমেরিকা তৈরি করতে পারব যেখানে প্রতিটি দক্ষিণ এশিয়ান তাদের আমেরিকান স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবেন।”

কনভেনশনে অ্যাসাল’র পক্ষ থেকে বেশ কিছু অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। ১৮ তম বার্ষিক কনভেনশন উপলক্ষে অ্যাসাল তথ্য সমৃদ্ধ একটি বিশেষ স্মরণিকাও প্রকাশ করে।

বর্ণাঢ্য এ কনভেনশনে মূলধারার রাজনীতিক, স্টেট ও সিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত প্রতিনিধি, কর্মকর্তা, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কমিউনিটি লিডার, সাংবাদিক, অ্যাসাল সদস্য সহ বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী-আমেরিকানসহ দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান অংশগ্রহণ করেন। ২০২৬ সালে অ্যাসাল এর পরবর্তী কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে নিউ ইয়র্কে । সকল ছবি পরিচয় এর নিজস্ব।