প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে প্রায় দেড় মিলিয়ন (১,৪৪৫৫৪৯) চুড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশ প্রাপ্ত অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র বহিস্কারের অভিযানে নেমেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অধীনস্থ ইমিগ্রেশ্যান এন্ড কাষ্টমস এনফোর্সমেন্ট ও ইউএসসিআইএস। যেসব দেশের নাগরিকরা ইতোমধ্যে চুড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশ পেয় গেছেন এবং যাদের সন্ধানে ইমিগ্রেশ্যান এন্ড কাষ্টমস এনফোর্সমেন্ট মাঠে নেমেছে তাদের মধ্যে রয়েছে হন্ডুরাস (২৬১,৬৫১), গুয়েতেমালা (২৫৩,৪১৩), এল সালভাদর (২০৩,৮২২), চীন (৩৭,৯০৮), ভারত (১৭৯৪০), পাকিস্তান (৭০০৭), বাংলাদেশ (৪৮৩৭), কাতার (১০) ও উত্তর করারিয়া (৩ জন) তবে চুড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশ প্রাপ্তরা প্রাথমিক টার্গেট হলেও অভিযান চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রে যেকান ধরনের ইমিগ্রেশ্যান আইন ভঙ্গকারীরা ইমিগ্রেশ্যান এন্ড কাষ্টমস এনফোর্সমেন্ট এর ্এজেন্টদের আওয়তায় চলে আসলে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে গত কয়েক দিনের অভিযানে হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রোববারেই (২৬ জানুয়ারি) অন্তত ৯৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ বিভাগের (আইসিই) নেতৃত্বে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় অভিযান বলে জানিয়েছে আইসিই। এর আগে শনিবার ২৮৬, শুক্রবার ৫৯৩ ও বৃহস্পতিবার ৫৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬ জানুয়ারী রোববার এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হোমান বলেন, গ্রেফতার ও বিতাড়নের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে।
শিকাগো, নিউজার্সির নিউয়ার্ক ও মায়ামিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে পরিচালিত অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা অংশ নেয়। এই অভিযান আরও কয়েক দিন চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আইসিই লিখেছে, রোববার দেশজুড়ে ৯৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে শিকাগোয় এই ‘বাড়তি অভিযান’ ছাড়াও আটলান্টা, পুয়ের্তো রিকো, কলোরাডো, লস অ্যাঞ্জেলেস, অস্টিন ও টেক্সাস শহরে অভিবাসনসংক্রান্ত কর্মকর্তাদের তৎপরতা রয়েছে।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপকহারে বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় এসে অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে তিনি ২১টি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। শিকাগোতে পরিচালিত অভিযানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ট্রাম্পের সীমান্ত বিষয়ক উপদেষ্টা টম হোমান। তবে, তার এই কঠোর পদক্ষেপ ডেমোক্র্যাট নেতাদের অসন্তুষ্ট করেছে।
শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন আইসিইয়ের অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন, শিকাগো পুলিশ এতে অংশ নেয়নি। তিনি বাসিন্দাদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
মায়ামিতে ২৬ জানুয়ারী রবিবার একাধিক অভিযান পরিচালিত হয় বলে শহরের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন জানায়। এতে আইসিই-এর স্থানীয় কার্যালয় বিভিন্ন অভিযোগে অভিবাসীদের আটক করে। এক ব্যক্তি সিবিএস নিউজকে জানান, ‘আইসিই আমার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। তারা যা করছে তা লজ্জাজনক। তার স্ত্রী নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন বলে তিনি দাবি করেছেন।
নিউ জার্সীর নিউয়ার্ক শহরের মেয়র রাস বারাকা বলেছেন, একটি স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আইসিই-এর অভিযানে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই অভিবাসী এবং এক সাবেক সেনাকে আটক করা হয়েছে। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের এমনভাবে আতঙ্কিত হতে দেওয়া হবে না।
অভিবাসন অধিকারকর্মীরা সতর্ক করেছেন, এই অভিযানের সময় বৈধ নাগরিকসহ অন্যরাও ভুলবশত আটক হতে পারেন। আইসিই প্রধান টম হোমান এ বিষয়ে বলেন, অভিযানে ধরা পড়া অপরাধী অভিবাসীদের পাশাপাশি অনথিভুক্ত অভিবাসীরাও বহিষ্কৃত হবেন।